পণ্যের চড়া দামেও ভোলায় জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। বিভিন্ন মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলোতে বাড়ছে ভিড়। মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। ক্রেতাদের এমন ভিড়ে খুশি ব্যবসায়ীরা। তবে অতিরিক্ত দামে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা।
গভীর রাত পর্যন্ত সরগরম ভোলার বিভিন্ন মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলো। এর মধ্যে সদর রোড, কে জাহান মার্কেট, চক বাজার ও জিয়া সুপার মার্কেটে ভিড় সবচেয়ে বেশি। ঈদের মার্কেটগুলোতে দখল করে আছে দেশি-বিদেশি বাহারি রংয়ের পোশাক। সাদ আর সাধ্যের মধ্যে কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা। তবে অতিরিক্ত দামে ক্ষুব্ধ তারা। যদিও ভোক্তা স্বার্থ রক্ষায় নিয়মিত অভিযান চলছে। এছাড়া ঈদের বাজার নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে জেলা প্রশাসনও।
বিজ্ঞাপন
পোশাক কেনা শেষে সবাই ছুটে যাচ্ছেন জুতা ও কসমেটিকসের দোকানে। ঈদকে সামনে রেখে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে পুলিশ।
বুধবার (১২ এপ্রিল) ভোলার মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলোতে ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
ঈদ বাজারে নারী ক্রেতারা সবচেয়ে বেশি কিনছেন নায়রা, গারারা, সারারা, সুষমিতা, কাতান ওড়না, ভিক্টোরিয়া, লেহেঙ্গা ও পার্টি গাউন নামে বিভিন্ন থ্রি-পিচ। তবে চাহিদা কম নয় শাড়িরও। গাদোয়াল, মাদুরাই, কাঞ্জিভরম, সাউথ ইন্ডিয়ান, সফট কাতান, বারিশ, বেনারসি, ঢাকাই জামদানি, ভারতীয় জামদানি, রাজশাহী সিল্ক ও টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়িও বিক্রি হচ্ছে বেশ।
শহরের চন্দ্রবিন্দু ফ্যাশনে কেনাকাটা করতে আসা কলেজ শিক্ষক মো. আকতার হোসেন বলেন, শহরের বেশ কয়েকটি মার্কেটে ঘুরেছেন তিনি। পণ্যের দাম বেশি হওয়ায় কয়েকটি মার্কেটে পোশাক দেখে চন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছেন। চন্দ্রবিন্দু ফ্যাশনে এসেও চড়া দামে তার পোশাক কিনতে হয়েছে। তার দাবি, পোশাকের কোয়ালিটির সঙ্গে দামের অনেক পার্থক্য রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আরিফুর রহমান মুরাদ নামে আরেক ক্রেতা জানান, তার পরিবারের সব নারী সদস্যের জন্যই তিনি থ্রি–পিচ কিনেছেন। নানা নকশার থ্রি–পিচ পাওয়া যাচ্ছে। তবে এবারের ঈদবাজারে আগের বছরের তুলনায় দাম বেশি।
পোশাক কেনাকাটা শেষে সবাই ছুটছেন জুতা ও কসমেটিকসের দোকানে। শহরের লেদার ক্লাবে জুতা কিনতে আসা অনিক সরকার বলেন, ঈদের জন্য নতুন শার্ট ও প্যান্ট কিনেছেন তিনি। নতুন জুতা কিনতে লেদার ক্লাবে এসেছেন। তবে জুতার দামও চড়া।
কে জাহান মার্কেটে মিম কসমেটিকস হাউজে আসা ইশরাত জাহান উর্মি জানান, তার কেনাকাটা শেষ। শুধুমাত্র গলার নেকলেস, চুড়ি ও নুপুর কিনতে কসমেটিকস দোকানে এসেছেন। সবকিছুর দাম চড়া হলেও ঈদ উদযাপন করতে সবকিছুই কিনতে হয়েছে।
পরিমল বস্ত্রালয়ের মালিক বাবলু সাহা বলেন, পোশাক তৈরির সব উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় তারাও বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে এবার ঈদের বেচাকেনা ভালো। বিশেষ করে থ্রি-পিচের বেচাকেনা বেশি হচ্ছে। বর্তমানে ২ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে থ্রি–পিচ বেশি চলছে। আর ৩ হাজার ৫০০ থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে ভালো শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে।
শহরের জিয়া সুপার মার্কেটে অবস্থিত সাজ ফ্যাশনসের পরিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, ঈদ উপলক্ষে আধুনিক ও বাহারি নকশার পোশাক এনেছেন। যা সহনীয় দামে বিক্রি করছেন। তবে নারী ক্রেতাদের থ্রি–পিচের প্রতি আগ্রহ বেশি।
বিক্রেতারা বলেছেন, প্রতিবছরের মতো পুরুষ ক্রেতারা কিনছেন জিনসের প্যান্ট, শার্ট, টি-শার্ট ও পায়জামা-পাঞ্জাবি। এবার সুতি কাপড়ের পাঞ্জাবির চাহিদা বেশি।
এদিকে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান, ক্রেতারা যাতে খুশিমনে ঈদের কেনাকাটা করতে পারেন সেজন্য সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাদা পোশাকের একটি টিম শহরের মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলোতে নজরদারি রাখছে।
প্রতিনিধি/এইউ