সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ব্রিজ নাকি মরণ ফাঁদ!

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৫২ পিএম

শেয়ার করুন:

ব্রিজ নাকি মরণ ফাঁদ!

বরগুনার বেতাগী উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের গড়িয়াবুনিয়া বাজার ও গড়িয়াবুনিয়া ফুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে ব্রিজ ভেঙে গেছে বহুদিন। এতে মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা নতুন করে নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন। তবে কাজের কাজ হচ্ছে না কিছুই।

জানা যায়, দুই বছরের বেশি সময় ধরে ভেঙে আছে এই সড়কের ব্রিজের মাঝের একাংশ। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ভাঙা জায়গায় মেরামত বা নতুন ব্রিজ নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা হাট-বাজারের পথচারী ও স্কুল কলেজ গামী শিক্ষার্থীসহ কয়েক গ্রামের হাজার হাজার মানুষের। বিকল্প সড়ক না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই ব্রিজ ব্যবহার করতে হচ্ছে তাদের।


বিজ্ঞাপন


এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের গড়িয়াবুনিয়া বাজার ও গড়িয়াবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের ব্রিজটি প্রায় দুই বছর আগে পাটাতনের মাঝখান ভেঙে যায়। এরপর থেকে ওই রাস্তা দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে অটোরিকশা, ভটভটিসহ ছোটখাটো যানবাহন চলাচল করতো। বর্তমানে ভাঙা অংশের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকায় ওই এলাকার প্রায় ১০টি গ্রামের বাসিন্দাসহ স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থের ব্রিজটির মাঝের পাটাতনের একাদিক অংশ ভেঙ্গে পড়ে আছে। ইঞ্জিনচালিত টমটমের ধাক্কায় অনেক আগে সাইড ওয়ালও ভেঙে গেছে। যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে যে কেউই।

ভাঙা এই ব্রিজের দুই পাসে রয়েছে তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গড়িয়াবুনিয়া বাজার, কমিউনিটি ক্লিনিক, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গড়িয়াবুনিয়া এসহাকিয়া আলিম মাদরাসা, গড়িয়াবুনিয়া দরবার শরীর এবং উপজেলার বেতাগী সরকারি কলেজ, বিবিচিনি স্কুল অ্যান্ড কলেজে যাওয়ার জন্যও শিক্ষার্থীদের একমাত্র ভরসা হচ্ছে এই ব্রিজ।

Road


বিজ্ঞাপন


গড়িয়াবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক মো. মনির গাজী বলেন, এই ব্রিজ দিয়ে আমাদের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসা-যাওয়া ও চলাচলের জন্য এই ভাঙা ব্রিজই একমাত্র ভরসা। তাই তাদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।

দক্ষিণ ফুলতলা গ্রামের বাসিন্দা ও গড়িয়াবুনিয়া বাজারের ব্যবসায়ী মো. মোকলেসসহ একাধিক ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় কারণে আমাদের বাজারে মুদি মালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পরিবহনে একদিকে যেমন বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। অন্যদিকে ব্যবসার ক্ষেত্রে ব্যাপক লোকসানের শিকার হতে হচ্ছে। ব্রিজ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে দু-একটি যানবাহন পারাপার হলেও এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করা কয়েক হাজার মানুষ তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পরিবহন করতে পারছে না।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. জসিম মোল্লা বলেন, প্রায় দুই বছর ধরে ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ে আছে। এতে এ সড়ক দিয়ে মানুষের চলাচলের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ব্রিজ ভাঙা হওয়ায় বড় গাড়ি চলে না। এখন ঝুঁকি নিয়ে শুধু ইঞ্জিনচালিত টমটম ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচল করে।

এলাকাবাসী একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন-নিবেদন করেছেন। তারা আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই দেখা মিলছে না।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) বেতাগী উপজেলা প্রকৌশলী মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, ব্রিজটির কথা আমি শুনেছি এবং এটি প্রোজেক্টে অন্তর্ভুক্ত করাও হয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি এখানে নতুনভাবে ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর