পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসকের অবহেলায় নবজাতকসহ এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে ওই ক্লিনিকের সামনে বিক্ষোভ করেছেন স্বজনরা। অবস্থা বেগতিক দেখে রাতেই ক্লিনিকের পরিচালকসহ অভিযুক্ত চিকিৎসক পালিয়ে যান।
শনিবার (১ এপ্রিল) দিনগত রাতে উপজেলা সদরের সুরমা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
রোগীর স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, ঠাকুরগাঁওয়ের রাজাগাঁও ইউনিয়নের সাবিত্রী (২২) নামে এক প্রসূতি শনিবার রাত ৮টার দিকে ওই ক্লিনিকে ভর্তি হন। প্রসূতির শারীরিক অবস্থা জানিয়ে তার স্বামী কমল রায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাও করেন।
ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ প্রসূতিকে ভর্তি করে ব্যবস্থাপত্র দেয় এবং জরুরি অস্ত্রোপচারের জন্য রুমে নিয়ে যায়। সেখানে বোদা মাতৃ মঙ্গল কেন্দ্রের সার্জারি চিকিৎসক রহমতুল্লাহসহ দুজন চিকিৎসক ছিলেন। অস্ত্রোপচার শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যে প্রসূতির শারীরিক অবস্থা অবনতি হলেও কাউকে কিছু না বলে চিকিৎসকরা চলে যান। ঘণ্টাখানেক পর প্রসূতির স্বজনদের ডেকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাকে অন্যত্র নিয়ে যেতে বলেন।
একপর্যায়ে গোপনে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ সাবিত্রীকে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। তবে এর আগেই নবজাতকসহ সাবিত্রী মারা যান। খবর পেয়ে প্রসূতির স্বজন ও স্থানীয়রা বিক্ষোভ শুরু করলে কৌশলে ক্লিনিকের চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টরা সটকে পড়েন।
প্রসূতির স্বামী কমল রায় বলেন, আমার স্ত্রী সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিল। সিজারের কথা বলে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। প্রসূতিসহ নবজাতকের মৃত্যু হলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ গোপনে তাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান এবং মিথ্যা আশ্বাস দেন।
বিজ্ঞাপন
চিকিৎসকের অবহেলার কারণেই এমনটা ঘটেছে বলে দাবি কমল রায়ের।
এ নিয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. আনন আফসান বলেন, প্রসূতিকে এখানে আনার আগেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি মারা যান। নবজাতককে বাঁচানোর চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
বোদা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ বলেন, খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। উদ্বুদ্ধ ঘটনার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া চিকিৎসকের অবহেলা নিয়ে অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিনিধি/এইচই
