মানিকগঞ্জের ধলেশ্বরী নদী খননের দুই বছরেই শুকিয়ে ঠনঠনে

বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ নামের মহাপরিকল্পনার আওতায় মানিকগঞ্জের ধলেশ্বরী নদী খনন হয়েছে বছর দুই। অথচ সেই নদী এখন পানি শুণ্য। নদীর বুকে চাষ হচ্ছে ধান, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসল। স্থানীয়দের অভিযোগ নদী খননের নামে মাটি বাণিজ্য হয়েছে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

নদী ভাঙন ,বন্যা নিয়ন্ত্রন, নদী ব্যবস্থাপনা, নগর ও গ্রামে পানি সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ ৬টি লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ মহাপরিকল্পনা  একনেকে পাশ হয় ২০১৮ সালে। এই পরিকল্পনার আাওতায় ৬৪ জেলার ছোট নদী, খাল, ও জলাশয় পুণঃখনন প্রকল্পের  (প্রথম পর্যায়) অংশ হিসাবে মানিকগঞ্জের ধলেশ্বরী নদী পুনঃখননের উদ্যোগ নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। কালিগঙ্গ নদী থেকে ধলেশ্বরী নদীর উৎসমুখ সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লি থেকে সিংগাইর উপজেলার ইসলামপুর পর্যন্ত ৪৫.৫০ কিলোমিটার নদীখনন শুরু হয় ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে। পাঁচটি প্যাকেজে এই খনন কর্মসূচির চুক্তি মূল্য ধরা হয় ৭৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। কাজ শেষের সময় ধরা হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাস। তবে এক বছর সময় বাড়িয়ে কাজ শেষ হয়  গত ২০২১ সালের শেষ দিকে।

পাঁচটি প্যাকেজের ১নং বা প্রথম প্যাকেজটি শুরু হয়ে তিল্লি মুখ থেকে  জান্না পর্যন্ত ১০.২০ কিলোমিটার অংশে। 

সরজমিনে দেখাগেছে নদীর এই অংশে কয়েকটা ডোবামত থাকলেও বেশির ভাগেই কোন পানি নেই। ধুধু বালুচর। মানুষের পায়ে হাটা পথের দাগ। অনেক স্থানে চাষ হয়েছে ধান ও ভুট্টার। নদীর অনেক যায়গায় দেখাগেল মাটি  খুড়ে অস্থায়ী কুয়া নির্মান করা হয়েছে। গ্রামবাসীরা সেখান থেকে পানি সংগ্রহ করছেন।  মাস্তারঘাট এলাকায় নদীর ওপরে ব্রীজের নিচে দেখাগেল হাটু পানিতে দুই তিনটি ছোট নৌকা অর্ধ নিমজ্জিত অবস্থায়। সবচাইতে খারাপ অবস্থা যেখানে কালিগঙ্গা নদী থেকে ধলেশ্বরী নদীর উৎপত্তি হয়েছে। যাকে তিল্লি মুখ নাম অবহিত করা হয়। দেখাগেল তিল্লি মুখে বিরাট চর পড়ে দুই নদীকে বিভক্ত করে ফেলেছে। কালিগঙ্গা নদীতে পানির প্রবাহ থাকলেও ধলেশ্বরী নদীতে কোন প্রবাহ নেই।

স্থানীয়রা জানালেন তিল্লি মুখ গত প্রায় দশ বছর ধরে বন্ধ ছিল। বর্ষার এক দুই মাস পানি প্রবাহ থাকতো। সেভাবে বর্ষা না হলে কোন কোন বছর কালিগঙ্গা থেকে ধলেশ্বরীতে পানি ঢুকতে পারতোনা। দুই বছর আগে তিল্লি মুখসহ পুরো নদীতেই বেশ তোরজোর করে মাটি কাটা শুরু হয়। শতশত ট্রাক মাটি বিক্রি হয়েছে। এক পর্যায়ে তিল্লি মুখ দিয়ে পানিও ঢুকতে শুরু করে। কিন্তু গত বছর বর্ষার সময় আবার পলি পড়ে ভরাট হয়ে যায়। এখন সেখানে বিশাল চর। যে কারনে ধলেশ্বরী নদী খনন করলেও পানি থাকেনা।