শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

পরিবারের সঙ্গে ভাত খাওয়া হলো না ফরহাদ শিকদারের

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৯ মার্চ ২০২৩, ০২:০২ পিএম

শেয়ার করুন:

পরিবারের সঙ্গে ভাত খাওয়া হলো না ফরহাদ শিকদারের
ছবি: ঢাকা মেইল

সকালে ব্যবসার কাজে ঢাকা রওনা হয়েছিলেন ফরহাদ শিকদার (৬৫)। মেয়ে সাথী আক্তারকে ডেকে বলে গিয়েছিলেন দুপুরে খাবার রান্না করে রাখতে। তিনি ফিরে এসে পরিবারের সঙ্গে দুপুরের খাবার খাবেন। কিন্তু সেই খাওয়া আর হলো না তার। বাস দুর্ঘটনায় থমকে গেলো তার জীবন।

রোববার (১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাসে পদ্মাসেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। এসময় বাসে থাকা ফরহাদ শিকদারসহ এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু হয়।


বিজ্ঞাপন


বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুর সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডা. মুনীর আহমদ খান।

ফরহাদ শিকদার নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার চর করকী এলাকার মৃত বকু শিকদারের ছেলে।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, রোববার ভোরে ফরহাদ শিকদার ব্যবসায়ী কাজে নড়াইল থেকে ইমাদ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে করে ঢাকার যাত্রীবাহী যাচ্ছিলেন। এসময় বাসটি পদ্মাসেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দূর্ঘটনায় কবলিত হলে ফরহাদ শিকদার ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরবর্তীতে তার পকেটে থাকা মুঠোফোনের মাধ্যমে পরিবারকে খবর দিলে মেয়ে সাথী আক্তার বাবার মরদেহ নিতে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে আসেন।

এসময় নিহতের বড় মেয়ে মেয়ে সাথী আক্তার আহাজারিতে ভেঙে পড়েন। বিলাপ করতে করতে বলেন, আব্বায় কই ছিল দুপুরে ভাত রান্না করতে, একসাথে আইয়া ভাত খাইবো। সেই খাওন আর হইলো না। আইজ আমরা সর্বহারা হইয়া গেলাম। আমাগো বট গাছটা আজ চলে গেলো। আম্মারে বাড়িতে ফিরা কি জবাব দিমু? আল্লা তুমি এইডা কি করলা।


বিজ্ঞাপন


উল্লেখ্য, রোববার (১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস পদ্মাসেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। এসময় দুমড়েমুচড়ে যায় বাসটি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নারীসহ ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও আহত হয়েছেন কমপক্ষে আরও ৩০ জন।

এ ঘটনায় ১৯ জনের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও একই সঙ্গে নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা ও আহত যাত্রীদের পরিবারকে ৫ হাজার টাকা করে সহযোগিতা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন।

টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর