মাদারীপুরে চাঁদাবাজি ও মানহানির অভিযোগে জেলার তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা হয়েছে। আদালতের বিচারক মামুনুর রশিদ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
বুধবার (১৫ মার্চ) বিকেলে জেলার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাদী হয়ে মামলাটি করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল আক্তার।
বিজ্ঞাপন
মামলায় আসামিরা হলেন— দৈনিক সমকাল ও বাংলাভিশন টেলিভিশনের মাদারীপুর প্রতিনিধি ফরিদ উদ্দিন মুপ্তি, এশিয়ান টিভির মাদারীপুর প্রতিনিধি মাসুদ হোসেন খান ও সময়নিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কমের সম্পাদক আজিজ মুন্সি।
এদিকে, ওই তিন সাংবাদিকের দাবি, উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নবিদ্ধ করতে বাবুল আক্তার তাদের মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে এই মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
অন্যদিকে, তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় আইনজীবী সমিতির ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মাদারীপুর প্রেসক্লাবসহ জেলার তিনটি সাংবাদিক সংগঠন।
মামলা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দৈনিক সমকালে গত ১৩ মার্চ ‘ধর্ষণের অভিযোগ ৪ লাখ টাকায় রফা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ ছাড়াও স্থানীয় কয়েকটি অনলাইনে এই সংশ্লিষ্ট একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল আক্তার এই সালিশ মিমাংসা করে দিয়েছে বলে সংবাদের উল্লেখ করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল আক্তার।
বিজ্ঞাপন
এ সময় বাবুল আক্তার জানান, ঘটমাঝি ইউনিয়নের চিড়াইপাড়া গ্রামের একটি প্রেম ঘটিত বিষয় নিয়ে সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে গত ৯ মার্চ চাঁদা দাবি করে না পেয়ে মনগড়া মানহানি সংবাদ প্রকাশ করে ওই তিন সাংবাদিক। এতে তার মানহানি হয়েছে বলেও দাবি করেন।
মামলার বাদীর আইনজীবী সুজন ভৌমিক বলেন, মাদারীপুর বার সমিতিকে জড়িয়ে ও বারের সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। বারের সম্মানহানীর প্রেক্ষিতে বিচার চেয়ে মামলা করা হয়। আশা করছি, আমরা ন্যায় বিচার পাব।
এ ব্যাপারে মামলার আসামি আজিজ মুন্সি জানান, ছেলের পরিবারের বক্তব্য ও মেয়ের পরিবারের বক্তব্য এবং স্থানীয় সালিশদের বক্তব্য নিয়ে গত ৮ মার্চ রাতে ঘাটমাঝি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবুল আকতার হাওলাদারের মুঠোফোন কল করে তার বক্তব্য নিয়ে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। কিন্তু মামলার বাদী বাবুল আকতার নিজেকে বাঁচানোর জন্য মিথ্যা, ভিত্তিহীনভাবে মনগড়া, কাল্পনিক কাহিনী সাজিয়ে মামলা করেছে। যা কখনোই সত্য নয়।
মাদারীপুর প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইয়াকুব খান বলেন, এই মামলার কোনো ভিত্তি নেই। মামলাটি হয়রানিমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সাংবাদিকরা তাদের সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করেই সংবাদ প্রকাশ করেছে। এখানে ওই আইনজীবীর (বাবুল আক্তার) স্বার্থে আঘাত লাগায় তারা তাদের অপরাধ ঢাকতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ এনে মামলা করেছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
টিবি
