শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

অফিসে এসে ‘উধাও’ হয়ে যান কর্মকর্তারা

ইব্রাহিম আকতার আকাশ
প্রকাশিত: ১৫ মার্চ ২০২৩, ১২:৪২ পিএম

শেয়ার করুন:

অফিসে এসে ‘উধাও’ হয়ে যান কর্মকর্তারা
ছবি: ঢাকা মেইল

ভোলার বেশিরভাগ অফিসের কর্মকর্তারা নির্ধারিত সময়ে তাদের কর্মস্থলে উপস্থিত হচ্ছেন না। নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘণ্টা পরও উপস্থিত হতে দেখা যায় অনেককে। আবার কোনো কোনো কর্মকর্তা নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হয়ে কিছু সময় পর উধাও হয়ে যান। কি কাজে কোথায় গিয়েছেন তা অফিসের পিয়নও বলতে পারছে না। ফলে সেবা নিতে আসা সাধারণ নাগরিকদের পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। যে যার মতো করে নিজ নিজ ইচ্ছানুযায়ী দফতরে উপস্থিত হচ্ছেন।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত ভোলা সদর উপজেলার বিভিন্ন সরকারি দফতরে ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ কর্মকর্তাই সকাল ৯টায় আসছেন না। কর্মকর্তারা দফতরে না আসলেও নিজ নিজ দফতরের পিয়ন দিয়ে দফতর খুলে রেখেছেন।


বিজ্ঞাপন


সকাল ৯টায় উপজেলার ‘সমবায় কর্মকর্তার’ কার্যালয়ে দেখা যায় তালা ঝুলতে। অফিসের অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা থাকলেও দেখা মেলেনি ওই কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের। সাড়ে ৯টার দিকে অফিসে এসে কোথায় যেন চলে গেলেন। অফিসের পিয়নও জানাতে পারছে না তিনি কোথায় গেলেন। একই সময়ে ‘উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা’র কার্যালয়ে তালা ঝুলতে দেখা যায়। উপজেলা নারী সংস্থার অফিসে ৯টার পর এসেছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

তবে উপজেলা সমাজসেবা, প্রকৌশলী, মৎস্য ও কৃষি অধিদফতরগুলোতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিত হতে দেখা গেছে।

উপজেলা সমবায় অফিসের পিয়ন ফারুক হোসেন বলেন, স্যার অফিসে এসে কোথায় যায় তা তো আমাদের বলে যায় না। স্যারই জানেন তিনি কোথায় গেছেন, আমি জানি না।

একই কথা বলেছেন উপজেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের পিয়ন কামরুল। তিনি বলেন, আমাদের উপজেলা স্যার অফিসে এসে আবার কোথায় যেন যান, আমরা তো স্যারকে জিজ্ঞেস করতে পারি না।


বিজ্ঞাপন


দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা শিক্ষা অফিসে গিয়েও শিক্ষা কর্মকর্তা শিরিন আক্তারকে পাওয়া যায়নি। অফিসের পিয়ন জানান, তিনি একটি অনুষ্ঠানে বাইরে আছেন, ফিরতে লেট হবে।

পরিসংখ্যান কার্যালয়ের সামনে কথা হয় এক সেবাগ্রহীতা মামুন হাওলাদারের সঙ্গে। তিনি রাজাপুর ইউনিয়ন থেকে এসেছেন। সকাল ১০টার দিকে তিনি পরিসংখ্যান কার্যালয়ে এসেও উপজেলা কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিনের দেখা পাননি।

একই কথা বলেছেন, শিবপুর ইউনিয়ন থেকে আসা জাকির হোসেন। তিনি বলেন, উপজেলা কর্মকর্তা যেন কি কাজে বাহিরে গেছে। তার ফিরতে লেট হবে। তিনি ফোনের মাধ্যমে ওই কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছেন।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার শিরিন আক্তার, সমবায় অফিসার মিজানুর রহমান ও পরিসংখ্যান অফিসার মহিউদ্দিনের কাছে অফিসে উপস্থিত না থাকার কথা জানতে চাইলে তারা ঢাকা মেইলকে জানান, অফিসিয়াল কাজের জন্য তারা অফিসের বাইরে আছেন। ফিল্ডে তাদের কাজ করতে হয়। সেজন্য তারা তাদের কাজে আছেন। অফিসে যাতে কোনো সেবাগ্রহীতা গিয়ে ফিরে না যায়, সেজন্য অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তারা অফিসে কাজ করছেন। তবে মাঝেমধ্যে নির্ধারিত সময়ে তারা অফিসে উপস্থিত হতে পারেন না বলেও জানান।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ফিল্ডে কাজ থাকলে অনেক ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের অফিসের বাইরে থাকতে হয়। তবে কোনো কর্মকর্তা যদি নির্ধারিত সময়ে অফিসে উপস্থিত না থাকে কিংবা ফিল্ডের কাজের মিথ্যে তথ্য দিয়ে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের নজরদারি থাকবে। আমরা খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখব।

প্রতিনিধি/এইচই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর