শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

আসেন পরে, বেরিয়ে যান সবার আগে

তাহজীবুল আনাম
প্রকাশিত: ১৫ মার্চ ২০২৩, ১২:১১ পিএম

শেয়ার করুন:

আসেন পরে, বেরিয়ে যান সবার আগে
ছবি: ঢাকা মেইল

দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অফিস সময় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত করা হলেও কক্সবাজারের অধিকাংশ সরকারি অফিসে এসব নিয়ম মানা হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে৷ এসব অফিসের কর্মকর্তারা যখন ইচ্ছা অফিসে আসেন, আবার অফিস থেকে বেরিয়ে যান সবার আগে। এতে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে, তেমনি সরকারের নিয়মও ভাঙা হচ্ছে।

সোমবার (১৩ মার্চ) সরেজমিনে কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে দেখা যায়, সকাল ১০টার দিকেও কর্মকর্তারা কেউ আসেননি। সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পাসপোর্ট অফিস গেটের প্রধান ফটকে ঝুলছে তালা।


বিজ্ঞাপন


চকরিয়া থেকে সেবা নিতে আসা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, সকাল ৮টা থেকে বসে আছি চায়ের দোকানে। এখন বাজে পৌনে ১০টা। পাসপোর্টে অফিসের হেডসহ কেউ এখনও আসে নাই৷ অফিস খোলা হয় ১০টার দিকে। তখন যেমন ভিড় থাকে, তেমনি কাজের কাজ কিছুই হয় না। একদিনের কাজ ১৫ দিনেও শেষ হয় না।

পাসপোর্ট অফিসে সেবা নিতে আসা আরেক যুবক মকবুল হোসেন বলেন, এই অফিসে পদে পদে ভোগান্তি। পাসপোর্ট অফিস কেন্দ্র করে দালালের উৎপাত। নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পরিশোধ করেও দুই মাস ধরে পাসপোর্ট পাচ্ছি না। সপ্তাহে চার দিন করে এসেও পাসপোর্ট অফিসারের দেখা পাওয়া যায় না। হয়তো পাসপোর্ট অফিসার অফিসেও আসেন না।

পাসপোর্ট অফিসের গেটে কথা হয় মিথুন চক্রবর্তীর সঙ্গে। তিনি বলেন, একটি পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিষয়ে অফিসারের সঙ্গে জরুরি কিছু আলাপ ছিল, সকাল ৯টা থেকে এসে বসে আছি। কিন্তু তাদের কোনো দেখা নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই অফিসের এক কর্মচারী জানান, উপ-পরিচালক মাহবুবুর রহমান অফিসে আসেন সকাল ১০টার পর। কোনো কোনো সময় অফিসে আসেন না, আসলেও বিকেল ৪টার আগে বেরিয়ে যান তিনি।


বিজ্ঞাপন


এ বিষয়ে কক্সবাজার পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে হয়। তিনি জানান, আমি সোয়া ৯টায় অফিসে এসেছি। অফিসের নিচে নেমে কাজ করছি।

তবে সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এ প্রতিবেদকের অবস্থানকালে উপ-পরিচালকের দেখা পাওয়া যায়নি। পরে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে সোয়া ১২টার দিকে পুনরায় কল দিলে উপ-পরিচালক ফোন রিসিভ করেন। অফিসে দেরি করে আসার বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন তিনি৷

অন্যদিকে, কক্সবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও উখিয়া পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসে কর্মকর্তারা ঠিক সময়ে অফিসে আসেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (১৩ মার্চ) পল্লী বিদুতের ম্যানেজার অফিসে আসেন সকাল সাড়ে ৯টায়। উখিয়া অফিসের ডিজিএম সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত অফিসে আসেননি৷

এ বিষয়ে কক্সবাজার পল্লী বিদুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার দীলিপ চন্দ্র চৌধুরী জানান, আমাদের অফিসের কর্মকর্তারা ঠিক সময়ে অফিসে আসেন।

উখিয়ার ডিজিএম ইব্রাহিম অফিসে না আসার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি যতটুকু জানি তিনি (ডিজিএম ইব্রাহিম) একটি প্রোগ্রামে বাইরে আছেন, তাই অফিসে উপস্থিত হতে পারেননি৷

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পল্লী বিদুৎ অফিসের কয়েকজন কর্মচারী বলেন, আমাদের স্যারেরা অফিসে আসেন দেরিতে, আবার বেরিয়ে যান আগে আগে। সঠিক সময়ে অফিসে আসেন না৷

এদিকে, কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসে গিয়ে দেখা যায় একই অবস্থা। সেখানে সকাল ১০টার পরও দেখা নেই কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর। অথচ অফিস শুরু হওয়ার কথা সকাল ৯টায়।

সিভিল সার্জন অফিসে সেবা নিতে আসা নজরুল ইসলাম বলেন, ঠিক সময়ে পাওয়া যায় না এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। কর্তারা আসেনও দেরিতে, আবার বেরিয়ে পড়েন আগে আগে।

তবে এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন অফিসের কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রতিনিধি/এইচই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর