দেশসেরা রাজশাহী কলেজ ছাত্রাবাসে টর্চার সেল গড়ে সাংবাদিকসহ ৩৫ জনকে পিটিয়েছে ছাত্রলীগ। এ ঘটনায় সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে ছাত্রাবাস পরিদর্শনে গিয়ে ছাত্রলীগের তোপের মুখে পড়েন কলেজ অধ্যক্ষ।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাত আনুমানিক ১২টার দিকে কলেজ প্রশাসন হল পরিদর্শনে গেলে এ ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
এক পর্যায়ে কলেজ অধ্যক্ষ, ছাত্রাবাসের সুপারসহ সাংবাদিকদেরও প্রকাশ্যে হুমকি দেয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। পরে রাত ১টার দিকে পরিবেশ শান্ত হয়। তবে ছাত্রাবাসজুড়ে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, সাধারণ শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের সামনে কলেজ অধ্যক্ষকে হুমকি দেওয়ায় বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আব্দুল খালেক এবং ছাত্রাবাস সুপার ও ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনিসুজ্জামান মানিক। পরে কলেজ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যদের ডাকলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা রুমে ফিরে যায়।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আব্দুল খালেক বলেন, এখানে সাধারণ শিক্ষার্থীরা পড়তে আসে। কোনো রাজনৈতিক দলের নির্যাতন সহ্য করতে না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অন্য রকম সুনাম আছে। আমরা যে ছাত্রলীগ করেছি, এই ছাত্রলীগ কি সেই ছাত্রলীগ!
কলেজে ছাত্রলীগের যে সদস্যরা শিক্ষার্থী নির্যাতনের সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি উর্ধ্বতনদের জানানো হয়েছে। রাজশাহী কলেজের যে সুনাম আছে তা কতিপয় নেতার কারণে নষ্ট হতে পারে না। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দও ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান অধ্যক্ষ।
বিজ্ঞাপন

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাসের ই ব্লক ও বি ব্লকে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার শিক্ষানবিশ গণমাধ্যমকর্মীরা হলেন- কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাকিব ও ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শরীফুল ইসলাম। তারা ক্যাম্পাস সাংবাদিক সংগঠন রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটির (আরসিআরইউ) সদস্য।
প্রসঙ্গত, কলেজ ছাত্রাবাসে থাকা শিক্ষার্থীদের জোর করে মিছিল-মিটিংসহ দলীয় কর্মসূচিতে নিয়ে যায় ছাত্রলীগ। যেতে না চাইলে মারধরসহ নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। নির্যাতন করা হয় টর্চার সেলে। এছাড়া ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী মাদকের রমরমা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। বসে মাদকের আসর। আর মাদকের অর্থ জোগাড়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্যাতন চালিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগও আছে তাদের বিরুদ্ধে।
প্রতিনিধি/এসএস

