শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে আ’লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৩০

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২১ মার্চ ২০২২, ১০:০৬ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img
ছবি : ঢাকা মেইল

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে স্কুল পরিচালনা কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। সোমবার (২১ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের সান্দিয়ারা বাজার ও বশীগ্রাম ব্রিজ এলাকায় কয়েক ঘণ্টা ধরে এ সংঘর্ষ চলে।

এ সময় উভয়পক্ষের লোকজন বেশকিছু ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ভাঙচুর করেন।


বিজ্ঞাপন


এদিকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুপক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার।

পুলিশ, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন জাফর গ্রুপের সঙ্গে পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামিউর রহমান সুমন মিঞা গ্রুপের বিরোধ চলে আসছে। যেকোনো ঘটনায় এলাকায় দুটি পক্ষপাতিত্ব সৃষ্টি হয়।

গত রোববার পান্টির ডাঁসা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সুমন মিঞা গ্রুপ প্যানেল বিজয়ী লাভ করে। এ নিয়ে উত্তেজনা চলছিল এলাকায়। এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচনে বিজয়ী গোলাম নবী সোমবার সকালে সান্দিয়ারা বাজারে প্রতিপক্ষের ডাঁসা এলাকার নেতৃত্বদানকারী ব্যবসায়ী মামুনের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা শরিফুল ইসলাম দুলালকে কটূক্তি করেন। এ কারণে মামুনের সমর্থকরা গোলাম নবীকে পিটিয়ে আহত করে।

এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এরপর সুমন গ্রুপের এক সমর্থক বশীগ্রাম ডাঁসা মসজিদে ইজ্জতের লড়াই দাবি করে ঘোষণা দেন এবং উভয় পক্ষের মধ্যে সান্দিয়ারা বাজার ও বশীগ্রাম ব্রিজ এলাকায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রামদা, ঢাল, সরকি, লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়।


বিজ্ঞাপন


আরও জানা গেছে, এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে। বেশ কিছু ঘরবাড়ি, দোকানপাট ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। আহতরা কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

এ বিষয়ে পান্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামিউর রহমান সুমন বলেন, রোববার স্কুল ভোটে আমার প্যানেল বিজয় লাভ করে। সোমবার সকালে বিজয়ী গোলাম নবী সান্দিয়ারা বাজারে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন মারপিট করে আহত করে। পরে দুপক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।

জাহিদ হোসেন জাফর সমর্থক মামুনের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা শরিফুল ইসলাম দুলাল বলেন, সুমন মিঞার নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের কটূক্তি করে এবং রামদা, ঢাল, সরকি, লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল নিয়ে আক্রমণ করে। এ সময় আমাদের লোকজন প্রতিহত করে। এতে আমাদের প্রায় ২০ জন আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে। বেশ কিছু ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে প্রতিপক্ষরা।

জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন জাফর বলেন, স্কুল নির্বাচন ও পূর্বশত্রুতার জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। আমি এলাকার বাইরে আছি। উভয়পক্ষই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

কুমারখালী থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, স্কুল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের সমর্থকরা আহত হয়েছেন। তবে আহতের সংখ্যা এখনও জানা যায়নি।

তিনি আরও বলেন, মসজিদে প্রচারের বিষয়টি শুনেছি। তবে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাববাদের জন্য তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তবে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

এইচই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর