মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

গোলাপ মিঞার একুশে পদক মনোনয়নে পাকুন্দিয়ায় আনন্দ শোভাযাত্রা

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:৫৯ এএম

শেয়ার করুন:

গোলাপ মিঞার একুশে পদক মনোনয়নে পাকুন্দিয়ায় আনন্দ শোভাযাত্রা

ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় কিশোরগঞ্জ-১ (পাকুন্দিয়া-হোসেনপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম শামসুল হক গোলাপ মিঞা মরণোত্তর একুশে পদক-২০২৩ এর জন্য মনোনীত হওয়ায় তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় আনন্দ শোভাযাত্রা ও সমাবেশ হয়েছে।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে গোলাপ মিঞা স্মৃতি সংসদের উদ্যেগে তারাকান্দি বাজারে এ শোভাযাত্রা ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।


বিজ্ঞাপন


শোভাযাত্রাটি তারাকান্দি বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় স্থানীয় লোকজন স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণ করেন।

গোলাপ মিঞা স্মৃতি সংসদের সভাপতি মো.শফিকুল ইসলাম শফিকের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সরকার শামীম আহম্মদ, মরহুম একেএম শামসুল হক গোলাপ মিঞা এমপি ছেলে একেএম দিদারুল হক, তারাকান্দি ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক মো. কফিল উদ্দিন, পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. জাকির হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল হাসান হৃদয় প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে গোলাপ মিঞার অবদান তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।

রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব বাবুল মিয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিত জানানো হয় ১৯ জন ব্যক্তি ও দুই প্রতিষ্ঠানকে একুশে পদক-২০২৩ এর জন্য মনোনীত করেছে সরকার।


বিজ্ঞাপন


১৯ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম শামসুল হক গোলাপ মিঞাকে মরণোত্তর একুশে পদক-২০২৩ এর জন্য মনোনীত করা হয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম শামসুল হক গোলাপ মিঞা ১৯৪০ সালের ৪ মার্চ কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার তারাকান্দি গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মৌলভী সিরাজুল হক ছিলেন একজন সরকারি কর্মকর্তা। মা আমেনা বেগম ছিলেন গৃহিণী।

স্কুল জীবন থেকেই তিনি এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের প্রতিটি আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ছাত্র বয়সে ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে কারাবরণ করেন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফার দাবিতে মিছিল বের করলে পুনরায় কারাবরণ করেন তিনি। ১৯৭০ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জ অঞ্চলে সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হলে তিনি আবার গ্রেফতার হন। সেসয় তিনি তিন বছর কারাগারে ছিলেন। এছাড়াও তিনি সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনে ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত অসামান্য ভূমিকা পালন করেন।

১৯৮৬ ও ১৯৯৬ সালে তিনি কিশোরগঞ্জ-১ (পাকুন্দিয়া ও হোসেনপুর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮২ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত পরপর তিন বার মাল্টিপারপাস বহুমুখী সমবায় সমিতির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। যার অবদান স্বরূপ জাতীয় সমবায় পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। গোলাপ মিঞাকে কিশোরগঞ্জ জেলার সমবায় আন্দোলনের পুরোধা বলা হয়ে থাকে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম শামসুল গোলাপ মিঞা ১৯৯৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সংসদ সদস্যের দায়িত্বে থাকাকালীন ঢাকাস্থ গ্যাস্ট্রো লিভার হাসপাতালে মারা যান।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর