মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বাঘড়া স্বরূপচন্দ্র পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে অনৈতিকভাবে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সম্প্রতি স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক (গনিত ও সাধা. বি) আশরাফুল ইসলাম ও সহকারী গ্রন্থাগার শামীমা আক্তারকে স্থায়ী নিয়োগ দিয়েছেন বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. সাইদুর রহমান পিন্টু।
বিজ্ঞাপন
শ্রীনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সুরাইয়া আসরাফী এর সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা অবহিত আছি, আপনারা যে অভিযোগটি পেয়েছেন আমরাও ঠিক একই বিষয়ে অভিযোগপত্র পেয়েছি। বিদ্যালয়টিতে অন্য একটি বিষয়ে তদন্ত চলছে। আমি ইউএনও স্যারকে ওই তদন্তে সাহায্য করছি। এটা শেষ হলে জাল-ভুয়া সনদে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টিও দেখা হবে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে আশরাফুল ইসলাম গত ২০১০ সাল থেকে সরূপচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে নিয়মিতভাবে শিক্ষক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে আসছে। অথচ ২০১২ সালের রংপুর টিটি কলেজ থেকে বিএড প্রশিক্ষণের সনদ কিভাবে পেলেন তিনি।
আরও জানা যায়, শামীমা আক্তার বিদ্যালয়ের সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টুকে ম্যানেজ করে নিয়োগ নিয়েছেন। তার জাল ও ভুয়া সনদ সংগ্রহ করার ব্যাপারে সভাপতি পুরোপুরিভাবে অবগত। শামীমা আক্তারের স্বামী একেএসএম সোহরাব হোসেন একই বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক। তিনি ভুয়া সনদ সংগ্রহ করতে সহযোগিতা করেন। এমন পরিস্থিতিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া দেরি হয়।
অভিযোগ পত্রে শিক্ষক নিয়োগদানে বিদ্যালয়ের সভাপতির বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের বিষয়ে তুলে ধরা হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনায় স্থানীয় ও অভিভাবকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করেছে।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোল্লা এয়ার আলী জানান, বেশিদিন হয়নি আমি দায়িত্ব পেয়েছি। তবে এ বিষয়ে সভাপতি মহাদয় ও সাবেক প্রধান শিক্ষক ভালো বলতে পারবেন। নিয়োগ তাদের সময় হয়েছে। আপনার শিক্ষক নিয়োগের যে তথ্য জানতে চাচ্ছেন। তারা এখন বিদ্যালয়েই আছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. কামাল হোসেনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে দিয়ে সভাপতি সব করিয়ে নিয়েছেন। আমি দিতে বাধ্য ছিলাম। এছাড়া ফান্ডের টাকাপয়সা সংক্রান্ত বিষয়েও ঝামেলার সৃষ্টি হলে আমার ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করা হয়। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দফতরের সংশ্লিষ্টগণ জানেন। বিদ্যালয়ের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় আমাকে অভিযুক্ত করে সব দায় চাপানো হয়। আমি নানা ষড়যন্ত্রের শিকার।
বিদ্যালয়ের সভাপতি সাইদুর রহমান পিন্টুর বলেন, সাবেক প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন এসব অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। তার কোনো যোগ্যতা ছিল না প্রধান শিক্ষক হওয়ার। তিনিও সনদ জাল-জালিয়াতি করে এখানে প্রধান শিক্ষক হন। যখন জানতে পারি তখন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এখন তিনি বিভিন্ন জায়গায় মিথ্যা ও ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছেন। যে দুই শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ করা হচ্ছে এটা তো তার সময়েই হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম বলেন, সনদ জাল হওয়ার প্রশ্নই উঠে না। জেলা শিক্ষা ভবন (ডিআইএ) আমাকে ডেকেছিলেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আমাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। আমার কাগজপত্র ভুয়া হলে এখনও কিভাবে চাকরি করছি।
অভিযুক্ত শিক্ষিকা শামীমা আক্তার দাবি করেন তার সনদ শতভাগ ঠিক আছে।
প্রতিনিধি/এইচই

