শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

নেই বাদ্যযন্ত্র, খালি গলার গানেই চলে সংসার

মো. জাহিদ হাসান মিলু
প্রকাশিত: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:২২ পিএম

শেয়ার করুন:

নেই বাদ্যযন্ত্র, খালি গলার গানেই চলে সংসার
ছবি : ঢাকা মেইল

ছোটবেলা থেকে গানের প্রতি আগ্রহ তার। বয়স যখন ১০, তখন থেকে তিনি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার হাটবাজারে গান গেয়ে শোনান। মূলত খালি গলায় গান গেয়ে থাকেন, কোনো বাদ্যযন্ত্র নেই তার। তবে, জর্দার ছোট কৌটোর ভেতরে সাইকেলের চাকার বল ঢুকিয়ে এক ধরনের বাজনা বাজিয়ে গান শোনান। এছাড়া মুখে শিস দিয়ে বাঁশির সুর তোলেন তিনি। 

হাটবাজারে গান গেয়ে যে টাকা পান তা দিয়েই চলছে তার সংসার। টাকার অভাবে তবলা বা ঢোল ও একতারা কিনতে পারছি না। 


বিজ্ঞাপন


বিটিভিতে প্রচারিত ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’-তে গান গাওয়ার ইচ্ছা তার। 

বলছিলাম ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া চাপাতি গ্রামের মৃত নিমাইঞ্জুর ছেলে মো. ভুট্টু মিয়ার কথা। 

thakurgaon

ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারান তিনি। তারপর থেকে কাজ করে খেতেন তিনি। কাজ করতে করতে দুর্ঘটনায় ডান হাতের হাড় ভেঙে যায় তার। বর্তমানে হাড় জোড়া থাকলেও ওই হাত দিয়ে ভারি কোনো কাজ করতে পারেন না। তাই গানকেই জীবিকা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি।


বিজ্ঞাপন


সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঠাকুরগাঁও শহরের তিতুমীর সড়কের পাশে ইউসিবি ব্যাংকের নিচে ৪০ বছর বয়সী এ যুবককে গান গাইতে দেখা যায়। 

এসময় আব্দুর রহিম নামে এক দর্শক জানান, ভুট্টু মিয়াকে দেখেছি বিভিন্ন হাটবাজারে হাত দিয়ে কৌটা বাজিয়ে গান গাইতে। কিছুদিন আগে রোড বাজারে আমাদের দোকানের সামনেও গান করেছেন তিনি। কোনো বাদ্যযন্ত্র ছাড়াই তার গলার সুর ও গান মুগ্ধ করে মানুষজনকে। তার প্রতিভা ভালো। এই প্রতিভাকে পুঁজি করেই তিনি সংসার চালাচ্ছেন।

জয়নাল নামে আরেক দর্শক বলেন, তার গান যে কোনো মানুষকে মুগ্ধ করে। তাই খুশি হয়ে মানুষ ১০-২০ টাকা দেন। এতে তার সংসার চলে।
  
নওসেদ নামে আরেক দর্শক তার গান শুনে বলেন, মানুষটির প্রতিভা আছে। সহযোগিতা পেলে তিনি হয়তো ভালো কিছু করতে পারবেন।

ভুট্টু মিয়া বলেন, আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। বতর্মানে সংসারে আমরা স্বামী-স্ত্রী ও দুই সন্তান। রাস্তা ঘাটে ও বিভিন্ন হাটবাজারে গান গেয়ে দৈনিক ৩ থেকে ৪শ টাকা আয় হয়। আমার স্ত্রী দিনমজুরি দিয়ে যা আয় করেন, তাতে করে কোনোমতে সংসার চলে। যদি সহযোগিতা পেতাম তাহলে অন্তত তবলা বা ঢোল ও একতারা কিনতে পারতাম। টাকার অভাবে এসব কিনতে পারছি না। 

ভবিষ্যৎ ইচ্ছার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইত্যাদিতে যাওয়ার ইচ্ছা আছে আমার। আর ইত্যাদিতে যেতে পারলে সেখান থেকে হয়তো হানিফ সংকেত আমাকে কিছু না কিছু সহায়তা করবেন বলে আশা করছি।

প্রতিনিধি/এইচই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর