শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

ভোটারদের কান্নাকাটি, এলাকায় গিয়ে সান্ত্বনা দিচ্ছেন হিরো আলম

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:৪৮ পিএম

শেয়ার করুন:

ভোটারদের কান্নাকাটি, এলাকায় গিয়ে সান্ত্বনা দিচ্ছেন হিরো আলম
ছবি : ঢাকা মেইল

বগুড়ার দুই আসনের উপনির্বাচনে হেরে যাওয়া আলোচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম ভোটারদের সান্ত্বনা দিতে নির্বাচনী এলাকায় যাচ্ছেন। বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে ৮শ ৩৪ ভোটের ব্যবধানে তিনি হেরে যান।  

শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে নিজ এলাকা বগুড়া সদরের এরুলিয়ায় প্রথম তিনি ভোটারদের সঙ্গে দেখা করেন। এরপর কাহালু উপজেলায় তার জনসংযোগ করার কথা।


বিজ্ঞাপন


এ সময় হিরো আলম বলেন, প্রহসনের এ নির্বাচনের ফল পাল্টানো কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না ভোটাররা। তারা নির্বাচন কমিশনের এ নাটকে ক্ষুব্ধ ও বিস্মিত। অনেকেই কান্নাকাটি করছেন। তাদের সান্ত্বনা দিতেই নির্বাচনী এলাকায় যাচ্ছি। দিনভর কাহালু ও নন্দীগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের সঙ্গে দেখা করে সান্ত্বনা দেব।

অল্প ভোটের ব্যবধানে হিরো আলমের পরাজয়ে কাহালু ও নন্দীগ্রাম উপজেলার তার সমর্থকেরা মেনে নিতে পারেননি। অনেক সমর্থক গতকাল বৃহস্পতিবার হিরো আলমের বাড়িতে এসে দেখা করেন। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে হিরো আলমকে ‘জনতার এমপি’ ঘোষণা দেন তারা। 

সমর্থকদের দাবি, হিরো আলম নির্বাচনে হারেননি, ফলাফল পাল্টে তাকে হারানো হয়েছে। এ জন্য ফলাফল বাতিলের দাবি জানাচ্ছেন।

কাহালু সদরের ভোটার আবদুর রাজ্জাক বলেন, সব সেন্টারত একচেটিয়া ভোট পাচে একতারা। ভোট শ্যাষে সেই ফল দেওয়া হচ্চে একতারা ফেল। মশাল কোনো কোনো কেন্দ্রে ১০টা ভোটও পায়নি। সেই মশাল নাকি পাস করচে। প্রহসনের এই ফল হামরা মানি না।


বিজ্ঞাপন


কাহালু সদরের তরুণ ভোটার আর কে রাব্বী বলেন, কোনো কেন্দ্রেই মশালের কোনো খবর ছিল না। সেই মশালকে পাস দেখানো হচ্ছে। এটা কোনো নির্বাচন নয়। নির্বাচনের নাটক করে হিরো আলমকে পরাজিত দেখানো হয়েছে। এটা হার নয়, বিজয়। হিরো আলম হারেননি, তাকে হারানো হয়েছে। হিরো আলম এখন জনতার এমপি। সামনের নির্বাচনে এ ষড়যন্ত্রের শোধ নেওয়া হবে।

এদিকে ফল পাল্টানোর অভিযোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে খোঁজ নিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। গতকাল বৃহস্পতিবার সিইসি টেলিফোনে রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন।

নন্দীগ্রাম উপজেলার তৈয়বপুর গ্রামের তরুণ ভোটার আজমল হোসেন বলেন, হিরো আলম গরিবের বন্ধু, সব সময় গরিবের পাশে থাকেন। অন্যরা ভোট নিয়ে জনগণের খোঁজ রাখেন না। এ কারণে তরুণ ও গরিব ভোটাররা সব একতারা মার্কায় ভোট দিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম বলেন, ফাটাকেষ্ট সিনেমায় সাত দিনের মন্ত্রী দেখেছিলাম। হিরো আলম গরিবের ফাটাকেষ্ট। দেশটা মেরামত করতে তাকে ৯ মাসের জন্য সংসদে এমপি হিসেবে দেখতে চেয়েছিলাম।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান বলেন, বগুড়া-৪ আসনে উপনির্বাচনে ১০ কেন্দ্রে ফলাফল পাল্টানোর অভিযোগ তুলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম গণমাধ্যমে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা নজরে আসার পর সিইসি ফোন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ পাওয়ার পর নন্দীগ্রাম উপজেলার সব কটি ভোটকেন্দ্রে ইভিএম মেশিনে প্রাপ্ত ফলাফল পুনর্যাচাই করা হয়েছে। ঘোষিত ফলাফলের সঙ্গে ইভিএম মেশিনে পড়া ভোটের হিসাব শতভাগ নির্ভুল আছে। কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল নির্বাচন কমিশনেও পাঠানো হয়েছে।

হিরো আলম অভিযোগ করেন, ভোট গ্রহণের পর নন্দীগ্রাম উপজেলা প্রশাসনে স্থাপিত নির্বাচন কমিশনের অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে যখন ফলাফল ঘোষণা চলছিল, তখন ৪৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ১ থেকে ৩৯টি কেন্দ্রের ফলাফল কেন্দ্রভিত্তিক ঘোষণা করা হয়। এরপর ফলাফল ঘোষণায় বিরতি দেওয়া হয়। কিছু সময় পর ১০ কেন্দ্রের ফল কেন্দ্রভিত্তিক ঘোষণা না করেই জাসদের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনকে হঠাৎ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের কাছে মাত্র ৮শ ৩৪ ভোটের ব্যবধানে হেরে গেছেন হিরো আলম। বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, কাহালু ও নন্দীগ্রাম উপজেলার মোট ১১২টি কেন্দ্রে মোট বৈধ ভোট পড়েছে ৭৮ হাজার ৫শ ২৪টি। এর মধ্যে ২০ হাজার ৪শ ৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিরো আলম পেয়েছেন ১৯ হাজার ৫শ ৭১ ভোট।

প্রতিনিধি/এইচই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর