শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

'বাঁশের মই বেয়ে উঠতে হয় কোটি টাকার সেতুতে'

আহমাদ সোহান সিরাজী
প্রকাশিত: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:৪৫ এএম

শেয়ার করুন:

'বাঁশের মই বেয়ে উঠতে হয় কোটি টাকার সেতুতে'
ছবি : ঢাকা মেইল

প্রায় তিন বছর আগে সেতু নির্মাণ হয়েছে। অথচ দুই পাশের সংযোগ সড়ক না থাকায় ঢাকার ধামরাই উপজেলায় সোয়া চার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সেতু কোনো কাজেই আসছে না। দুই পারের লোকজন এখন ২৫ ফুট উঁচু বাঁশের মই লাগিয়ে সেতুটি পারাপার হচ্ছে। 

প্রতিদিন সেতু হয়ে কয়েক হাজার লোকের চলাচল। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগে পোহাতে হচ্ছে উভয় পারের দশ গ্রামের বাসিন্দাদের।


বিজ্ঞাপন


সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার সুতিপাড়া ইউনিয়নের নওগাঁ এলাকার গাজীখালি নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। নওগাঁও, বাথুলী, বালিথা, ভাটারখোলা, বারপাইকা, কেষ্টিসহ ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ এই সেতুটি ব্যবহার করে। এখানে রয়েছে ৫০ নম্বর নওগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আশরাফ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হাট বাজার। তাই শতাধিক শিক্ষার্থীসহ প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে হাজারো মানুষ। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যখন সেতু ছিল না, তখন দুই পারের মানুষ খেয়া নৌকা দিয়ে নদী পার হতেন নৌকায় মালপত্রসহ কৃষিপণ্য বহন করা যেত। সেতু হওয়ার পর নৌকা চলাচল বন্ধ হয়েছে। দুর্ভোগ লাঘবে এখানে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এখন উল্টো বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। 

সংযোগ সড়ক না থাকায় এটি কোনো কাজে আসছে না। তাই বাধ্য হয়ে অনেকে মালামাল পরিবহনের জন্য কয়েক মাইল পথ ঘুরে যাতায়াত করছেন।

savar


বিজ্ঞাপন


এ বিষয়ে আশরাফ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কিয়াম উদ্দিন ঢাকা মেইলকে বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানসহ আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শত শত শিক্ষার্থী ও বয়স্কদের কষ্ট করে ঝুঁকি নিয়ে মই বেয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হচ্ছে। এরই মধ্যে বাঁশের মই বেয়ে সেতুতে উঠতে গিয়ে বেশ কয়েক জন শিক্ষার্থী আহতও হয়েছে। তাই অভিভাবকরাও তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন।

উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বৃহত্তর ঢাকা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (৩) এর আওতায় গাজীখালি নদীর ওপর ৪৫ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয়। নির্মাণের সময় নির্ধারণ করা হয় ১ বছর। এতে ব্যয় ধরা হয় ৪ কোটি ২১ লাখ ৫৪ হাজার ২শ ৭১ টাকা। সেতুর সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য ৬৫৯ মিটার। 

সেতুর নির্মাণ শেষ হলেও সংযোগ সড়কের কাজ এখনও শেষ হয়নি। 

সুতিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এ কে এম সফিউজ্জামান স্বপন ঢাকা মেইলকে বলেন, তিন বছর আগে সেতু নির্মাণ শেষ হলেও এখনও সংযোগ সড়ক করা হয়নি। এ ব্যাপারে তারা ঠিকাদারকে কয়েকবার তাগিদ দিয়েছেন। কিন্তু কোনো ফল না পেয়ে বাধ্য হয়েই এলাকাবাসী নিজেদের উদ্যোগে চাঁদা তুলে দুটি মই বসিয়ে সেতু পারাপারের ব্যবস্থা করেছেন।

প্রতিনিধি/এইচই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর