শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

তড়িঘড়ি করে চালু হলো হাসপাতালের আংশিক কার্যক্রম 

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৩:৫৬ পিএম

শেয়ার করুন:

তড়িঘড়ি করে চালু হলো হাসপাতালের আংশিক কার্যক্রম 
ছবি : ঢাকা মেইল

হস্তান্তরের সাড়ে তিন বছর পর মাদারীপুরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের আংশিক কার্যক্রম চালু হয়েছে। এতে জেলাবাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরলেও জনস্বার্থে দ্রুত পূর্ণাঙ্গভাবে হাসপাতালটির চালুর দাবি জানিয়েছেন জেলার নাগরিক ও সচেতন মহল। এদিকে জনবল সংকটের কারণে পূর্ণাঙ্গ চালুতে ধীরগতি হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। 

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে ২৫০ শয্যার মধ্যে মাত্র ৫০ শয্যা চালুর উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শাজাহান খান।


বিজ্ঞাপন


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাদারীপুর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দারবালী মৌজায় দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭ তলা ভবন বিশিষ্ট একশ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয় মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতাল।

২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর গণপূর্ত অধিদফতর স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে হাসপাতালটি। এতে তিন কোটি টাকা মূল্যের সিটি স্ক্যান মেশিন, ডিজিটাল এক্সরে, আল্ট্রাসনোগ্রাম, ১০টি কার্ডিয়াক মনিটর, আধুনিক জেনারেটরসহ কয়েক কোটি টাকার যন্ত্রপাতি। এসব থাকার পরেও হাসপাতালটি চালু না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল জেলার সচেতন মহল ও স্বেচ্ছাসেবীরা। 

এই নিয়ে গত বছরের ১৪ নভেম্বর মাদারীপুর সদর হাসপাতালের বর্ধিত ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল অনতিবিলম্বে চালু করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়, মহাসচিব (ডিজিএইচএস), মাদারীপুর স্বাস্থ্য বিভাগ, মাদারীপুর গণপূর্ত বিভাগ, সিভিল সার্জন, মাদারীপুর সদর হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটি, জেলা প্রশাসক এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর লিগ্যাল নোটিশ পাঠায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল আশিক (তারেক শরীফ)। এ বিষয়ে গত ১৬ জানুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও মোহাম্মদ আলী এর দ্বৈত বেঞ্চ মাদারীপুর সদর হাসপাতালের বর্ধিত ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল চালু না হওয়ার কারন জানতে রুল জারি করে। পাশাপাশি হাসপাতালের কার্যক্রম কেন চালু করা হচ্ছে না তার প্রতিবেদন আগামী ২ মাসের মধ্যে আদালতে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরে দাখিল করা দরখাস্তটি ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি  করার নির্দেশ দেওয়া হয়। উচ্চ আদালতের প্রাপ্ত চিঠির পর তড়িঘড়ি করে হাসপাতালটির নতুন ভবনের আংশিক কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গ চালু করা গেলে জেলার সাড়ে ১৩ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় আমূল পরিবর্তন আসলে বলে প্রত্যাশা করছে জেলাবাসী।

শহরের বাদামতলা এলাকার বাসিন্দা সায়ান মাহমুদ সৈকত বলেন, ২৫০ শয্যার হাসপাতালটি এতদিন চালু না হওয়ায় আমাদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রায়ই ফরিদপুর আর ঢাকা যেতে হতো। আজ হাসপাতালটির আংশিক চালু করা হয়েছে, আমরা চাই দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম চালু করা হোক। তাহলে আমাদের জেলাবাসী দীর্ঘদিনের চিকিৎসার ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে।


বিজ্ঞাপন


ডিসি ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা মিঠুন বিশ্বাস বলেন, আমাদের জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের আশার আলো সদর হাসপাতালের ২৫০ শয্যা চালু। আজ আংশিক চালু হলেও কিছুটা স্বস্তি পেলাম। তবে দ্রুত হাসপাতালের বাকি অংশ চালু করার দাবি জানাই।

মাদারীপুর সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি ইয়াকুব খান শিশির বলেন, জনবল সংকট থাকায় প্রশাসন আমাদের সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য মাত্র ৫০ শয্যা চালু করেছে। এই ৫০ শয্যার সুফলের পাশাপাশি দ্রুত পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে চালুর দাবি জানাই। তাহলেই জেলাবাসী ২৫০ শয্যার প্রকৃত সুফল ভোগ করবে।

মাদারীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুনির আহমদ খান বলেন, জেলাবাসীর স্বাস্থ্যসেবায় ৩ কোটি টাকার সিটি স্ক্যান মেশিন, ডিজিটাল এক্সরে, আল্ট্রাসনোগ্রাম, ১০টি কার্ডিয়াক মনিটরসহ কয়েক কোটি টাকার যন্ত্রপাতি আনা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য লিফটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সবকিছুর ব্যবহারে পর্যায়ক্রমে পুরো ২৫০ শয্যার হাসপাতালটি চালু করা হবে।

এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য শাজাহান খান এমপি বলেন, জনবল সংকটের কারণেই এতদিন হাসপাতালটি চালু করা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে জাতীয় সংসদেও আলোচনা করা হয়েছে। আজ ২৫০ শয্যার হাসপাতালটির চালুর অংশ হিসেবে ৫০ শয্যার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। ধাপে ধাপে জনবল নিয়োগের মাধ্যমে হাসপাতালে পুরো কার্যক্রম চালু করা হবে।

প্রতিনিধি/এইচই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর