বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

বিভাগের বড় ভাইকে চিনতে না পারায় থাপ্পড় খেলেন ছোট ভাই

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:২৬ পিএম

শেয়ার করুন:

বিভাগের বড় ভাইকে চিনতে না পারায় থাপ্পড় খেলেন ছোট ভাই
ছবি : সংগৃহীত

বিভাগের বড় ভাইকে চিনতে না পারায় থাপ্পড় খেলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মাহির শাহরিয়ার নামের এক শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) এই ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী র্যাগিংয়ের প্রতিকার ও নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন।

এর আগে, রোববার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে এই ঘটনা ঘটে।


বিজ্ঞাপন


ভুক্তভোগী মাহির শাহরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় লোক প্রশাসন বিভাগের সদ্য ভর্তি হওয়া একজন শিক্ষার্থী। তার বাসা রাজশাহী শহরের মোন্নাফের মোড়ে। তার বাবা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বরেন্দ্র মিউজিয়মের একজন সেকশন অফিসার।

এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী শিশির আহমেদ শিহাব হলেন লোক প্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাসা কুষ্টিয়া জেলায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একজন কর্মী। বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুশফিক আহমেদ তন্ময়ের অনুসারী বলে জানা গেছে। 

এর আগেও ভর্তি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিভিন্ন গণমাধ্যম শিশিরের নাম উঠে আসে।

লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী উল্লেখ করেন, গত রোববার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার সময় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারের হেটে যাওয়ার সময় আমার বিভাগের ইমিডিয়েট বড় ভাই মো. শিশির আহমেদ শিহাব ও অজ্ঞাত ৩ জনের দ্বারা র্যাগিয়ের শিকার হই। 


বিজ্ঞাপন


আমি শহীদ মিনারের সামনে দিয়ে হেঁটে যাবার সময় ৪জন আমাকে ডাক দেয় এবং শিহাব ভাই আমাকে শহীদ মিনারের মাঠে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে যাবার পরেই তিনি আমাকে প্রশ্ন করেন, ‘এই তুই আমাদের চিনিস?’ হঠাৎ এমন প্রশ্ন শুনে আমি ঘাবড়ে যাই এবং তাদের চিনি না বলে জানাই। তখন তিনি আমার বিভাগের সিনিয়র বড় ভাই বলেই আমার গালে কয়েকটি থাপ্পড় মারেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। 

আমার বাসা রাজশাহী ও বাবা রাবিতে চাকরি করেন শুনেই আবারও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং স্থানীয় লোক ও রাবির শিক্ষক- কর্মকর্তাদের গালাগালি করতে থাকেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘এখন যদি তোকে হলে তুলে নিয়ে গিয়ে র্যাগ দেই। তাহলে তোর কোন বাপই তোকে বাঁচাতে পারবেনা’। পরে রাতে ও পরবর্তীতে আমার মোবাইলে কল ও মেসেজ দিয়ে আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকেন যাতে র্যাগিংয়ের বিষয়টি কাউকে না বলি।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিশিরের ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে লোক প্রশাসন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নূরুল মোমেন বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এ বিষয়ে আমাকে এখনও লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তবে আমি শুনেছি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে র্যাগিং দেওয়া নিয়ে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে, তবুও কোনো শিক্ষার্থী সেই কাজের সঙ্গে জড়িত থাকলে আমরা বিভাগ থেকে অবশ্যই প্রশাসনের কাছে শাস্তির জন্য সুপারিশ করবো। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর বিভাগের সকল শিক্ষকদের সাথে কথা বলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিবো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগিং মুক্ত যদি কোনো শিক্ষার্থী র্যাগিংয়ের সাথে জড়িত থাকে সেটা অবশ্যই অন্যায়। আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং বিভাগের সভাপতিকে জানাতে বলেছি। আমরা ভুক্তভোগীর বিভাগের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নিবো বলে জানান তিনি।

প্রতিনিধি/এইচই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর