শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

সিলেটে তিন বছর পর হরুজুরী বিলে পলো বাওয়া উৎসব

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯:৩৬ পিএম

শেয়ার করুন:

সিলেটে তিন বছর পর হরুজুরী বিলে পলো বাওয়া উৎসব

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার করগ্রাম ও চাল্লাইন গ্রাম। এ দুই গ্রামের পাশে হরুজুরী বিল। প্রতিবছর মাঘ মাসে এই বিলে মাছ ধরার উৎসব শুরু হয়। নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ দল বেঁধে বিলে মাছ ধরতে নামেন। এই উৎসব উপভোগ করতে বিলের পাড়ে ভিড় করেন শত শত মানুষ।

শনিবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল আটটা থেকে হরুজুরী বিলে দুই গ্রামের নানা বয়সের মানুষ অংশ নেন। বাঁশের তৈরি পলোর পাশাপাশি হাতাজাল, উড়ালজাল, লাঠিজালসহ মাছ ধরার নানা উপকরণ নিয়ে বিলে নেমেছিলেন তাঁরা।


বিজ্ঞাপন


স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, প্রতিবছর মাঘ মাসের প্রথম সপ্তাহে হরুজুরী বিলে পলো বাওয়া উৎসবের আয়োজন করা হয়। যদিও করোনা পরিস্থিতির কারণে তিন বছর ধরে ওই বিলে পলো দিয়ে মাছ শিকার বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় তিন বছর পর আজ আবার এই বিলে মাছ ধরার জন্য মানুষের ঢল নামে। পলো দিয়ে মাছ ধরার বিষয়টি স্থানীয়ভাবে পলো বাওয়া উৎসব হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

পলো বাওয়া উৎসবের আগে স্থানীয় বাসিন্দারা এক বৈঠকের মধ্য দিয়ে পলো বাওয়া উৎসবের দিন নির্ধারণ করেন। নির্ধারিত দিনে দুই গ্রামের সহস্রাধিক বাসিন্দা পলোসহ মাছ ধরার নানা উপকরণ নিয়ে বিলে নামেন। বিলে এবার প্রচুর পরিমাণে দেশি মাছ শিকার করেছেন উৎসবে অংশ নেওয়া বাসিন্দারা। এর মধ্যে বোয়াল, শোল, রুই, কাতলা, মৃগেল, কার্ফ্যু, মাগুরসহ নানা জাতের মাছ ধরা পড়ে।

হরুজুরী বিলের পাড়ে মাছ ধরার এই উৎসব দেখতে এসেছিলেন অনেক মানুষ। তাঁদের মধ্যে কচাল্লাই গ্রামের আমিনুর রহমান (৭৫) বলেন, প্রায় দেড় শ বছর ধরে বিলে পলো দিয়ে উৎসবের আমেজে মাছ ধরা হচ্ছে। এ উৎসব কেন্দ্র করে প্রবাসীরা বাড়িতে আসেন। আবার অনেকের পরিবারের সদস্যরাও দাওয়াত দিয়ে বাড়িতে মেহমান নিয়ে আসেন।

পলো দিয়ে মাছ শিকারে অংশ নেওয়া করগ্রামের মোশাহিদ আলী প্রায় দেড় কেজি ওজনের বোয়াল মাছ ধরেছেন। তিনি বলেন, ‘নিজের হাতে ধরা মাছ পরিবারের সদস্যদের খাওয়াতে পারব, এটি ভেবেই খুব ভালো লাগছে।’ প্রতিবছর তিনি পলো নিয়ে মাছ শিকারে অংশ নেন।


বিজ্ঞাপন


চাল্লাইন গ্রামের জয়নাল আবেদীন বলেন, পলো বাওয়া উৎসবের সময় ওই দুই গ্রামের প্রবাসীরা দেশে আসেন। তাঁরা ছোটবেলায় বিলে মাছ ধরে গেছেন। এখন বিদেশে থাকলেও সেই ছোটবেলার স্মৃতি মনে করে বাড়িতে ফিরে আসেন।

কবির আহমদ (৪৫) নামের আরেকজন বলেন, যাঁরা বিলে নেমেছেন, তাঁরা মাছ ধরেই বাড়ি ফেরেন। করোনার কারণে তিন বছর ধরে বন্ধ থাকা উৎসব এবার পুরোদমে শুরু হয়েছে। ভবিষ্যতেও এমন উৎসব অব্যাহত থাকবে।

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর