আট বছরের ছোট্ট মরিয়ম। অভাবের তাড়নায় মেয়েকে এতিমখানায় দেন মা। রান্না করতে গিয়ে সেখানেই আগুনে দগ্ধ হয় শিশুটি। শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়ে বর্তমানে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। এখন চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে পারছে না পরিবারটি।
জানা গেছে, গত ২৯ ডিসেম্বর সাতক্ষীরার তালা উপজেলার জালালপুর জেঠুয়া কওমিয়া মহিলা হাফিজিয়া এতিমখানা মাদরাসায় রান্নার সময় আগুনে দগ্ধ হয় শিশু মরিয়ম। শিশুটিকে প্রথমে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল এরপর নেওয়া হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখান থেকে গত ১৫ জানুয়ারি ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে।
বিজ্ঞাপন
শিশু মরিয়ম খুলনার পাইকগাছা থানার দরগামহল গ্রামের শেখ লিটনের মেয়ে। তবে নদী ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে লিটন এখন নিরুদ্দেশ। যোগাযোগ নেই পরিবারের কারো সঙ্গে। স্ত্রী মমতাজ বেগম এক ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন হরিঢালী ইউনিয়নের রহিমপুর গ্রামে সরকারি গুচ্ছগ্রামে।

শিশুটির মা মমতাজ বেগম জানান, নয় মাস আগে বড় মেয়ে মরিয়মকে জেঠুয়ার এতিমখানায় দিয়েছিলাম। সেখানে থেকে লেখাপড়া শিখতো। সেখানে রান্না করার কোনো বাবুচ্চি নেই। একটা মেয়ে রান্না করছিল সে গোসলে যাওয়ার আগে মরিয়মকে রান্না ঘরে রান্না দেখার জন্য রেখে যায়। সেখানে জামাকাপড়ে আগুন ধরে যায় মরিয়মের।
তিনি বলেন, আমি দিনমজুরী করে জীবিকা নির্বাহ করি। আমার কোনো টাকা নেই। দৈনিক ৭-৮ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। বিভিন্ন মানুষদের কাছ থেকে সহায়তা নিয়ে মরিয়মের চিকিৎসা করছি। আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।
বিজ্ঞাপন
মরিয়ম ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের চারতলায় শিশু ওয়ার্ডে ১৯ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে গলায় অপারেশন হয়েছে মেয়েটির। সুস্থ হতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সেখানকার চিকিৎসক।
মরিয়মের মামা শফিকুল ইসলাম জানান, হাসপাতাল থেকে কিছু ওষুধপত্র দিচ্ছে। বাইরে থেকে দৈনিক অ্যালবোটিন নামের একটি ইনজেকশন কিনতে হচ্ছে তার দাম ৩৫শ টাকা। এছাড়া আনুসঙ্গিক আরও কিছু ওষুধ কিনতে হচ্ছে।
জালালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মফিদুল হক লিটু বলেন, রান্না করতে গিয়ে আগুনে পুড়ে যায় মেয়েটি। পরিবারটি খুবই গরীব। সবার সহযোগিতায় তার চিকিৎসা চলছে। আমি নিজেও সহায়তা করেছি।
মরিয়মের চিকিৎসার জন্য কেউ সহায়তা করতে চাইলে ০১৯৪২১৫৮৬৬৯ (শিশুটির মা মমতাজ বেগম)।
প্রতিনিধি/এসএস

