শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

সবুজ পাতা ভেদ করে বেরিয়ে আসছে আম চাষিদের স্বপ্ন

সুমন আলী
প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:৪৯ এএম

শেয়ার করুন:

সবুজ পাতা ভেদ করে বেরিয়ে আসছে আম চাষিদের স্বপ্ন
ছবি: ঢাকা মেইল

ফাল্গুন মাস এখনো আসেনি, শেষ হয়নি শীত। অথচ এরই মধ্যে নওগাঁর বিভিন্ন আম বাগানগুলোতে মুকুল আসতে শুরু করেছে। সবুজ পাতা ভেদ করে বেরিয়ে আসছে আম চাষিদের সোনালি স্বপ্ন। কিছু দিনের মধ্যেই আমের মুকুলের মিষ্টি গন্ধে সুবাশিত হয়ে উঠবে প্রকৃতি। এসময়টাতে মুকুলের যত্ন না নিলে আমের ভালো ফলন সম্ভব নয়। আর এ কারণেই আশায় বুক বেধে আমচাষিরা শুরু করেছেন পরিচর্যা। মুকুলে যাতে পোকার আক্রমণ না হয় ও ঝরে না পড়ে সেদিকেই নজর রাখছেন আম চাষিরা।

নওগাঁ জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আমচাষ হয়েছে। যা গতবারের চেয়ে ৫২৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ বেশি হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


চলতি মৌসুমে উপজেলা ভিত্তিক আম চাষের পরিমাণ হলো—সদর উপজেলায় ৫১০ হেক্টর, রানীনগরে ১৩০, আত্রাইয়ে ১২০ দশমিক ৫, বদলগাছীতে ৫৩০, মহাদেবপুরে ৬৩০, পত্নীতলায় ৫ হাজার ৮১৫, ধামইরহাটে ৬৭৫, সাপাহারে ৯ হাজার ২৫৫, পোরশায় ১০ হাজার ৫৫০, মান্দায় ৪০০ ও নিয়ামতপুরে ১ হাজার ৩৮৪ দশমিক ৫ হেক্টর জমিতে।

নওগাঁর বিভিন্ন আমবাগান ঘুরে দেখা গেছে, বাগানের সারি সারি গাছে সবুজ পাতার মাঝে আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। সবচেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছে বেশি মুকুল আসছে। গত এক সপ্তাহ আগে থেকেই গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। পুরোদমে মুকুল ফুটতে আরও কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে বলছেন বাগান মালিকরা। তবে যে সব গাছে মুকুল আসছে কুয়াশা আর শীতের কারণে মুকুলের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন আম চাষিরা। তাইতো তারা মুকুল ও গাছের পরিচর্যা শুরু করছেন।

সাপাহার উপজেলার চাচাহার গ্রামের আমচাষি আলামিন বলেন, ১০০ বিঘা জমি বিভিন্ন মেয়াদি লিজ নিয়ে আম বাগান করেছি। তাতে আম্রপালি, বারি ফোর, গৌড়মতি ও আশ্বিনা জাতের আম গাছ রয়েছে। এরমধ্যে কিছু আম গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। পুরোদমে মুকুল আসতে আরও মাসখানেক সময় লাগবে। তাই এসম গাছের বাড়তি যত্নের প্রয়োজন। ছোট-বড় আম বাগান পরিচর্যায় সময় ব্যয় করতে হয়। এছাড়াও বাগানের আগাছা পরিষ্কারসহ পোকা দমনে স্প্রে করা হচ্ছে কীটনাশক।

naogaon


বিজ্ঞাপন


পোরশা উপজেলার আমচাষি মেহেদী বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকে বাগানের আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। যেসব গাছে মুকুল এসছে কুয়াশা আর শীতের কারণে মুকুলের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই মুকুল আসার পর থেকেই গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছি। মুকুল রোগ বালাইয়ের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় বালায় নাশক স্প্রে করছেন।

একই উপজেলার আরেক আম চাষি ইয়াসিন আলী বলেন, তার আম বাগানের অধিকাংশ গাছেই মুকুল দেখা দিয়েছে। তবে যেসব গাছে মুকুল আসছে প্রায় নতুন গাছ। নতুন গাছ হওযায় আগেভাগেই মুকুল আসতে শুরু করেছে। মুকুলের মাথাগুলোকে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য স্প্রে করা হচ্ছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে চলতি মাসের শেষের দিক থেকে শুরু করে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিক পর্যন্ত সব গাছে মুকুল দেখা যাবে বলে মনে করছেন তিনি।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার এ,কে,এম মঞ্জুর-এ মাওলা বলেন, আবহাওয়াগত ও জাতগত কারণেই কিছু কাছে আগাম আমের এই মুকুল আসতে শুরু করেছে। এসব গাছে ফুল ফোটার আগে কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। এতে করে কুয়াশা বা অন্যান্য পোকার যে আক্রমণ কম হবে। তবে কোনো ক্রমেই গাছে সেচ দেওয়া যাবে না। এতে করে নতুন করে পাতা জন্মাবে। এই জন্য চাষিদেরর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, এখনও সব গাছে মুকুল আসেনি। ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে পুরোদমে গাছে মুকুল আসবে।  তখন শীত কেটে যাবে। তখন আমের মুকুল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না।

টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর