বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

নামেই মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, নেই শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২১ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:৩৫ এএম

শেয়ার করুন:

নামেই মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, নেই শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ

নাম মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। অথচ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নেই কোনো শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, নেই অ্যানেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ। চালকের পদ না থাকায় ১০ বছর ধরে পড়ে রয়েছে অ্যাম্বুলেন্স। আছেন একজন মেডিকেল কর্মকর্তা, যিনি আরও দুটি পদে রয়েছেন।

এভাবেই নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের পৌর পরিষদের সামনে অবস্থিত ১০ শয্যার হাসপাতালটিতে কোনোরকমে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে কার্যক্রম। ফলে সেবাপ্রত্যাশীদের বাধ্য হয়ে বাড়তি টাকা খরচ করে যেতে হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে।


বিজ্ঞাপন


কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, ১৯৫৮ সালে শহরের পৌর পরিষদের সামনে প্রায় ৪০ শতক জমির ওপর গর্ভবতী মা ও শিশুদের চিকিৎসাসেবার ১০ শয্যা বিশিষ্ট কেন্দ্রটি গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে একজন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র পরিদর্শিকা, নার্স ও সুইপার পদ শূন্য। এখানকার কর্মরত মেডিকেল কর্মকর্তা একই সাথে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও ক্লিনিক্যাল কন্টাক সেশনের নীলফামারীর সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। এখানে সপ্তাহে তিন দিন রোগী দেখেন তিনি। দুই মাস পর অবসরে যাবেন তিনিও।

সূত্রটি আরও জানায়,  ১০ শয্যার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটি দীর্ঘ ৬৫ বছর পেরিয়েছে। ২০২৩ সালেও সেই কেন্দ্রে বাড়েনি একটি শয্যাও। অথচ জনসংখ্যা বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। গড়ে প্রতিদিন কেন্দ্রটিতে সেবা নিতে আসেন অর্ধ শতাধিক মানুষ। বিনা পয়সায় সন্তান প্রসব, লাইগেশনসহ নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিতে ১৬ ধরনের সেবা পাওয়ার কথা থাকলেও মেলে না তার কিছুই। চালকের পদ না থাকায় ১০ বছর ধরে অ্যাম্বুলেন্সের চাকা ঘোরেনি। নেই রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষাগার। একটি আল্ট্রাসনোগ্রাফি মেশিন থাকলেও তা ব্যবহারে সক্ষম চিকিৎসক নেই। বাধ্য হয়েই ভরসা করতে হয় বেসরকারি ক্লিনিকের ওপর।

Nilfamari

সরেজমিনে দেখা গেছে, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটির কার্যক্রম চলছে জরাজীর্ণ একটি ভবনে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় ক্লিনিকের সামনে ও ছাদে আগাছা জন্মেছে। ভবনে দেওয়াল ও ছাদে ছত্রাকের ছড়াছড়ি। চিকিৎসা কর্মকর্তার কক্ষ তালাবদ্ধ। গল্পগুজব করে সময় কাটাচ্ছেন অফিস স্টাফরা।


বিজ্ঞাপন


সালেহা পারভীন নামে এক গর্ভবতী ঢাকা মেইলকে বলেন, এখানে ডাক্তার দেখাতে এসে শুনি উনি নীলফামারীতে অফিস করছেন। এভাবে পর পর দুদিন এসে ফিরে যাচ্ছি।

শহরের গোলাগাট এলাকার বাসিন্দা বিলকিস বানু ঢাকা মেইলকে বলেন, আমার দুই মাসের মেয়ে তিন দিন ধরে অসুস্থ। আমার স্বামী দিনমজুর। বিনামূল্যে চিকিৎসার কথা শুনে এখানে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু এসে শুনি এখানে কোনো শিশু ডাক্তার নেই।

এ বিষয়ে কেন্দ্রের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, এখানকার পাশাপাশি আরও দুটি পদে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে আমাকে। তাই প্রতিদিন রোগী দেখা সম্ভব হয় না।

তিনি আরও বলেন, ২০০১ সালে শয্যা সংখ্যা ১০টি বাড়ানোর প্রস্তাবনা দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। জনবল, অকাঠামো ও নানা ঘাটতি স্বত্বেও যথা সম্ভব সেবা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর