মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

শৈত্যপ্রবাহে নাকাল মৌলভীবাজারের জনজীবন

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:২২ পিএম

শেয়ার করুন:

শৈত্যপ্রবাহে নাকাল মৌলভীবাজারের জনজীবন

মৌলভীবাজারে বেশ কয়েকদিন ধরে শৈত্যপ্রবাহ বইছে। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকছে। দুপুরে উত্তাপহীন সূর্যের দেখা মিললেও বিকেলের আগেই তা আবার ঢেকে যাচ্ছে কুয়াশার চাদরে। সঙ্গে হিমেল হাওয়া। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ার বিরূপ আবহাওয়ায় নাকাল জনজীবন।

বুধবার (১৮ জানুয়ারি) জেলার শ্রীমঙ্গলে ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে স্থানীয় আবহাওয়া দফতর।


বিজ্ঞাপন


আবহাওয়া অফিসের সহকারী কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান ঢাকা মেইলকে বলেন, তাপমাত্রা নিচে নামার কারণে মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে বাড়ছে শীতের তীব্রতা।

Moulovibazar

এদিকে শীতবস্ত্রের চাহিদা বাড়ায় ইতোমধ্যে সরকারি-বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। স্বচ্ছল মানুষ শরীরে মোটা কাপড় জড়িয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করলেও নিম্নবিত্ত, অস্বচ্ছল ও খেটে খাওয়া মানুষরা পড়েছেন বিপাকে। হাড় কাঁপানো তীব্র শীতে কাঁপছেন তারা। শীতের কারণে সময়মতো কাজে যোগ দিতে পারছেন না শ্রমজীবী মানুষ। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন বোরো চাষি, ছিন্নমূল ও দিনমজুররা।

মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলার কাউয়াদীঘি হাওর বেষ্টিত এলাকার খেটে খাওয়া ও নিম্নআয়ের অধিকাংশ মানুষের বসবাস। শীত এলেই তাদের কষ্ট বাড়ে। শীতের তীব্রতায় কাহিল হয়ে পড়েছেন তারা। ঘন কুয়াশার কারণে সময়মতো কাজে যেতে পারছেন না তারা।


বিজ্ঞাপন


সদর উপজেলার হাওর এলাকার বানেশ্রী গ্রামের কৃষক মুকুন্দ দাশ ঢাকা মেইলকে বলেন, বাইরে প্রচণ্ড ঠান্ডা, তবুও কাজের জন্য বের হয়েছেন তারা। বের না হলে তাদের সংসার চলবে না।

রাজনগর উপজেলার কাউয়াদীঘি এলাকার কৃষক আব্দুল রেজা ঢাকা মেইলকে বলেন, হাড়কাঁপানো শীতে ক্ষেত-খামারের কাজে বড় কষ্ট হচ্ছে। না গেলে খাব কি? যত কষ্টই হোক ক্ষেতে তো যেতে হবে।

Moulovibazar

পৌর শহরে কথা হয় দিনমজুর মইন আলীর সঙ্গে। তিনি ঢাকা মেইলের প্রতিবেদককে বলেন, প্রতিদিন সকালে কাজ পাব এই আশায় বের হই, কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে বেশ ঠান্ডা পড়ায় কাজও পাই না প্রতিদিন।

এদিকে জেলা সিভিল‌ সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ জন, এআরআইয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ জন এবং অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ জন। গত এক সপ্তাহে শীতকালীন রোগে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৭৯৫ জন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ে হাসপাতালে। সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় শিশু ও বয়স্করা। অন্যান্য সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ রোগীকে প্রতিদিন আউটডোর এবং ইনডোরে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

Moulovibazar

মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বিশ্বজিৎ দেব ঢাকা মেইলকে বলেন, শীতের প্রভাবে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রার্দূভাব বাড়ার সাথে রোগীর চাপ বাড়ছে।

এদিকে জেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে জেলার ৬৭ ইউনিয়ন ও পাঁচ পৌরসভায় ৩৫ হাজার ২৮০টি কম্বল পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কতৃপক্ষ বরাবর আরও কম্বলের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো পেলে বিতরণ করা হবে বলে জানা গেছে।

জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, ‌তীব্র শীতে অসহায় মানুষের মাঝে উষ্ণতা ছড়িয়ে দিতে জেলা প্রশাসনের কম্বল বিতরণ অব্যাহত থাকবে।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর