বহু প্রতীক্ষার পর রাজশাহীতে চালু হলো স্টার সিনেপ্লেক্স। দর্শকের চাহিদা পূরণে আধুনিকতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে যাত্রা শুরু করলো এ সিনেপ্লেক্স।
শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে রাজশাহী নগরীর আই বাঁধ সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্কে নির্মিত সিনেপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ এমপি।
বিজ্ঞাপন
জানা যায়, রাজশাহী নগরীর আই বাঁধ সংলগ্ন নব নির্মিত হাইটেক পার্কের একটি অংশে চালু হয়েছে এই সিনেপ্লেক্স। সোয়া পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৭২ আসন বিশিষ্ট এই সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়। গত ১২ ডিসেম্বর ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করেন। ঢাকার বিখ্যাত স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে এটি পরিচালিত হবে।
প্রতিদিন দুপুর ও বিকেল দুই শিফটে টুডি ও থ্রিডি সিস্টেমে সিনেমা দেখার সুযোগ থাকছে এই সিনেপ্লেক্সে। তবে প্রতিটি শিফটে টিকিটের দামে আনা হয়েছে ভিন্নতা। সকাল শিফটে টুডি টিকিটের দাম ২৫০ টাকা ও থ্রিডি টিকিটের দাম ৩০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর বিকেল শিফটে টুডি টিকিটের দাম ৩০০ টাকা ও থ্রিডি টিকিটের দাম ৩৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে স্টার সিনেপ্লেক্সের চেয়ারম্যান মাহবুব রহমান রুহেল গণমাধ্যমকে বলেন, রাজশাহী দেশের ঐতিহ্যবাহী একটি শহর। এখানে প্রচুর সিনেমাপ্রেমী দর্শক রয়েছেন যারা স্টার সিনেপ্লেক্সের মত একটি মাল্টিপ্লেক্স প্রত্যাশা করেন। অনেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে আমাদের কাছে দাবি জানিয়েছেন। সেই দাবি পূরণের কাজটি করতে পেরে আমি আনন্দিত।
আমরা চেষ্টা করছি স্টার সিনেপ্লেক্সকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে, যাতে সারাদেশের মানুষ বিশ্বমানের সিনেমা হলে সিনেমা দেখার সুযোগ পান। বরাবরের মতো নান্দনিক পরিবেশ, সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত সাউন্ড সিস্টেম, জায়ান্ট স্ক্রিনসহ বিশ্বমানের সিনেমা হলের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা নিয়ে হলগুলো নির্মিত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, ২০০৪ সালের ৮ অক্টোবর রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে যাত্রা শুরু করে দেশের প্রথম মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হল ‘স্টার সিনেপ্লেক্স’। বর্তমানে ঢাকায় ধানমন্ডির সীমান্ত সম্ভার (সাবেক রাইফেলস স্কয়ার), মহাখালীর এসকেএস (সেনা কল্যাণ সংস্থা) টাওয়ার, মিরপুরের সনি স্কয়ার এবং বিজয় সরনির সামরিক জাদুঘরসহ ৫টি শাখা রয়েছে এর। এর আগে ঢাকার বাহিরে চট্টগ্রামেও সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রসঙ্গত, শিক্ষা নগরী খ্যাত রাজশাহীতে আশির দশক থেকেই ছিল সাতটি সিনেমা হল। দর্শকের চাহিদা পূরণে রাজশাহীতে বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এসব সিনেমা হল। তারই অংশ হিসেবে সিনেমাপ্রেমীদের বাড়তি ভিড় থাকতো হলগুলোতে। নগরীর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মোড়ের পরিচয় এখনও রয়েছে হলগুলোর নামেই।
চলচ্চিত্রের বেহাল দশার কারণে ২০১০ সাল থেকে একে একে বন্ধ হতে থাকে এসব সিনেমা হল। সবশেষ ২০১৮ সালের অক্টোবরে বন্ধ হয়ে যায় রাজশাহীর ‘উপহার’ সিনেমা হল। সেই থেকে কার্যত সিনেমা হলশূন্য ছিল রাজশাহী। পরিবার-পরিজন কিংবা প্রিয় মানুষের পাশে বসে সিনেমা দেখা থেকে বঞ্চিত হতে থাকেন রাজশাহীবাসী। তবে দীর্ঘ চার বছরেরও অধিক সময় পর অপেক্ষার অবসান ঘটছে নগরবাসীর।
প্রতিনিধি/ এজে

