দুই বস্তা চিনির সঙ্গে মাত্র ১শ গ্রাম সরিষা ফুলের মধু ও অন্যান্য কেমিক্যাল মিশিয়ে বানানো হয় ৪শ কেজি ভেজাল মধু। পরে এসব মধু কুরিয়ার যোগে খাটি মধুর নামে পাঠানো হয় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। আর সাধারণ মানুষ নিজেদের অজান্তেই খাটি মধু হিসেবে ক্রয় করেন তা। এভাবেই বছরের পর বছর মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন কামাল হোসেন।
কামাল হোসেনের এ প্রতারণার খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার সিংগা গ্রামে অভিযান চালায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
বিজ্ঞাপন
এসময় কামাল হোসেনকে হাতে নাতে আটক করে ৩লাখ টাকা জরিমানা ও ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সেই সাথে জব্দকৃত ২০ মণেরও বেশি ভেজাল মধু কেরোসিন ঢেলে জ্বালিয়ে বিনষ্ট করা হয়।
কামাল হোসেন শ্যামনগর উপজেলার দক্ষিণ কদমতলা গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে। তিনি কলারোয়ার সিংগা এলাকায় ভেজাল মধু বানাতেন।
জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান জানান, কামাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে কলারোয়ার সিংগা গ্রামে বাসা ভাড়া নিয়ে ভেজাল মধু বানাতেন। চিনি ও মধুর সঙ্গে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে তিনি ভেজাল মধু বানাতেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর বৃহস্পতিবার দুপুরে সিংগা এলাকায় অভিযান চালিয়ে কামাল হোসেনকে হাতেনাতে আটক করে। তার কাছ থেকে জব্দ করা হয় ২০ মণেরও বেশি ভেজাল মধু।
পরে তাকে কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুলী বিশ্বাসের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত ২০১৫ সালের খাদ্য আইনের ২৫ ধারায় তাকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করেন ও ১ বছরের বিনাশ্রম জেল দেন।
বিজ্ঞাপন
এ সময় ওই ভাড়া বাড়ি থেকে কৃত্রিম মধু তৈরির সরঞ্জামসহ জব্দকৃত ভেজাল মধু কেরোসিন ঢেলে জালিয়ে বিনষ্ট করা হয়।
মোখলেছুর রহমান আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কামাল হোসেন স্বীকার করেছেন, অল্প পরিমাণ সরিষার মধুতে বিশাল পরিমাণ চিনি ও অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরে খুবই লাভজনক এ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। তিনি এসব ভেজাল মধু সাতক্ষীরা, ঢাকা ও চট্রগ্রামে জননী কুরিয়ার সার্ভিসে পাঠাতেন।
প্রতিনিধি/এইচই

