দীর্ঘদিন পর সাদিযার প্রবাসী বড় ভাই দেশে আসছেন। আগত প্রবাসীর মা-বাবা, ভাই, বোন, ভগ্নিপতিসহ পরিবারের কারও আনন্দের সীমা নেই। দেশে থাকা বাবা, ছোট ভাইলে সঙ্গে স্বামী সন্তানসহ মালয়েশিয়া থেকে আগত বড় ভাইকে এগিয়ে আনতে ঢাকায় যান কমলগঞ্জের সাদিয়া।
দীর্ঘদিন পর সাদিয়ার প্রবাসী বড় ভাই দেশে আসছেন। আগত প্রবাসীর মা-বাবা, ভাই, বোন, ভগ্নিপতিসহ পরিবারের কারও আনন্দের সীমা নেই। দেশে থাকা বাবা, ছোট ভাইয়ের সঙ্গে স্বামী সন্তানসহ মালয়েশিয়া থেকে আগত বড়ভাইকে এগিয়ে আনতে ঢাকায় যান কমলগঞ্জের সাদিয়া।
বিজ্ঞাপন
বিমানবন্দর থেকে বড়ভাইকে নিয়ে মহানন্দে শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) রাতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার দিকে রওনা দেন সাদিয়া।
এই আনন্দ বিষাদে রূপ নেয় রাত আনুমানিক ৩টার দিকের হবিগঞ্জের মাধবপুর শাহপুর নামক স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায়। এ ঘটনায় মারা গেলেন স্বামী, সন্তান, ছোট ভাই ও গাড়ির চালকসহ ৫ জন। এতে সাদিয়ার আনন্দযাত্রা বিষাদে পরিণত হয়।
এই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত কমলগঞ্জের একই পরিবারের তিনজন স্বামী, স্ত্রী ও সন্তান শায়িত হলেন পাশাপাশি। এছাড়াও কুলাউড়ার হাজীপুর ইউনিয়নের মাদানগর ও কমলগঞ্জের ভেরারচর গ্রামে শোকের মাতম চলছে।
নিহতদের পরিবারের সদস্যরা জানান, কুলাউড়ার হাজীপুর ইউনিয়নের মাদানগর গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে আকলিছুর রহমান রাজু বহুদিন ধরে কাজের জন্য মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছিলেন। তিনি শুক্রবার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দে অবতরণ করেন। তাকে এগিয়ে আনতে বিমানবন্দরে যান তার বাবা নূরুল ইসলাম, ছোট বোন সাদিয়া বেগম, বোন জামাই কমলগঞ্জে আব্দুস সালাম, ভাগ্নী হাবিবা, ছোট ভাই শিহাবসহ ৮ জন। একটি নোহা মাইক্রোবাসযোগে যান তারা।
বিজ্ঞাপন
বাড়িতে ফেরার পথে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার শাহপুর নামক স্থানে শুক্রবার শেষরাতে বালুবোঝাই ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে মারা যান আব্দুস সালাম (৩৭)। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান দুর্ঘটনায় নিহত সালামের স্ত্রী সাদিয়া (২৭), মেয়ে হাবিবা (৩) ও আতিকুর রহমান শিহাব (১৫)। এ ঘটনায় মারা যান গাড়ির চালক পৃথিমপাশা ইউনিয়নের আলীনগর গ্রামের সাদির মিয়া (৩০)। আহত প্রবাসী রাজু, তার বাবা নূরুল ইসলামসহ ৪ জন এখন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নিহত সালামের লাশ শনিবার বিকেলে তার গ্রামের বাড়ি কমলগঞ্জের ভেড়ারচর গ্রামে আসে। এরপর স্ত্রী সাদিয়া ও শিশু সন্তান হাবিবার লাশ কুলাউড়া থেকে কমলগঞ্জে তার বাড়িতে আসার পর এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পুরো এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে বলে জানান প্রতিবেশী জুয়েল আহমদ।
তিনি আরও জানান, শনিবার মাগরিবের নামাজের পর ভেড়ারচর গ্রামের মসজিদের পাশে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে স্বামী, স্ত্রী ও সন্তানের লাশ দাফন করা হয়েছে।
এদিকে এ দুর্ঘটনায় নিহত প্রবাসীর ভাই আতিকুর রহমান শিহাবকে কুলাউড়ার মাদানগর পারিবারিক কবরস্থানে ও গাড়ি চালক সাদির মিয়াকে তার গ্রামের বাড়ি কুলাউড়ার আলীনগর গ্রামে দাফন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রতিনিধি/একেবি

