শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ঢাকা

উদ্বোধনের ৪ বছরেও চালু হয়নি বরগুনায় ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল

অলিউল্লাহ্ ইমরান
প্রকাশিত: ২৬ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:৫২ এএম

শেয়ার করুন:

উদ্বোধনের ৪ বছরেও চালু হয়নি বরগুনায় ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল
ছবি: ঢাকা মেইল

জনবল নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতা ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ না হওয়ায় উদ্বোধনের চার বছরেও চালু হয়নি বরগুনার ২৫০ শয্যার বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল।

বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল সূত্রের তথ্যমতে, ১৯৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ৫০ শয্যার বরগুনা জেনারেল হাসপাতালটিকে ১৯৯৭ সালে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। এর প্রায় দুই যুগ পর ২০১০ সালের হাসপাতালটিকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করার ঘোষণা দেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ২০১৮ সালে নতুন ভবনটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।


বিজ্ঞাপন


জেলা চিকিৎসা বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জনবল ও চিকিৎসা সামগ্রী চেয়ে একাধিকবার চিঠি চালাচালি করেও কোনো সাড়া মিলছে না। বরং জনবল নিয়োগ নিয়ে অধিদপ্তর ও মন্ত্রনালয়ের টানাটানিতেই এ জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। আর তাই প্রায় এক তৃতীয়াংশ জনবল সংকট নিয়ে জীর্ণ ভবনে ১০০ শয্যার বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে বর্তমানে জেলার ১২ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চলছে।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত অধিপ্তরের বরগুনা কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০১৩ সালে বরগুনা গণপূর্ত বিভাগ ৩১ কোটি ৩১ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭৭ টাকা ব্যয়ে সাত তলা ভবনের নির্মাণকাজ শুরু করে। ৩০ মাসের মধ্যে ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ করে ভবন হস্তান্তরের কথা থাকলেও ৯ বছর পরে ২০২১ সালের জুন মাসে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত অধিদপ্তর বরগুনা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এই ভবন হস্তান্তর করেন। 

স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের তথ্যমতে, ২৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসক, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মোট ২৫১ পদে জনবল নিয়োগ দেওয়ার কথা রয়েছে। কিন্ত উদ্বোধনের চার বছরেও এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুই হয়নি। বরং নিয়োগ কারা দেবেন এ নিয়ে মন্ত্রনালয় ও অধিদপ্তরের মধ্যে টানাটানি চলছে। ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়ার কোনো অগ্রগতি হয়নি।

জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের আহবায়ক মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, ১০০ শয্যার হাসপাতালের দুই তৃতীয়াংশ জনবল নেই। এটা নিয়েও আমরা আন্দোলন করেছি। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের তদারকির অভাব ও ঠিকাদারের গাফেলতির কারণে ৩০ মাসের কাজ ৯ বছর শেষ করে ২৫০ শয্যার হাসপাতালের ভবন নির্মাণ হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


তিনি আরও বলেন, মন্ত্রনালয় ও অধিদপ্তর জনবল নিয়োগ নিয়ে টানাটানি করছে। স্বাস্থ্যসেবার মত মৌলিক সেবাখাতে যদি এমন অবস্থা থাকে তবে আমরা দুর্ভাগা ছাড়া কিছুই নই। এই জটিলতা নিরসন করে দ্রুত হাসপাতালটি চালু করা এখন আমাদের দাবি।

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক মো. সোহরাব উদ্দীন খান বলেন, ১০০ শয্যার হাসপাতালের জনবলকাঠামো অনুযায়ী বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ৪৩ জন চিকিৎসক থাকার কথা। কিন্তু বর্তমানে এখানে মাত্র ১১ জন কর্মরত আছেন। এরা হলেন তত্ত্বাবধায়ক, একজন আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও), হোমিও চিকিৎসক, ৪ জন চিকিৎসা কর্মকর্তা, সার্জারি ও অ্যানেসথেসিয়া, গাইনি ও অর্থোপেডিকস বিভাগের ৪ জন জুনিয়র কনসালট্যান্ট। এ নিয়ে আমরা জেলার ১২ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম একপ্রকার চালিয়ে নিচ্ছি। লোকবল নিয়োগ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম বরাদ্দ না হওয়ায় আমরা ২৫০ শয্যার ভবনে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করতে পারছি না।

বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মো. ফজলুল হক বলেন, জনবল নিয়োগ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ না করায় আমরা নতুন ভবনে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করতে পারছি না।

জনবল নিয়োগ নিয়ে জটিলতা প্রসঙ্গে সিভিল সার্জন জানান, নিয়োগ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রনালয়ের মধ্যে জটিলতা চলছে। অধিপ্তর ও মন্ত্রনালয় উভয়েই জনবল নিয়োগ দিতে চায়। মন্ত্রনালয় ও অধিদপ্তরের টানাটানির কারণে দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি হওয়ায় হাসপাতালটি আমরা চালু করতে পারছি না।

টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর