বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

গাঁজা দিয়ে শিক্ষার্থীদের ফাঁসাতে না পেরে পুলিশের মারধর!

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৮ ডিসেম্বর ২০২২, ০৯:৪৪ পিএম

শেয়ার করুন:

গাঁজা দিয়ে শিক্ষার্থীদের ফাঁসাতে না পেরে পুলিশের মারধর!

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় দুই কলেজ শিক্ষার্থীকে গাঁজা দিয়ে ফাঁসাতে না পেরে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশ ও তাদের সোর্সেদের বিরুদ্ধে।

আহত দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে গুরতর অবস্থায় নিজাম উদ্দিনকে উন্নত চিকিৎসা জন্য ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক পদ্মা নদীর পাড়ে এ ঘটনা ঘটে।

শিক্ষার্থীরা হলেন উপজেলার দড়িকান্দি গ্রামের আক্কাস আলীর ছেলে ফয়সাল আহমেদ। সে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী। আরেক জন একই উপজেলার পেঁয়াজচর গ্রামের প্রতিবন্ধী নৈমদ্দিনের ছেলে নিজাম উদ্দিন। সে দেবেন্দ্র কলেজের শিক্ষার্থী।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, হরিরামপুর থানা ওসি সৈয়দ মিজানুর ইসলামের বাসার কাজের লোক মাসুদ এবং আন্ধারমানিক গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে মামুন গাঁজা দিয়ে পুলিশের সহায়তায় দুই শিক্ষার্থীকে আটকের চেষ্টা করে। এসময় ফয়সাল আহমেদ এবং নিজাম উদ্দিন এর  প্রতিবাদ করে। এনিয়ে মাসুদ ও মামুনের সঙ্গে দুই শিক্ষার্থীর বাকবিতণ্ডা চলাকালে হরিরামপুর থানার কনষ্টেবল আব্দুল জব্বার ও  আব্দুল লতিফ ঘটনাস্থলে চলে আসে। এসময়  কনষ্টেল আব্দুল জব্বার নিজাম উদ্দিনকে লাথি কিল ঘুষি এবং বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। 

এছাড়া পুলিশের অপর সদস্য আব্দুল লতিফ ফয়সালকে মারধর করে। দুই শিক্ষার্থী নিজাম ও ফয়সালকে হাতকড়া দিয়ে থানায় নেওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় লোকজন এতে বাঁধা দিলে পুলিশ তাদের রেখে চলে যায়।


বিজ্ঞাপন


পরে স্থানীয় লোকজন আহত দুই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নিজাম উদ্দিনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক কাজী রাসেল বলেন, হরিরামপুর থেকে নিজাম উদ্দিন নামে এক রোগী মারধরের শিকার হয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভর্তি হয়েছেন। তার অবস্থা এখন আশংকা জনক নয়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত রামকৃষ্ণপুর ৯নং ওয়ার্ড সদস্য আবদুল হক বলেন, আন্ধারমানিক পদ্মাপাড়ে ওসির কাজের লোক মাসুদ এবং মামুন দুইজন ছাত্রকে মারধর করে। পরে পুলিশ সদস্য জব্বারসহ দুজন এসে নিজাম ও ফয়সাল নামে দুই ছাত্রকে মারধর করে।

প্রত্যক্ষদর্শী জয়নালের স্ত্রী বলেন, এলাকার দুই ছেলেকে গাঁজা দিয়ে পুলিশে দিতে চায় মাসুদ ও মামুন। ওই দুই ছেলে প্রতিবাদ করলে পুলিশ এসে উল্টো তাদের মারধর করে।

অভিযুক্ত কনষ্টেবল আব্দুল লতিফ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন।

হরিরামপুর থানার ওসি সৈয়দ মিজানুর রহমান বলেন, গাঁজা দিয়ে ফাঁসানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি। নিজাম ও ফয়সালের সঙ্গে মামুন নামে এক যুবকের মারমারি হয়েছে। পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছে বলে জানান।

এই ঘটনায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান ঘটনার তদন্তের জন্য হরিরামপুর থানায় যান। সেখান থেকে ফিরে আজ রাত সাড়ে ৮টার দিকে জানান, দুই কনেস্টেবলকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর