বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

নিষিদ্ধ বাধা জাল থেকে আসে শুটকি উৎপাদনের মাছ

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০২২, ০৮:৫৬ পিএম

শেয়ার করুন:

নিষিদ্ধ বাধা জাল থেকে আসে শুটকি উৎপাদনের মাছ

বরগুনা জেলার শুটকি পল্লি গুলোতে শুটকি উৎপাদন শুরু হয়েছে। তবে এ শুটকির কাঁচা মাছ আসে নিষিদ্ধ সূক্ষ্ম ফাঁসের বাধাজল অথবা বেহুন্দি জাল থেকে। এ নিষিদ্ধ জালে মারা পড়ছে স্রোতের অনুকূলে চলা সকল প্রকার ছোট বড় মাছ। বরগুনার জেলেরা বলছেন এ নিষিদ্ধ জাল বন্ধ না হলে মাছ শূন্য হয়ে পড়বে সাগর ও বরগুনার নদী গুলো। নিষিদ্ধ এসব জাল বন্ধে প্রশাসনের নেই তেমন কোন তৎপর উদ্যোগ।


বিজ্ঞাপন


বরগুনার জেলার তালতলী ও পাথর ঘাটার শুটকি পল্লী গুলোতে  গিয়ে জানা যায়, শুটকি উৎপাদনের মৌসুম শুরু হওয়ায় তালতলী ও পাথরঘাটা উপজেলার শুটকি পল্লিতে আসতে শুরু করেছে শুটকি উৎপাদনকারী ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যেই শুটকি শুকানো শুরু করেছে ৮০ জন ব্যবসায়ী। যেখানে তারা শুটকির কাঁচামাল সরবরাহের জন্য ২০০ টির ও অধিক নিষিদ্ধ সূক্ষ্ম ফাঁসের বাধা জাল বা বেহুন্দি জাল পায়রা, বলেশ্বর ও বিষ খালি নদীর মোহনায় পেতে রেখেছেন। আর এসব জালে মারা পড়ছেন ইলিশসহ সকল প্রকার পোনা মাছ। 

যদিও সূক্ষ্ম ফাঁসের এসব বাধা জাল মৎস্য সংরক্ষণ আইনে নিষিদ্ধ রয়েছে। তারপরও নিষিদ্ধ এসব জাল দিয়ে অবাধে মাছের পোনা শিকার করছেন অবৈধ জেলেরা। আর এসব নিষিদ্ধ জাল বন্ধের দায়িত্বে রয়েছেন যেসব দপ্তর গুলো তারাও অদৃশ্য কারণে চুপচাপ রয়েছেন।

তালতলী হাসার চরের শুটকি ব্যবসায়ী কামাল বলেন, ইতিমধ্যেই ২০-২৫ জন শুটকি ব্যবসায়ী তাদের শুটকি উৎপাদন শুরু করেছে। অন্যান্য শুটকি ব্যবসায়ীরাও ৭ থেকে ৮ দিনের  মধ্যে এসে পড়বে। তারা পায়রা, বলেশ্বর ও বিষখালী নদীর মোহনায় বাধা জালের মাধ্যমে কাঁচা মাছ সংগ্রহ করে রোদে শুকিয়ে শুটকি উৎপাদন করবেন। 


বিজ্ঞাপন


অবৈধ জলের বিষয় তিনি বলেন, ঝাটকা ইলিশ ধরাসহ কোন প্রকার নিষিদ্ধ জাল বন্ধ হয়নি। তাই তারা প্রতিবছর এসব নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ শিকার করে শুটকি উৎপাদন করছেন। কেউ তাদের বাধা দিচ্ছে না।

পাথরঘাটা শুটকি পল্লির ব্যবসায়ী হারুন মৃধা বলেন, আমরা এই মৌসুমে মাছ ধরে সেগুলোকে শুটকি করি। অনেকগুলো অবৈধ জেলে আছে যারা এই ছোট মাছ শিকার করে বেহেন্দী ও বাধ জাল দিয়ে। এই সব জাল যদি সরকার বন্ধ না করে তাহলে আর কয়েক বছরের মধ্যে আমাদের নদী গুলো মাছ শুন্য হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, এই সকল নিষিদ্ধ জাল বন্ধ করতে না পারলে সাগর ও নদী সকল প্রকার মাছ শূন্য হয়ে পড়বে। আমরা এই ১৫ দিন আগে ২২ দিনের অআরোধ পালন করেছি যাতে ইলিশ মাছ তাদের ডিম ছাড়তে পারে। কিন্তু এই অবৈধ বেহেন্দীও বাধ জাল গুলো বন্ধ করা গেলে, ইলিশ সম্পদ বৃদ্ধির জন্য সরকার যে নিষেধাজ্ঞাগুলো দিয়ে থাকে তার লক্ষ অর্জনে ব্যর্থ হবে।

তালতলী নিদ্রার চর  নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. রবিউল ইসলাম বলেন, নিষিদ্ধ জাল বন্ধের জন্য আমরা সাধ্যমত অভিযান পরিচালনা করছি। শতভাগ অভিযান পরিচালনা করার জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্ধ থাকে না। তাছাড় অভিযান পরিচালনার জন্য নিজস্ব ট্রলার নেই। অন্য জেলে ট্রলার ভাড়া নিয়ে অভিযান পরিচালনা করতে হয়।

বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, নিষিদ্ধ এসব সূক্ষ্ম ফাঁসের বাধা জাল বা বেহেন্দি জাল মৎস্য আইনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ জালে মারা পড়ছে পোনা ইলিশসহ স্রোতের অনুকূলে চলা সকল প্রকার মাছের পোনা।, খুব দ্রুত এসব অবৈধ নিষিদ্ধ জাল বন্ধের জন্য কোস্টগার্ড ও নৌপুলিশকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করব আমরা।

প্রতিনিধি/ এজে

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর