বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

প্রেমের অভিযোগে জুতাপেটার শিকার স্কুলছাত্র, দুই ঘণ্টা পর লাশ

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০২২, ১২:১১ পিএম

শেয়ার করুন:

প্রেমের অভিযোগে জুতাপেটার শিকার স্কুলছাত্র, দুই ঘণ্টা পর লাশ
ছবি : ঢাকা মেইল

প্রেমের সম্পর্কে জড়ানোর দায়ে জুতাপেটার শিকার হয়েছেন এক কিশোর। ইয়ামিন নামের ওই কিশোরের  বয়স ষোল বছর। সে ৮ম শ্রেণির ছাত্র। ঘটনাটি ঘটেছে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানা এলাকার চর মানিকা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ চর আইচা গ্রামে।  

সোমবার (২১ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার প্রেমের সম্পর্কের জানাজানি হওয়ায় ওই কিশোরকে জুতাপেটা ও মারধর করেছেন বলে প্রেমিকার বাবা মো. কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার দুই ঘন্টা পর বাড়ির পাশের একটি গাছে ইয়ামিনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে ওই মেয়েসহ তাদের পুরো পরিবার আত্মগোপনে রয়েছে।


বিজ্ঞাপন


দক্ষিণ আইচা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নেসার উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

ইয়ামিন ওই গ্রামের মৃত রবিউল্লাহ মাঝির ছোট ছেলে। সে স্থানীয় চর আইচা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। 

প্রেমিকা লাবনীও একই গ্রামের মো. কামাল হোসেনের মেয়ে। স্থানীয় একটি মাদরাসার ৮ম শ্রেণির ছাত্রী সে। 

ইয়ামিন ও লাবনী একই বাড়ির বাসিন্দা।


বিজ্ঞাপন


ইয়ামিনের মামা মো. হাছান আলীর অভিযোগ, লাবনীর সঙ্গে ইয়ামিনের কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল না। ইয়ামিনের চাচাতো ভাই রাকিবের সঙ্গে লাবনীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ঘটনার দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে লাবনীর বাবা কামাল হোসেন রাকিবের মাধ্যমে ঘর থেকে ইয়ামিনকে বাড়ির বেড়িবাঁধের ওপর ডেকে নেয়। এরপর রাকিব ও কামাল ইয়ামিনকে জুতাপেটা ও মারধর করে তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। 

রাত ৮টার দিকে বাড়ির এক নারী দেখতে পান গলায় রশি পেঁচানো ইয়ামিনের লাশ একটি গাছের সঙ্গে ঝুলে আছে। এরপর তারা পুলিশকে খবর দেয়। ঘটনার পর রাকিব, লাবনী ও লাবনীর বাবা কামালসহ তাদের ঘরের সকলে আত্মগোপনে রয়েছেন। 

তবে দক্ষিণ আইচা থানার চর মানিকা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চৌকিদার মো. হারুন জানান, ইয়ামিনের সঙ্গে লাবনীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। লাবনীর বাবা কামাল হোসেন তাদের প্রেমের সম্পর্ক জানতে পেরে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় ইয়ামিনের চাচাতো ভাই রাকিবের মাধ্যমে কামাল ইয়ামিনকে বাড়ির সামনের বেড়িবাঁধের ওপর ডেকে নিয়ে জুতাপেটা ও মারধর করে তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। তাদের মারধরে বেড়িবাঁধের ওপর শুয়ে পড়েন ইয়ামিন। এ ঘটনার ঘন্টাখানেক পর বাড়ির পাশের একটি গাছে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাওয়া যায়।

উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নেসার উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে ইয়ামিনের লাশ তাদের (ইয়ামিনের) ঘরে দেখতে পান। তার গলায় দাগ রয়েছে। 

সুরতহাল প্রতিবেদন অনুযায়ী এটি একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু বলে এ পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, লাবনীর সঙ্গে ইয়ামিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল এমন একটি গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। ইয়ামিনের পরিবারও ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনের দাবি জানিয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আপাতত দক্ষিণ আইচা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটির তদন্ত চলমান রয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়া গেলে ঘটনাটির প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

প্রতিনিধি/এইচই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর