শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

রাজশাহীতে ইসলামি বইমেলায় উপচেপড়া ভিড়

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০২২, ০২:২৯ এএম

শেয়ার করুন:

রাজশাহীতে ইসলামি বইমেলায় উপচেপড়া ভিড়

শিক্ষানগরী রাজশাহীতে চলছে ইসলামি বইমেলা। বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া এই মেলার শেষ দিন আজ (১৯ নভেম্বর)। বইমেলার লেখক-প্রকাশক ও পাঠকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছিল এই মেলা। ইসলামি বই কিনতে নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মেলায় ছুটে এসেছেন পাঠকেরা। তবে মেলার জায়গা কম হওয়ায় ভোগান্তিতে পোহাতে হয়েছে আগত মানুষদের।

সীরাতুন্নবী (সা.) উপলক্ষে বাংলাদেশ সৃজনশীল ইসলামি পুস্তক প্রকাশক সমিতি তিনদিন ব্যাপী এই মেলার আয়োজন করে। তাযকিয়াহ ইসলামী শপ ও পড়ুয়া বুক ক্যাফের সহযোগিতায় রাজশাহী নগরীর শিরোইল বড় রাস্তা জামে মসজিদের সামনে জমে উঠেছে এই মেলা। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে এই মেলা।


বিজ্ঞাপন


শনিবার (১৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সরেজমিনে দেখা যায়, অল্প পরিসরে আয়োজন হলেও পাঠকে পূর্ণ ছিল সবকটি স্টল। অনেকটা গাদাগাদি করেই পাঠকেরা খুঁজছেন প্রিয় লেখকের বই। মেলা শেষ হতে কয়েক ঘণ্টা বাকি থাকায় পছন্দের বই নিতে কালক্ষেপণ করছেন না কেউই। এছাড়াও সীরাতুন্নবী উপলক্ষে বই মেলার বিশেষ আয়োজন কুইজ প্রতিযোগিতায়ও অংশ নিচ্ছেন অনেকে।

মেলায় মাকতাবাতুল আসলাফ, রাহনুমা প্রকাশনী, গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্স, সিয়ান পাবলিকেশন্স, সমকালীন প্রকাশনসহ দেশের প্রথম সারির প্রায় ২২টি প্রকাশনীর স্টল রয়েছে মেলায়। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছাড়াও সব ঘরানার পাঠকদের খোরাক রয়েছে এই আয়োজনে। বাংলা, ইংরেজি ও আরবি ভাষার বই রয়েছে। ইসলামিক উপন্যাস, ইতিহাস, গল্প, প্রবন্ধ, হুকুম-আহকাম, মাসআলা-মাসায়েলসহ সব ধরনের ইসলামিক বই থাকছে মেলায়। এছাড়াও মাদরাসার দরসি কিতাব, আরবি শরাহ ও তাফসিরগ্রন্থও পাওয়া যাচ্ছে। সকল বইয়ে মেলা উপলক্ষে রয়েছে বিশেষ ছাড় দিচ্ছেন প্রকাশকরা।

জানতে চাইলে চেতনা প্রকাশনের মার্কেটিং ম্যানেজার আবু নাইম ঢাকা মেইলকে বলেন, বদ্ধ ঘরে মেলার আয়োজন না করে খোলা জায়গায় হলে ক্রেতা সমাগম আরও বেশি হতো। তবে বরাবরই রাজশাহী বইপ্রেমী ভরপুর। এখানে সব শ্রেণির পাঠক রয়েছেন। এছাড়াও মেলার প্রচারণা ছিল না বললেই চলে, পর্যাপ্ত প্রচারণা চালানো গেলে পাঠক সমাগম আরও বাড়ত বলেও জানান তিনি।

রাহনুমা প্রকাশনীর ম্যানেজার আরিফ বিল্লাহ ঢাকা মেইলকে বলেন, মেলার পরিসর খুবই কম হয়েছে। তিনদিনে মেলার খুব বেশি কিছু করা সম্ভব নয়, কমপক্ষে এক সপ্তাহ হলে ভালো হতো। তবে পাঠকদের যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। সমসাময়িক বিষয় বা উপন্যাস ও বাস্তবভিত্তিক বইয়ে নতুন প্রজন্মের প্রচুর চাহিদা।


বিজ্ঞাপন


মেলায় বই কিনতে আসা আসাদুল্লাহ আল গালিবের সাথে কথা হয় ঢাকা মেইলের। তিনি বলেন, মেলার আয়োজন খুবই ছোট পরিসরে হয়েছে। তবুও যদি উন্মুক্ত জায়গায় হতো তবে পাঠকদের চলাফেরা ও বই খোঁজা সুবিধা হতো। এছাড়াও বইয়ের দাম অনেক বেশি বলেও দাবি এই পাঠকের।

বই কিনতে আসা জামাল উদ্দিন নামের আরেক পাঠকের সাথে কথা হয় ঢাকা মেইলের। তিনি জানান, মেলায় সচরাচর যেমন মূল্য ছাড় থাকে এখানে তেমন কিছু লক্ষ করা যায় নি। যেসব বইয়ে ছাড় দিচ্ছে সেসবের কভার মূল্যই অনেক বেশি। তরুণ প্রজন্ম বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের বই পাঠে আগ্রহী করতে বইয়ের মূল্য নির্ধারণে আরও সজাগ দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।

মেলার অন্যতম আয়োজক ও ইসলামি বই পুস্তক মালিক সমিতি রাজশাহী শাখার সদস্য রাজিব হাসান ঢাকা মেইলকে বলেন, রাজশাহীতে ইসলামি বইমেলার এমন আয়োজন এটাই প্রথম। তবে প্রথম হলেও পাঠককূল ব্যাপক সাড়া দিয়েছেন। তারা নিজেদের পাশাপাশি বন্ধু-বান্ধব, বাবা-মা, ভাই-বোন সবার জন্য বই নিয়েছেন।

ইসালামি বইমেলার মতো ব্যতিক্রমী আয়োজনে পাঠকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আমাদের পরবর্তী আয়োজনে উৎসাহ দিবে। আগামীতে আরও বড় পরিসরে আয়োজনের বিষয়টি চিন্তায় থাকবে। পাঠকদের ইসলামি গল্প-সাহিত্য বিষয়ে আগ্রহ বেশি হলেও সিরাত জানার প্রবণতা তরুণদের মাঝে ক্রমেই বাড়ছে।

প্রতিনিধি/আরআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর