উচ্চফলনশীল জাতের ব্রি ধান-৯৩ চাষে বাম্পার ফলন পেয়েছেন কৃষক আতিকুর রহমান। বিঘাপ্রতি ২৫ মণেরও বেশি ফলন পেয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) উদ্ভাবিত নতুন জাতের এই ধান চাষ করে হাসি ফুটেছে তার মুখে।
আতিকুরের বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের দরবেশপাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে।
বিজ্ঞাপন
এ বছর তিনি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) উদ্ভাবিত এই ধান পরীক্ষামমূলকভাবে ৬ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন। আশানুরূপ ফলনও পেয়েছেন। তার দেখাদেখি এই ধান চাষে আগ্রহী হচ্ছেন আশপাশের কৃষকেরাও। উৎপাদিত ধানের এক বড় অংশই বীজ হিসেবে বিক্রি হবে বলে জানান আতিকুর।
জানা যায়, ব্রি কর্তৃক সাম্প্রতিক উদ্ভাবিত ব্রি ধান-৯৩ স্বল্প জীবনকাল সস্পন্ন এবং আগাম জাতের। এটি ভারতীয় স্বর্ণা ধানের বিকল্প। রোপা আমন মৌসুমে এই ধান গাছের উচ্চতা হয় ১২৭ সেন্টিমিটার এবং জীবনকাল মাত্র ১৩৭ দিন।

আতিকুর রহমান জানান, এই ধানে তেমন চিটা নেই। উৎপাদনেও কম খরচ, আবার আগেভাগেই ক্ষেত থেকে কাটা যাচ্ছে। এতে করে ওই জমি অন্যান্য শস্য চাষের জন্য প্রস্তুত করা সম্ভব হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, বি-৯৩ চাষ করে আমি অনেক খুশি। প্রথম চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। আশা করি আমরা ভারতীয় জাতের ধান চাষ বাদ দিয়ে নতুন জাতের ব্রি-৯৩ চাষ করে বেশি লাভবান হব।
পঞ্চগড় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক শাহ আলম মিয়া বলেন, কৃষক আতিকুর রহমান ব্রি ধান-৯৩ প্রথমবার চাষ করে ব্যাপক ফলন পেয়েছেন। নতুন জাতের এ ধান চাষের জন্য সব সময় কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে আমরা আশা করছি, আগামী বছর এ উপজেলায় ব্রি ধান-৯৩ চাষে অনেক কৃষকই আগ্রহী হবেন।
সম্প্রতি আতিকুরের নতুন জাতের এই ধান ক্ষেত পরিদর্শনে আসেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবীর। তিনি বলেন, কৃষি জমির পরিমাণ, উর্বরতা, ভূ-গর্ভস্থ পানির প্রাকৃতিক সম্পদ এবং কৃষি শ্রমিক ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। এছাড়া পরবর্তীতে জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলা করে ধানের ফলন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশে ধানের চাহিদা মেটানো একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ধান উৎপাদনে সীমিত সম্পদ ব্যবহার করে উচ্চ ফলনশীল আধুনিক জাত ও টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং সম্প্রসারণের মাধ্যমে ফলন বাড়ানো আমাদের লক্ষ্য।
প্রতিনিধি/এইচই

