নেত্রকোনার কলমাকান্দায় মহাদেও নদ থেকে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন করার দায়ে চার ব্যক্তিকে ১০ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পাশাপাশি বালু-পাথর উত্তোলনে ব্যবহৃত চারটি লরিও জব্দ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে কলমাকান্দা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.শহীদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এরআগে ভোরে মহাদেও নদে অভিযান পরিচালনা করেন তিনি। এ সময় কলমাকান্দা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খোকন কুমার সাহার নেতৃত্বে একদল পুলিশ তার সঙ্গে ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
অভিযানে বালু ও পাথর উত্তোলনের দায়ে লরির চালক স্থানীয় সাহাবুদ্দিন (২৩), মারুফ (১৯), মোকসেদ(২৪) ও আমির হোসেন(১৯) নামে চারজনকে ১০ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি তিনটি বালু ভর্তি ও একটি পাথর ভর্তি লরিসহ মোট চারটি লরি জব্দ করা হয়।
কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার ফকিরা বাজার এলাকার মো. মারফত আলীর ছেলে মো. মারুফ হোসেন (১৯), কলমাকান্দা উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের মো. জালাল খানের ছেলে মো. মোকছেদ আলী (২৪), ঘোষপাড়া গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে মো. শাহাবুদ্দিন(২৪) ও সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ এলাকার মো. আমির হোসেন(১৯)।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.শহীদুল ইসলাম জানান, অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলনকারিদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, গত ১০ নভেম্বর কলমাকান্দার মহাদেও নদ থেকে নিয়ম না মেনে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন করায় ইজারা বাতিল করেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। তফসিল বর্হিভুত স্থান থেকে বালু-পাথর উত্তোলন, অননুমুদিত ড্রেজার ব্যবহার, নির্ধারিত মাত্রার অধিক গভীরতায় বালু-পাথর উত্তোলন, নদীর গতিপথ পরিবর্তন, পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত, বালু পরিবহনে জনগনের চলাচলে বিঘ্নসহ ইজারা চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের দায়ে ইজারা বাতিল করা হয়।
বিজ্ঞাপন
ইজারাদারের সঙ্গে স্থানীয় বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা ও প্রভাবশালী ব্যক্তি যুক্ত থেকে ইজারা করা নির্দিষ্ট জায়গা থেকে বালু উত্তোলন না করে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে ভারতের মেঘালয় সীমান্তবর্তী পর্যটন এলাকাখ্যাত মহাদেও, সন্নাসীপাড়া, চিকনটুপ, বড়ুয়াকোনা, পাতলাবনসহ নদের বিভিন্ন এলাকা থেকে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন করে। এতে করে এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্টের পাশাপাশি নদের গতিপথ পরিবর্তন, নদের তীরের বাড়ি ঘর, ফসলি জমি, বাগান, স্থানীয় বাজার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গির্জা, রাস্তা-ঘাটসহ বেশ কিছু স্থাপনা ভেঙে যাচ্ছে।
অবৈধ বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধের দাবিতে মহাদেও নদ রক্ষা কমিটি, পরিবেশবাদী সংগঠন বেলা, বাপা, পবা, বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন, বাংলাদেশ গারো লিঙাম ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, ট্রাইব্যাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন, গারো স্টুডেন্ট ইউনিয়নসহ স্থানীয়রা বিভিন্ন সময় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ, মানববন্ধনসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। এ নিয়ে গণমাধমে বিভিন্ন সময়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
টিবি

