শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

চাঁদা না পেয়ে পাহাড়ির ফলজ বাগান কেটে বাড়িতে আগুন

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০২২, ০৭:১৪ পিএম

শেয়ার করুন:

চাঁদা না পেয়ে পাহাড়ির ফলজ বাগান কেটে বাড়িতে আগুন

চাঁদা চেয়ে না পেয়ে এক পাহাড়ির বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। পাশাপাশি ধারালো অস্ত্র দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে অন্য একটি ঘর। কেটে ফেলা হয়েছে ফলজ বাগানের বিভিন্ন প্রজাতির চারা। যাওয়ার সময় সীমানার পিলার উত্তোলন করে ফেলা হয় তারকাটার কাছে। 

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার পেরাছড়া ইউনিয়নের পেরাছড়া মৌজাস্থ ১২ নম্বর এলাকায় (বিজিবি সেক্টর হেডকোয়ার্টারের পাশে) রোববার দিবাগত রাতে এই ঘটনা ঘটে। 


বিজ্ঞাপন


পাহাড়িরা সৃজিত মিশ্র ফলজ বাগানের বিভিন্ন ফলজ গাছ করার সুবাধে দীর্ঘ দিন ধরে একটি চক্রটি মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবী করে আসছে। 

ক্ষতিগ্রস্থ জায়গার মালিক জ্যোতিষ জ্ঞান চাকমা বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত জসিম, সাহাদাত, রাজ্জাক, শাহিন,  রঞ্জু মিয়া, আল-আমিন, সালা উদ্দিনসহ আরো অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আটকের দাবি করছি। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার প্রক্রিয়া চলছে। 

এদিকে চাঁদাদাবি ও অগ্নিযোগের ঘটনায় অভিযুক্ত জসিম, সাহাদাতের সাথে অভিযোগ করে এ বিষয়ে মোবাইলে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে তাঁরা জানান, এ ধরনের ঘটনার সাথে আমরা জড়িত নই। 

gg


বিজ্ঞাপন


খাগড়াছড়ি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আরিফুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে থানার কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি।  অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

জ্যোতিষ জ্ঞান চাকমার দাবি প্রায় ১০ লক্ষ টাকা ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। 

জ্যোতিষ জ্ঞান চাকমা জানান, অনেক আগ থেকে খাগড়াছড়ি পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের উত্তর সবুজবাগের ০১. মো. শাহিন (৪৫), পিতা-নেল ফকির, ০২. মো. রনজু (৪৫), পিতা-আবুল হাশেম, ০৩. আব্দুর রাজ্জাক, পিতা-চান মিয়া, ০৪. আল আমিন (৩০), পিতা-আব্দুর রাজ্জাক সহ অজ্ঞাতনামা ০৭/০৮ জন আমার বাগানে ক্ষতির চেষ্টা করছিলো। এ নিয়ে আমি থানায় লিখিত ভাবে জানিয়েছি। 

তারাই গতকাল বাগানের পরিকল্পিতভাবে প্রবেশ করে এ ঘটনা ঘটনায়। গত ১২ নভেম্বরও আমি খাগড়াছড়ি সদর থানায় হাজির হয়ে অভিযোগ দাখিল করলেও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার দিবাগত রাতে তারা বাগানে নির্মিত একটি ঘর আগুন লাগিয়ে দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে এবং আরেকটি ঘরে ভাঙচুর ও ঘরের টিনের বেড়াগুলো কেটে নষ্ট করে দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এর আগে গত ২/৩ মাস পূর্ব হতে একই ওয়ার্ডের কুমিল্লা টিলার মো. জসিম আমার কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে। আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত ২৭ অক্টোবর ২০২২ আমার দখলীয় জায়গাটি তার দাবি করে আমার বাগানে জঙ্গল কাটা শুরু করে। আমি তাদেরকে বাধা দিলে আমাকে সেদিন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। উক্ত ঘটনার পর আমি গত ২৯ অক্টোবর ২০২২ খাগড়াছড়ি সদর থানায় অভিযোগ দাখিল করেছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েক দিনের ঘটনায় সেটলাররা বাগানে বেড়ার জন্য ব্যবহৃত ১০০টি পিলার, বেড়ার ১৭টি জি আই তারের নেট খুলে নিয়ে গেছে। এছাড়া বাগানে রোপন করা ৫০০ টি সুপারি চারা, ৫০০টি পেঁপে গাছ, ৯ প্রজাতির ৩০০টি কলা গাছ, ৫০০টি সিটলেস লেবু গাছ কেটে ধ্বংস করে দিয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, আমি নিরাপত্তাহীনতায় আছি। পাশাপাশি বাগান রক্ষার্থে খাগড়াছড়ি সদর থানায় পর পর দু’টি অভিযোগ দায়ের করার করলেও তাদের এখনো গ্রেপ্তার করেনি বলে তিনি জানান। একই সাথে বাগান ধ্বংসের ক্ষতিপূরণসহ নিরাপত্তা ও বাগান রক্ষার্থে অবিলম্বে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর