বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

কফি চাষে লাখ লাখ টাকা আয় মোখলেছুরের

রেজাউল করিম জীবন
প্রকাশিত: ০৩ নভেম্বর ২০২২, ১০:০২ এএম

শেয়ার করুন:

কফি চাষে লাখ লাখ টাকা আয় মোখলেছুরের
ছবি: ঢাকা মেইল

কফি চাষ করে বাজিমাত করেছেন রংপুর তারাগঞ্জের মোখলেছুর রহমান। মাত্র ৫ বছরে কফি চাষ করে আয় করছেন লাখ লাখ টাকা। শখের বসেই কফি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন তিনি।

কক্সবাজারের জাহানারা গ্রীণ এগ্রো থেকে উন্নত ফলনশীল এ্যারাবিয়াক জাতের চারা সংগ্রহ করেন তিনি। ২০১৭ সালে ৬ অক্টোবরে বাড়ির পাশে রাস্তার ধারের ২০ শতক জমিতে ৪৫০টি চারা রোপণের মধ্যদিয়ে কফি চাষ শুরু হয় তার। সে সময় তার খরচ হয় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা।

মোখলেছুর রহমানের বাড়ি তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার গোয়াল বাড়ি এলাকায়। যা তারাগঞ্জ বাজার থেকে দক্ষিণে ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। মোখলেছুর রহমান এমএ ডিগ্রি অর্জন করে এবং পরবর্তীতে এলএলডি গ্রাজুয়েট সম্পূর্ণ করেছেন। পড়ালেখা শেষ করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মার্কেটিংয়ে চাকরি করতেন তিনি।

মোখলেছুর রহমান বাংলাদেশে কফি চাষ হচ্ছে বিষয়টি অনলাইনে পরে উদ্বুদ্ধ হন। এরপর শখ করে কফি চাষ শুরু করেন। কক্সবাজারের জাহানারা গ্রীণ এগ্রো থেকে উন্নত ফলনশীল এ্যারাবিয়াক জাতের চারা সংগ্রহ করেন তিনি। ২০১৭ সালে ৬ অক্টোবরে বাড়ির পাশে রাস্তার ধারের ২০ শতক জমিতে ৪৫০টি চারা রোপণের মধ্যদিয়ে কফি চাষ শুরু হয় তার। সে সময় তার খরচ হয় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা।

মোখলেছুর রহমান কফি বাগানের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে চারা তৈরি করা শুরু করেন। এ বছর প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকার চারা বিক্রি করেছে তিনি। নার্সারিতে আরও চারা রয়েছে। সেগুলো বিক্রি হলে সবমিলিয়ে এবার চারা বিক্রি হবে প্রায় ৮ লাখ টাকা।

moklesur


বিজ্ঞাপন


নিয়মিত চর্চার পর দীর্ঘ ১৮ মাস পর ফুল আসে কফি গাছে। পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে ফল আসে। ২০২০ সালে বাগান থেকে ২৫ কেজি গ্রিন বিন সংগ্রহ করেন তিনি। যা বিক্রি করে ৬ হাজার টাকা আয় করেন। ২০২১ সালে এসে বাগান থেকে ৭০ কেজি গ্রিন বিন সংগ্রহ করেন এবং প্রায় পৌনে দুই লাখ টাকায় বিক্রি করেন। চলতি বছরে মোখলেছুর রহমান বাগান থেকে ১০৭ কেজি গ্রিন বিন সংগ্রহ করে ইতোমধ্যে পৌনে ৩ লাখ টাকা বিক্রিও করেছেন। বাগান থেকে আরও গ্রিন সংগ্রহ করা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। 

মোখলেছুর রহমান কফি বাগানের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে চারা তৈরি করা শুরু করেন। এ বছর প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকার চারা বিক্রি করেছে তিনি। নার্সারিতে আরও চারা রয়েছে। সেগুলো বিক্রি হলে সবমিলিয়ে এবার চারা বিক্রি হবে প্রায় ৮ লাখ টাকা।

তার উদ্যোগে ইতিমধ্যে ঠাকুরগাঁও, নওগাঁ, বগুড়া, রাজশাহী, খুলনা, ফেনিসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ছোট বড় ৫২টি কফি বাগানে কফি চাষ হচ্ছে। সেখানে প্রায় ১৭ হাজার কফি গাছ রয়েছে।

moklesur

মোখলেছুর রহমান কফি বাগান থেকে ফল সংগ্রহ করে ম্যানুয়ালে প্রসেসিং করে কফির ডাস্ট তৈরি করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন বাজারে এই কফি বিক্রি করেন। বাগানের পাশেই রংপুর কফি ক্লাব নামে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। যেখানে বিকেল হলেই কফি আড্ডায় মেতে উঠেন সব বয়সী মানুষ।

কফি বাগান দেখতে আসা প্রবীর কুমার কাঞ্চন জানান, কফি বাগান দেখে তিনি মুগ্ধ। তিনিও বাণিজ্যিকভাবে এই কফি চাষ করতে চান। এজন্য এই কফি বাগান থেকে তিনি সকল বিষয়ে ধারণা নিচ্ছেন। শিগগিরই তার এলাকায় কফি বাগান গড়ে তুলেবেন বলে জানালেন তিনি।  

তার উদ্যোগে ইতিমধ্যে ঠাকুরগাঁও, নওগাঁ, বগুড়া, রাজশাহী, খুলনা, ফেনিসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ছোট বড় ৫২টি কফি বাগানে কফি চাষ হচ্ছে। সেখানে প্রায় ১৭ হাজার কফি গাছ রয়েছে।

জাহিদ হোসেন জানান, এর আগে দেখতে এসেছিলেন কফি বাগান। বাগান দেখে তিনি বেশ আশাবাদী। তাই আর দেরি না করে আজই কফি গাছের চারা নিতে এসেছেন। আপাতত ক্ষুদ্র পরিসরে বাগান তৈরি করছেন তিনি। সেই বাগানে সাফল্য পেলে বড় করে বাগান করার ইচ্ছে আছে তার।

moklesur

উদ্যোক্তা মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘ফেসবুকে কফি চাষের কথা জানতে পারি। পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায় কফি চাষ হচ্ছে। সেখানে হলে আমাদের এখানে উঁচু জমিতে হবে না কেন? সেই কেন থেকেই একেবারে শখ করে কফি চাষ করা। এখন আমি একজন সফল উদ্যোক্তা।’

অর্থকরী ফসল হিসেবে কফি চাষের মাধ্যমে রংপুরের পিছিয়ে পরা অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে চান তিনি। এজন্য তিনি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা কামনা করেন বলেও জানান এই উদ্যোক্তা।

তারাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা উর্মি তাবাসসুম ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করেছি সব ধরনের সহযোগিতা করার। যখন যা প্রয়োজন কারিগরি সহযোগিতার, তা দেওয়া হচ্ছে। সরকারিভাবে রংপুর জেলার দুটি উপজেলায় কফি চাষ শুরু হয়েছে। তবে তারাগঞ্জে সরকারিভাবে শুরু হয়নি। মোখলেছুর রহমানের কফি বাগান থেকে কেউ উদ্বুদ্ধ হলে বাগান করতে চাইলে উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে।’

টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর