চাঁপাইনবাবগঞ্জে বারোমাসি তরমুজ চাষ করে তাক লাগিয়েছেন কৃষকরা। এই তরমুজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। চাষিরা বলছেন, এক জমিতে বছরে ৩ বারেরও বেশি চাষ করা সম্ভব বারোমাসি এই তরমুজ।
অসময়ের এ তরমুজ দেখতে কালো ও চকড়া পকড়া হলেও ভেতর লাল এবং হলুদ। এ দুই ধরনের তরমুজ রসাল ও খেতে সুমিষ্টি। আর স্থানীয় কৃষি বিভাগের ধরণা জেলার বাণিজ্যিক নতুন সম্ভাবনার বার্তা বয়ে আনবে এই বারোমাসি তরমুজ।
বিজ্ঞাপন

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার আমনুরার জামতলা এলাকায় আমিরা এগ্রো ফার্ম অ্যান্ড নার্সারিতে মালচিং পদ্ধতিতে মাচায় অসময়ের বারোমাসি ব্ল্যাক বেবি ও কানিয়া সুমিষ্টি এই দুই জাতের তরমুজ চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে কামরুল ইসলাম। ১৫ কাঠা জমিতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার প্রথমে পরীক্ষামুলক চাষ শুরু করেন তিনি। প্রথমবারের প্রায় লাখ টাকারও বেশি তরমুজ বিক্রি করেছেন কামরুল।

এবারও একই জমিতে আগের মাচায় নিজ উদ্যোগে এই দুই ধরনের তরমুজ চাষ করেন কামরুল ইসলাম। বীজ লাগার মাস খানেকের মাথায় গাছে ফল আসে এবং দুই থেকে আড়াই মাসের মাথায় তরমুজগুলো বিক্রি করার উপযোগী হয়। প্রত্যেকটি তরমুজ ২-৩ কেজি ওজন হয়। প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হয় ৬০-৭০ টাকা দরে। গতবারের চেয়ে এবছর দ্বিগুন লাভের কথা ভাবছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
তরমুজ চাষী কামরুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে জানান গত বছরের চেয়ে এবার লাভ বেশি হবে কারণ এবার ফলন ভাল হয়েছে। আরও দামও অনেক বেশি। মালচিং পদ্ধতিতে মাচায় বছরে তিন থেকে চার বার পযন্ত তরমুজ চাষ করা যায়। ফলে খরচ কম লাভ বেশি।

আরেক কৃষি উদ্যোক্তা মোস্তফা সুমন ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘কামরুল ভাইয়ের তরমুজ ক্ষেত দেখতে এসেছি কিভাবে এক মাচায় কয়েকবার তরমুজ চাষ করা যায়। তিনি আরও জানান এর পূর্বে আমার জানা ছিল না এক মাচায় কয়েকবার তরমুজ চাষ করা যায় আজ এখান থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম আগামীতে আমিও কামরুল ভাইয়ের মত মালচিং পদ্ধতিতে মাচাই তরমুজ চাষ করবো।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা সলেহ আকরাম ঢাকা মেইলকে জানান অসময়ের তরমুজটির চাহিদা থাকায় বিভিন্ন কৃষককে তরমুজ চাষে পরামর্শসহ সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কানিজ তাসনফা ঢাকা মেইলকে জানান, ‘অসমের তরমুজ চাষ করে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় এখন তরমুজ চাষে চাহিদা ব্যাপক হারে বাড়েছে। মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করে একই সেড ও মাচা কয়েকবার ব্যবহার করায় উৎপাদন খরচ কম হয়।’
তিনি আরও জানান তিন মাস আগেই অসময়ের বারোমাসি তরমুজ বিক্রি হয়েছে ১৬ শ থেকে ১৭ শ টাকা দরে। এবার বিক্রি হচ্ছে ২৭ শ থেকে ২৮ শ টাকা দরে। বারোমাসি ব্ল্যাক বেবি ও কানিয়া জাতের তরমুজ অনেক রসালো ও সুমিষ্ট, ভেতর লাল ও হলুদ রঙের হয়ে থাকে।
প্রতিনিধি/একেবি

