শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

তুলা-কাপড়ের দাম বেশি, কম্বল-ম্যাট্রেসে দখল যশোরের বাজার

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৩১ অক্টোবর ২০২২, ০৭:৪০ এএম

শেয়ার করুন:

তুলা-কাপড়ের দাম বেশি, কম্বল-ম্যাট্রেসে দখল যশোরের বাজার
ছবি: ঢাকা মেইল

প্রকৃতি জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। রাতে হালকা হালকা ঠান্ডা জানান দিচ্ছে শীতের। এই শীতে লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে আনাগোনা বেড়েছে ক্রেতাদের। তবে এবার লেপের চেয়ে কদর বেড়েছে কম্বল ও ম্যাট্রেসে। আবার অনেকে পুরানো লেপগুলো মেরামত করে নিচ্ছেন অনেকেই।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত কয়েক বছরে তুলনায় এবার তুলা ও কাপড়ের দাম বেড়ে যাওয়ায় লেপের দাম বেড়েছে। দামে কম হওয়ায় কম্বল ও ম্যাট্রেস বেশি কিনছেন ক্রেতারা।


বিজ্ঞাপন


কয়েক বছর আগেও ধুনকরদের (লেপ-তোষক কারিগর) দিয়ে লেপ-তোষক তৈরি করার ব্যস্ততা ছিল চোখে পড়ার মতো। এখন বাজার দখল করছে আধুনিক কারখানায় মেশিনে তৈরি কম্বল, জাজিম ও ম্যাট্রেস। তারপরও শীতের আমেজের সঙ্গে সঙ্গে ব্যস্ততা বেড়ে যায় ধুনকরদের। কেউ দোকানে আবার কেউ পাড়া-মহল্লায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, ক্রেতাদের নতুন কাপাশি তুলার লেপ বানাতে খরচ হচ্ছে ২১শ টাকা। এর মধ্যে তুলা ৪ কেজি ১২শ টাকা, কাপড় ৬শ টাকা, মুজরি ও ধুনকরদের খরচ ৩শ টাকা ধার্য্য করেছে দোকানিরা।

অন্যদিকে, কম দামের মধ্যে লেপ পাওয়া যাচ্ছে এক হাজার ৫০ টাকায়। এর মধ্যে গার্মেন্টস তুলা ৫ কেজি ২৫০ টাকা, কাপড় ৫০০ টাকা, মজুরি ও ধুনকরদের খরচ ৩শ টাকা নেওয়া হচ্ছে। অপরদিকে, পুরাতল লেপ মেরামত করতে নেওয়া হচ্ছে ১১শ টাকা। এর মধ্যে কাপড় ৬শ, মুজরি ও ধুনকরদের খরচ ৪শ এবং এক কেজি নরমাল তুলা ১০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।

এছাড়াও বাজারে মানভেদে কম্বল বিক্রি হচ্ছে ৫শ থেকে এক হাজার টাকা এবং ২৫শ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে, ম্যাট্রেস বিক্রি হচ্ছে ১৮শ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত।


বিজ্ঞাপন


যশোর শহরের বকুলতলার গরীবশাহ্ রোডে মুন বেডিং হাউস’র প্রোপ্রাইটর মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘বাজারে নতুন কাপাশি তুলার লেপের দাম বেশি। এজন্য এবছর লেপ-তোষকের জায়গা দখল করেছে কম্বল ও ম্যাট্রেস। তবে নতুন লেপের অর্ডারের চেয়ে পুরানো লেপ মেরামত করছেন বেশি ক্রেতারা।’

তিনি আরও বলেন, ‘কাপাশি তুলার নতুন লেপে তৈরি করতে নেওয়া হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২১শ টাকা পর্যন্ত। আর পুরাতন লেপ মেরামত করতে নেয়া হচ্ছে ১১শ টাকা।’

এই দোকানে কথা হয় লেপ মেরামত করতে আসা ক্রেতা লাবণী জামানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কাপাশি তুলা দিয়ে নতুন লেপ তৈরি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় উপায় না পেয়ে পুরাতন লেপ ভেঙে মেরামত করে নিচ্ছি।’

এইচএম রোডে কথা হয় আজিম হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘নতুন লেপ বানাতে যে খরচ হচ্ছে। ওই টাকার সঙ্গে অল্প কিছু টাকা যোগ করলেই নতুন কম্বল বা ম্যাট্রেস কিনা যাচ্ছে। এজন্য আমার আগ্রহ কম্বল ও ম্যাট্রেস দিকে।’

রাজারহাটের মেসার্স আলিফা এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর আশিক হোসেন বলেন, ‘একমাসে নতুন লেপের অর্ডার পেয়েছি মাত্র ৮টা। সেখানে প্রতিদিন পুরাতন লেপ মেরামতের অর্ডার পাচ্ছি ৮ থেকে ১০টা করে। এর আগের বছরগুলোতে লেপের অনেক অর্ডার পেতাম। লেপ বানিয়ে আমাদের সংসার মোটামুটি চলে যেত। কিন্তু বর্তমানে সকলের কম্বল ও ম্যাট্রেস দিকে আগ্রহ বাড়াতে আমাদের আয় অনেক কমে গেছে। এর কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই বাজারে পরিবার নিয়ে আমাদের চলা খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তবে শীত তো এখনো পুরোপরি পড়েনি। আশা করছি, শীত বাড়লে আমাদের কাজ আরও বাড়বে।’

টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর