শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

নির্বাচনে হেরে ভোটারদের কাছে টাকা ফেরত চাইলেন আ.লীগ নেতা!

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০২২, ০৯:৫২ পিএম

শেয়ার করুন:

নির্বাচনে হেরে ভোটারদের কাছে টাকা ফেরত চাইলেন আ.লীগ নেতা!

সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৭ অক্টোবর)  সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত। এতে ১১ নম্বর ওয়ার্ডে বাসাইল উপজেলা থেকে সাধারণ সদস্য প্রার্থী ছিলেন রফিকুল ইসলাম (সংগ্রাম)। নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়।

এ নির্বাচনে হেরে ক্ষোভে মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রফিকুল ইসলাম তার ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট দেন। সেখানে ভোটারদের কাছে ‘ক্রয় করা ভোটের’ টাকা ফেরত চেয়েছেন তিনি। মহুর্তেই এই পোস্ট ভাইরাল হয়ে যায়। এ নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। রফিকুল ইসলাম বাসাইল সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক।


বিজ্ঞাপন


ফেসবুক পোস্টে রফিকুল ইসলাম সংগ্রাম লেখেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে বাসাইলে (সদস্য-১১) আমরা চারজন প্রার্থী ছিলাম। ভোটার ছিল ৯৪ জন। দিন শেষে জানা গেল প্রত্যেক প্রার্থী ৫০-৬০ জন ভোটারকে টাকা দিয়েছে। তারমধ্যে আমাকে ৬০ জন ভোটার কথা দিলেও তারমধ্যে কম বেশি ৫৫ ভোটার আমার কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করল। ভোট দিল মাত্র ৭ জনে। এই হল ভোটারদের আসল চরিত্র।

তিনি আরও লেখেন, পৃথিবীর সবকিছুই এক বার দেখলে চেনা যায়, শুধু মানুষ বাদে। আমাকে যারা ভোট দেননি মনে হয় আপনাদের নামের তালিকা হওয়ার আগে আমার টাকা ফেরত দেওয়া উচিত। আপনারা না জনপ্রতিনিধি। ভোট আপনি যাকে খুশি তাকে দেন, এটা আপনাদের অধিকার, তাই বলে টাকা নেবেন ৪ জনের কাছ থেকে। আর ভোট দেবেন একজনকে, এটা কেমন চরিত্র? আপনাদের কাছ থেকে আপনার এলাকার জনগণ কী সেবা পেতে পারে?

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরাজিত প্রার্থী রফিকুল ইসলাম সংগ্রাম জানান,  পোস্ট দেওয়ার পর টাকা গ্রহণকারী অনেকেই আমাকে ফোন করে টাকা ফেরত দিতে চেয়েছেন। অনেকেই আজ রাতের মধ্যেই টাকা ফেরত দেবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন। এ জন্য আমি পোস্টটি সরিয়ে নিয়েছি।

এ বিষয়ে বাসাইলের প্রিজাইডিং অফিসার মুহাম্মদ বাবুল হাছান জানান, নির্বাচনের আগে ভোটারদের মধ্যে কেউ টাকা লেনদেন করেছেন কী না সে বিষয় জানা নেই। গতকাল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি।


বিজ্ঞাপন


এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনি শংকর রায় জানান, নির্বাচনের আগে কেউ টাকা দেলদেনের বিষয়ে অভিযোগ করেনি। এখন হেরে গুজব ছড়াচ্ছেন। ভোটারদের টাকা দিয়ে থাকলে তিনি এটা অন্যায় করেছেন।

প্রসঙ্গত, টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১১ নম্বর ওয়ার্ডে (বাসাইল) সদস্য পদে সোমবার (১৭ অক্টোবর) বাসাইল উপজেলা হলরুমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ ওয়ার্ডে ভোটার ছিল ৯৪ জন। এতে নাছির খান টিউবওয়েল প্রতীকে ৫৫ ভোট পেয়ে সদস্য পদে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অটোরিকশা প্রতীকের প্রার্থী হোসাইন খান সবুজ পান ২১ ভোট।

এছাড়া উটপাখি প্রতীকের প্রার্থী রফিকুল ইসলাম সংগ্রাম সাত ভোট, মিজানুর রহমান খান হাতি প্রতীকে ১১ ভোট ও আতিকুর রহমান তালা প্রতীকে কোনো ভোট পাননি। সংরক্ষিত ৪ নম্বর ওয়ার্ডে নারী সদস্য পদে দোয়াত-কলম প্রতীকে খালেদা সিদ্দিকী পান ৪১ ভোট, ফুটবল প্রতীকের প্রার্থী রওশন আরা আক্তার রিতা ২১ ভোট ও হরিণ প্রতীকের প্রার্থী রুমা খান পান ৩১ ভোট। পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে তিন প্রার্থীরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।

প্রতিনিধি/একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর