‘সামান্য একটি মোবাইলের জন্য আমার একমাত্র ছেলে পৃথিবী থেকে চলে গেল। আমি এখন কাকে বাবা বলে ডাকবো আমি?’ —কথাগুলো বিলাপ করে বলছিলেন স্কুলছাত্র ফরহাদ হোসেনের বাবা আশরাফুল হক।
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে তার বুক চাপড়ানো কান্না কিছুতেই থামছে না।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) সকালে মোবাইল কিনে না দেওয়ায় বাবা-মায়ের সঙ্গে অভিমান করে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার দক্ষিণ কামালপুরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে স্কুলছাত্র ফরহাদ হোসেন।
আশরাফুল হক বলেন, ফরহাদ অনেক দিন ধরে একটি মোবাইল কেনার জন্য আমার কাছে টাকা চেয়ে আসছিল। আমি ছেলেকে বলেছি আমার কাছে এখন টাকা নেই। সামনের কার্তিক মাসে কাজের উদ্দেশে ঢাকা যাব। সেখানে কাজ করে টাকা উপার্জন করে তোমাকে ফোন কিনে দেব। কিন্তু ছেলে আমার কথায় কর্ণপাত না করে তার মায়ের কাছে আবদার করে। বৃহস্পতিবার সকালেও সে মোবাইল কিনে দেওয়ার জন্য আবদার করলে আমি তার মাকে বলি তোমার ছেলেকে বোঝাও।
এ কথা বলে আমি বাড়ি থেকে বের হই। কিছুক্ষণ পর এলাকাবাসী আমাকে জানায় তোমার ছেলে ফরহাদ ফাঁস দিয়েছে। এ কথা শুনে আমি দৌড়ে বাড়িতে এসে দেখি ছেলেকে ফাঁস থেকে নামিয়ে এলাকাবাসী মাথায় পানি ঢালতেছে। পরে তাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
ফরহাদ বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার দক্ষিণ কামালপুর গ্রামের কৃষক আশরাফুল হকের ছেলে। সে কামালপুর মইনুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
বিজ্ঞাপন
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাই বলেন, ফরহাদ মেধাবী ছাত্র ছিলেন। কেন এটা করলো বুঝতে পারছি না।
ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুর রহমান জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে পাঠানো হয়েছে। একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
প্রতিনিধি/এইচই