শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

কাশফুল ছড়ায় শুভ্রতা, প্রকৃতিপ্রেমীর মুগ্ধতা

পুলক পুরকায়স্থ
প্রকাশিত: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৫:০৬ এএম

শেয়ার করুন:

কাশফুল ছড়ায় শুভ্রতা, প্রকৃতিপ্রেমীর মুগ্ধতা
ছবি : ঢাকা মেইল

শরতের সঙ্গে স্নিগ্ধতার সম্পর্ক চিরায়ত। শরৎ শব্দটি স্নিগ্ধ হয়ে ওঠে আকাশের সাদা-নীল, ধবধবে সাদা কাশফুলে আর শিউলি ফুলের সাদা রঙে। বাতাসে দোল খাচ্ছে কাশফুল। সাদা কাশফুলগুলো উড়ছে বাতাসে।

দূরে শোনা যাচ্ছে ট্রেনের হুইসেল! 


বিজ্ঞাপন


ট্রেন আসছে। দুর্গা আর অপু গ্রামের পথ ধরে দৌড়াচ্ছে। ওরা ট্রেন দেখবে বলে কাশফুল মাড়িয়ে পৌঁছেছিল ঠিকই, কিন্তু ততক্ষণে দৃষ্টি থেকে বেরিয়ে গেছে ট্রেনটি। এ যেন 'পথের পাঁচালী' চলচ্চিত্রের এই দৃশ্যকাব্য। 

রবীন্দ্রনাথের গানে যেমন বিদেশিনীকে শারদপ্রাতে...দেখার মুগ্ধতা দেখা যায়, তেমনি শরৎ শব্দটি স্নিগ্ধ হয়ে ওঠে সাদা-নীল, শিউলি ফুলের সাদা ও উজ্জ্বল কমলা রঙে। শরৎ তো এভাবেই উদ্যাপিত হয় বাঙালির দিনযাপনে।

KASFUL

এসেছে শরৎ। কাশফুল ছড়ায় শুভ্রতা। কাশফুল ফোটে মুগ্ধতা ছড়িয়েছে প্রাণ-প্রাকৃতিতে। নদীর ধার, পুকুরে পাড় কিংবা বিস্তীর্ণ বালুচরে বড্ড অবহেলায় ফোটে কাশফুল। লাগে না কোনো যত্ন-আত্তি। তারপরও দূর থেকে কাশবনে তাকালে মনে হয়, শরতের সাদা মেঘ যেন নেমে এসেছে ধরণির বুকে। একটু বাতাস পেয়ে দলে দলে কাশফুল যখন এদিক-ওদিক মাথা নাড়ায়, তখন মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই।


বিজ্ঞাপন


এমন দৃশ্য মেলে মৌলভীবাজার শহরের কদমহাটা, শিমুলতলা, মনুনদের পাড়, জেলা মৎস্য অফিসের পুকুর পাড়সহ বেশকয়েকটি স্থানে। অন্য বছরের মতো এবারও সেখানে ফুটেছে কাশফুল।

স্থানীয় প্রকৃতিপ্রেমীরা এখানে আসছেন। কেউবা আনন্দে হারিয়ে যাচ্ছেন কাশবনে। কেউ তুলছেন ছবি। কেউবা হাত বুলিয়ে নিচ্ছেন কাশফুলে।

kashful

জেলা মৎস্য অফিসের পুকুর পাড়ে এসেছেন সদ্য বিবাহিত পিকলু দাশ। তিনি বলেন, 'শরৎ ঋতুর কথা মনে এলেই আমাদের চোখের কোণে ভেসে উঠে ফুটন্ত সাদা কাশফুল। তা স্বচক্ষে দেখতেই আসা। এখানকার পুকুরের স্বচ্ছ জলে কাশফুলের হেলেদুলে থাকার দৃশ্য অপূর্ব।'

আরেক দর্শনার্থী আব্দুর রব বলেন, ঋতু পরিক্রমায় বাংলার প্রকৃতিতে এখন শরৎকাল। রাশি রাশি কাশফুল ছড়াচ্ছে শ্বেত শুভ্র নৈসর্গিকতা। যা মুগ্ধ করছে প্রকৃতি প্রেমীদের।

কাশফুল দেখতে আসা শায়লা আক্তার বলেন, 'জায়গাটি অনেক সুন্দর। কাশফুলের মুগ্ধতায় এখানে আসা। এই কাশফুল গুলোর সঙ্গে ছবি তুললে ছবিগুলোও অনেক সুন্দর হয়। তাই এখানে আসা।'

kashful

এদিকে জমি দখল আর নদীর তীরে চাষাবাদ বেড়ে যাওয়ায় কাশবনের পরিধি কমে এসেছে। পাশাপাশি কাশবন কমে যাওয়ার পেছনে জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব রয়েছে দাবী পরিবেশ ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) মৌলভীবাজারের সমন্বয়ক আসম সালেহ সোহেল বলেন, প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা কোনো কিছুর পরিবর্তন প্রাকৃতিক পরিবেশের পরিবর্তনই নির্দেশ করে। জ্বালানি বা অন্য কোনো কাজে ব্যবহারের জন্য নয়, অন্তত মানুষের সৌন্দর্য প্রেমিদের মনের চাহিদার জন্য হলেও আগের মত দিগন্ত-বিস্তৃত কাশবন থাকা প্রয়োজন রয়েছে।

প্রতিনিধি/এইচই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর