বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

জামিন পাননি ঝুমন দাস, উচ্চ আদালতে যাবে পরিবার

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৪:০৯ পিএম

শেয়ার করুন:

জামিন পাননি ঝুমন দাস, উচ্চ আদালতে যাবে পরিবার

নিজের ফেসবুকে ‘উস্কানিমূলক’ পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় গ্রেফতার ঝুমন দাস ওরফে আপনের (২৬) আপিল আবেদন ফের খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) তার জামিন চেয়ে আবেদন করা হলেও সুনামগঞ্জের একটি আদালতের বিচারক তা নামঞ্জুর করেন।


বিজ্ঞাপন


ঝুমন দাসের আইনজীবী পঙ্কজ তালুকদার জানান, গত ৩০ আগস্ট ঝুমন দাস গ্রেফতার হওয়ার পর ৪ সেপ্টেম্বর তারা নিম্ন আদালতে জামিন চেয়েছিলেন, কিন্তু জামিন হয়নি। সোমবার সুনামগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আবার জামিনের আবেদন করা হয়। আদালতের বিচারক জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করেছেন।

পঙ্কজ তালুকদার আরও বলেন, ঝুমন দাসের পরিবার উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা সেটির প্রস্তুতি নিচ্ছি।

ঝুমন দাসের বাড়ি সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে। শাল্লা থানার পুলিশ তাকে গত ৩০ আগস্ট দুপুরে বাড়ি থেকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে তাঁর বিরুদ্ধে শাল্লা থানার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুমনুর রহমান বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পরদিন তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। ঝুমন দাস এদিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

jumon-2


বিজ্ঞাপন


ঝুমন দাসের বিরুদ্ধে এর আগে একই থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা করেছিল পুলিশ। গত বছরের ২২ মার্চ করা মামলাটিতে তিনি প্রায় ছয় মাস জেলে ছিলেন। মামলাটি এখন সিলেটের সাইবার ট্রাইব্যুনালে আছে।

গত ২৮ আগস্ট বেলা তিনটায় ঝুমন দাস নিজের ফেসবুক আইডি থেকে একটি উস্কানিমূলক পোস্ট করেন। ওই পোস্ট করার পর ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাত করে এবং এতে এলাকায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

ঝুমন দাস তার জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন, গত ২৮ আগস্ট তার ফেসবুক আইডিতে অন্য একজনের আইডি থেকে একটি পোস্ট আসে। তাতে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরতলের নবরত্ন মন্দিরের গেটে একটি মসজিদের দানবাক্স লাগানো ছিল। এই পোস্ট পড়ে তিনি সেটি কপি করে তার টাইম লাইনে শেয়ার করেন। পরে তিনি সেটি অনলি মি করে ফেলেন। এরপর শুনেন তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আদালতের জবানবন্দি দেওয়ার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

হেফাজতে ইসলামের তৎকালীন কেন্দ্রীয় নেতা মামুনুল হককে নিয়ে ফেসবুকে দেওয়া ঝুমন দাসের একটি পোস্টের জেরে গত বছরের ১৭ মার্চ সকালে নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা হয়। হামলার ঘটনার আগে ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা শহরে আয়োজিত এক সমাবেশে হেফাজত নেতা মামুনুল হক বক্তব্য  দেন। পরে মামুনুল হককে নিয়ে নিজের  ফেসবুকে ‘আপত্তিকর’ পোস্ট দেন বলে অভিযোগ ওঠে ঝুমন দাসের বিরুদ্ধে। ১৬ মার্চ রাতে পুলিশ ঝুমন দাসকে আটক করে। পরদিন ১৭ মার্চ সকালে উপজেলার কাশিপুর, দিরাই উপজেলার নাসনি, সন্তোষপুর ও চন্ডিপুর গ্রামের মানুষ লাটিসোঁটা নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা চালান।

এ ঘটনায় পরে শাল্লা থানায় মামলা হয় তিনটি। এর মধ্যে দুটি হয় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায়। অন্য মামলাটি করে পুলিশ। ঝুমন দাসে বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করা হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে। এই মামলায় তিনি প্রায় ছয় মাস জেল খাটার পর হাইকোর্ট থেকে এক বছরের জন্য ২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর জামিন পান।

প্রতিনিধি/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর