শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

মাদারীপুরে যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে নির্যাতন

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৩:১০ পিএম

শেয়ার করুন:

মাদারীপুরে যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে নির্যাতন
ছবি : ঢাকা মেইল

মাদারীপুরের সদর উপজেলায় যৌতুকের টাকার জন্য কেয়া আক্তার (২২) নামের এক গৃহবধূকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। ঘটনায় আহত ওই গৃহবধূ মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

এদিকে সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনায় তার বাবা হিরু সরদার মাদারীপুর সদর মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।  


বিজ্ঞাপন


এর আগে, গত রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার দক্ষিন দুধখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত কেয়া আক্তার মাদারীপুর সদর উপজেলার দুধখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ দুধখালী এলাকার হিরু সরদারের মেয়ে। তিনি একই এলাকার ইতালি প্রবাসী রিপন মোল্লার স্ত্রী। 

ভুক্তভোগী ও স্বজনরা জানান, গত ৩ বছর আগে ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে হয় কেয়া ও রিপন মোল্লার। বিয়ের ৬ মাস পর রিপন মোল্লা ইতালির উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান। ওখানে যাওয়ার পরে ২ মাস যোগাযোগ রেখেছিলেন স্ত্রী কেয়ার সঙ্গে। আস্তে আস্তে যোগাযোগ কমিয়ে দেয় রিপন মোল্লা। এদিকে কেয়ার কোল জুড়ে জন্ম নেয় একটি মেয়ে শিশু সন্তান। মেয়ে হওয়ার খবর রিপনকে দিতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে রিপন। এরপর থেকেই সম্পূর্ণভাবে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় স্ত্রী কেয়ার সঙ্গে। এদিকে কেয়ার ওপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করতে থাকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। যৌতুকের জন্য চাপও দিতে থাকে তারা। এক পর্যায়ে মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে কেয়ার বাবা হিরু সরদার ৫ লাখ টাকাও তুলে দেয় তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনের হাতে। টাকা নেওয়ার পরেও তারা আবারও টাকার দাবি করে। এই নিয়ে গতকাল কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে কেয়াকে তার শ্বশুর আব্দুল হাই মোল্লা, শাশুড়ি আবেরজান বেগম ও মেজো ভাসুর মৃণাল মোল্লা মারধর করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। এ ঘটনায় কেয়ার বাবা মাদারীপুর সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। 

আহত কেয়া আক্তার বলেন, আমার মেয়ে হাফিজা হওয়ার পর থেকে আমার স্বামী রিপন মোল্লা আমার সাথে আর যোগাযোগ করেন না। আমার শশুর বাড়ির লোকজন বার বার টাকা চায় আমার পরিবারের কাছে। আমার বাবা কয়েকবার টাকাও দিয়েছে। এখন তারা আরো টাকা চাইলে আমি না করায় আমাকে মারধোর করে। তারা বলে আমাকে নাকি আমার স্বামী তালাক দিয়ে দিয়েছে। তালাক দিয়ে থাকলে আমার কাছে তো কোনো নোটিশ আসেনি। গতকাল আমি এই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে আমার শশুর, শাশুড়ি আর মেজো ভাসুর আমাকে প্রচুর মারধর করে। আমার মেয়েকে নিয়ে এখন আমি কোথায় যাবো। আমি প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ঠু বিচার চাই।


বিজ্ঞাপন


ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত আব্দুল হাই মোল্লা, আবেরজান বেগম ও মৃণাল মোল্লা পলাতক থাকায় ও তাদের ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিনিধি/এইচই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর