শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

‘মেয়ের বাপ শুনেছিল ছেলের ৩ তলা বাড়ি আছে,’ আসল ঘটনা জানুন

জেলা প্রতিনিধি, নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:০৫ এএম

শেয়ার করুন:

‘মেয়ের বাপ শুনেছিল ছেলের ৩ তলা বাড়ি আছে,’ আসল ঘটনা জানুন

‘এক্স আমাকে ছেড়ে আরেক ছেলেকে বিয়ে করেছে। ছেলের ৩ তলা বাড়ি, নিচে মার্কেটও আছে। আমি তখন অনার্স থার্ড ইয়ারে পড়ি। ইনকাম তো দূর, মাঝে মধ্যে এক্স ফ্লেক্সি দিয়ে দিতো। এক্স টাকাওয়ালা ছেলেকে বিয়ে করল, আমি কষ্ট পাইলাম। দেড় মাস পর এক্স ইন্সটাগ্রামে ম্যাসেজ দিলো, সে ডিভোর্স দিয়েছে। জিজ্ঞেস করলাম কেন? পরে শুনি এই ছবির মতো কাহিনি। ছেলের ৩ তলা বাড়ি, নিচে মার্কেটও আছে। এরপর আর এক্সের সঙ্গে যোগাযোগ হয় নাই।’ 

ছেলের বাবা: ছেলের ৩ তলা বাড়ি আছে। নিচ তলায় পুরোটা মার্কেট। মেয়ের বাবা: আলহামদুলিল্লাহ আমরা রাজি।


বিজ্ঞাপন


বরপক্ষ বলেছিল, ছেলের ৩ তলা বাড়ি আছে। যার নিচ তলায় পুরোটা মার্কেট। পরে কোটিপতি বাবা দেখে স্ট্রোক। বাকিটা ইতিহাস।

মেয়ের বাপ শুনেছিল ছেলের ৩ তলা বাড়ি আছে, আবার নিচের তলায় মার্কেটও আছে। বাকিটা ইতিহাস।

গত কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে এরকম কিছু স্ট্যাটাস বা মিম পোস্ট। যেগুলোর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে তিন তলা একটি বাড়ির ছবি। মূল আলোচনা ওই বাড়িটিকে ঘিরেই। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাড়িটির ছবি ভাইরাল হয় মূলত একটি লাইভ থেকে। তবে বাড়িটি সম্পর্কে ছড়িয়ে পড়া গল্পটি সত্য নয়, এমনকি ওই বাড়িওয়ালার বিবাহযোগ্য কোনো ছেলেও নেই। বিষয়টির ফ্যাক্টচেক করতে গিয়ে এসব বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে ঢাকা মেইল। বাড়িটির অবস্থান যশোরের মণিরামপুরের ঝিকরগাছা রোডে। 


বিজ্ঞাপন


বাড়িটি সম্পর্কে লাইভে বলা গল্পটি সম্পর্কে ওই ব্যক্তি এবং বাড়ির মালিকের সঙ্গেও কথা বলেছে ঢাকা মেইল। 

ভাইরাল হওয়া লাইভ ভিডিওটিতে এক ব্যক্তিকে তিন তলা ওই বাড়িটিকে দেখিয়ে বলতে শোনা যায়, ‘বাড়িটি নিয়ে একটি মজার গল্প আছে।’ 

তার ভাষায় গল্পটি এরকম, ‘মেয়েপক্ষের কাছে ঘটক জানিয়েছিল— ছেলের তিন তলা বাড়ি আছে। যেটির নিচ তলায় মার্কেট। দ্বিতীয় তলায় শোরুম। আর তিন তলায় বসবাস।’ তিনি বলেন, ‘তিন তলায় মার্কেট থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে আছে দুইটি মাত্র দোকান।’ এসময় তিনি লাইভে বাড়িটির আশপাশে ঘুরে দেখান।

তবে শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে এ বিষয়ে ‘শাহীন আলম ব্লগ’ নামের ওই পেজের শাহীন মোবাইলে ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘বিষয়টি আসলে মজা করে বলেছিলাম। বিয়ে বা ঘটক নিয়ে বলা ওই গল্পের আসলে কোনোভিত্তি নেই।’

‘এরকম বিভ্রান্তিকর তথ্য কেন ছড়ালেন?’ —জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসলেই আমার ভুল হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমি অনুতপ্ত। এ নিয়ে আমি আবার মাফ চেয়ে ভিডিও বানাবো। বিষয়টি আসলে আমি বুঝতে পারিনি।’ 

ঢাকা মেইলের সঙ্গে কথা বলার সময় বিষয়টি নিয়ে বারবার মাফ চাচ্ছিলেন তিনি।  

এদিকে বাড়িটির মালিকের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে তো এখনও শিশু। বিয়ের মতো এতো ঘটনা কীভাবে ঘটবে!’

মণিরামপুর বাজার থেকে ঝিকরগাছা রোডে সরকারি পাইলট উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশে বাড়িটি।

বাড়ির মালিক অমল রায় ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রতিবেশী এক ছেলে বাড়ি তৈরির ইতিহাস নামে একটি ভিডিও দেখায়। ভিডিওতে যে ইতিহাসের কথা বলা হয়েছে। সেটা পুরো মিথ্যা কথা। কারণ আমার একটা মাত্র ছেলে সন্তান। সে প্রথম শ্রেণীতে পড়ে। এই ছোট ছেলেকে কীভাবে বিয়ে দেবো! তাছাড়া এই বাড়ির কাজ এখনও শেষ হয়নি।’ 

‘ভিডিও প্রকাশের পর থেকে প্রচুর লোক আসছে বাড়িতে। না জেনে-শুনে, লোকজন বাজে মন্তব্য করছে। ডিডিওর কারণে আমার রাতে ঘুম হারাম হয়ে গেছে। এমন একটা অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে, বাড়ি ছেড়ে পালানোর মতো।’

তিনি আরও বলেন, ‘দুই বছর হচ্ছে ৭০ পয়েন্ট জমির ওপরে বাড়িটা নির্মাণ করেছি। আমি কাঠের ব্যবসা করি। পাশাপাশি নিচের দোকানে মুদি দোকানের মালামাল বিক্রি করি।’

প্রতিনিধি/এএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর