শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

৬ বছরেও কাজে আসেনি সেতু

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১১:০৮ এএম

শেয়ার করুন:

৬ বছরেও কাজে আসেনি সেতু

৬ বছর আগে ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে সেতুটি। কিন্তু এখনও সংযোগ সড়ক হয়নি। তাই সেতুতে ওঠার ভাগ্য হয়নি এলাকাবাসীর। নির্মাণের পর থেকেই সেতুটি খালের ওপর পড়ে আছে অব্যবহৃত অবস্থায়।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বাদাঘাট-শান্তিপুর সড়কের শান্তিপুর খালের ওপর এই সেতুর অবস্থান। সেতুটি নির্মাণ করা হয় ২০১৬ সালে। কিন্তু তা এলাকাবাসীর কোনো কাজে আসেনি।


বিজ্ঞাপন



স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাহিরপুর উপজেলার এই সড়ক দিয়ে সীমান্তবর্তী এলাকার চানপুর হয়ে বড়ছড়া-চারাগাঁও শুল্কস্টেশন এলাকায় যাতায়াত করেন লোকজন। আবার ওই সড়ক ধরেই সীমান্ত এলাকার মানুষ যাতায়াত করেন উপজেলা সদরে। অন্য দিকে যাতায়াতের সুযোগ থাকলেও এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতে সময় কম লাগে। সহজে উপজেলা সদরে যাতায়াত করা যায়। কিন্তু শান্তিপুর এলাকার খালে কোনো সেতু না থাকায় সমস্যায় পড়েন লোকজন। 

এই সমস্যা দূর করার জন্য ২০১৬ সালে এখানে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) হাওরাঞ্চলের অবকাঠামো ও জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের (হিলিপ) মাধ্যমে ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়।

বড়দল উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি)  সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জানান, এখানে সেতুটি এলাকার মানুষের উপকারের জন্যই নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু মানুষ এখনও তার কোনো উপকার পায়নি। সেতুটি ছোট, তাই পাহাড়ি ঢলের কারণে সংযোগ সড়ক করেও মাটি ধরে রাখা যায়নি। শুরুতে সেতুর দক্ষিণ দিকের সংযোগ সড়কে মাটি দেওয়া হয়েছিল। তখন এই অংশে ইউনিয়ন পরিষদের একটি প্রকল্পে তিন লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে শান্তিপুর বাজার থেকে সেতু পর্যন্ত সড়কের কাজ হয়। কিন্তু একমাস পরই পাহাড়ি ঢলে সড়কের সব মাটি ভেসে যায়। ফলে সেতুতে আর মানুষজন উঠতে পারেননি। 

তিনি বলেন, এখানে পাহাড়ি ঢলের চাপ বেশি। তাই এই ছোট সেতু দিয়ে কাজ হবে না। এখানে বড় সেতু নির্মাণ করতে হবে।


বিজ্ঞাপন


শান্তিপুর গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই পুল (সেতু) কি কারণে বানাইল বুঝলাম না। ছয় বছর ধরি এতিমের মতোন পইড়া আছে, কেউ আইসা খোঁজও নেয় না।’ শান্তিপুর বাজারের ব্যবসায়ী আবিদুর রহমান বলেন, সেতুটি ব্যবহার করতে না পারায় লোকজনকে মাহারাম-গুটিটিলা হয়ে চার কিলোমিটার পথ বাড়তি ঘুরে তাহিরপুর উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে হয়। এতে সময় যেমন বেশি লাগে, সঙ্গে ভোগান্তিও হয়।’

বড়দল উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাসুক মিয়া বলেন, বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয়সভায় একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। সেতু ছোট হওয়ায় পাহাড়ি ঢলের পানি আটকে উপরের অংশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সংযোগ সড়ক নির্মাণ করেও রাখা কঠিন হবে। তাই এখানে বড় একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের তাহিরপুর উপজেলার দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী কাজী ফজলুল হক ঢাকা মেইলকে বলেন, সংযোগ সড়কে শুরুতে কিছু মাটি দেওয়া হয়েছিল। বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে সেই মাটি ধসে গেছে। এখানে এই ছোট সেতু নির্মাণ করাটাই ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। এখন নতুন করে  ৩০০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন ও বরাদ্দ পাওয়া গেলে নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।

প্রতিনিধি/এইচই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর