নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় বিয়ের অনুষ্ঠানে বকশিস দেওয়া-নেওয়াকে কেন্দ্র করে হট্টগোল ও সংঘর্ষের ঘটনার পর বরসহ পাঁচ বরযাত্রীকে কনেপক্ষ পুলিশে দিয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, সোমবার (২২ আগস্ট) ভোর পাঁচটার দিকে কনেপক্ষ বরসহ পাঁচজনকে আটক করে খবর দিলে পুলিশ তাদের ডোমার থানায় নেয়। ওইদিন বিকাল পাঁচটার দিকে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
বিজ্ঞাপন
আটকরা হলেন— জলঢাকা উপজেলার ধর্মপাল তহশিলদার পাড়া এলাকার মৃত মজির উদ্দিনের ছেলে বর রবিউল ইসলাম (২৫), তার চাচা মনছুর আলী (৫৫), মনছুর আলীর দুই ছেলে মঞ্জুরুল ইসলাম (২৩) ও আলীমুল ইসলাম (২০) এবং রবিউলের নিকট আত্মীয় পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জের সোনাহার নুল্লা পাড়া এলাকার মৃত জহুর আলীর ছেলে আল আমীন (২৮)।
জানা যায়, গত রোববার রাত সাড়ে ১০টায় জেলার জলঢাকা উপজেলার ধর্মপাল তহশিলদার পাড়া এলাকার মৃত মজির উদ্দিনের ছেলে রবিউল ইসলাম ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নের জামাতপাড়া এলাকার আজিজুল ইসলামের মেয়ে লিমা আক্তারকে বিয়ে করতে আসে। বিয়ের অনুষ্ঠানে বরের সঙ্গে বসার জায়গার বকশিস দেওয়া-নেওয়াকে কেন্দ্র করে হট্টগোল শুরু হয়। এক পর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। পরে কনের বাবা থানায় কল দিলে পুলিশ এসে বরসহ ৫ জনকে আটক করে।
এ বিষয়ে কনের বাবা আজিজুল ইসলাম বলেন, বরপক্ষের লোকজন বিয়েতে এসে গণ্ডগোল ও মারামারি করেছে। আমাদের বাড়িতে এসে যদি তারা এ রকম আচরণ করে, তাহলে তাদের বাড়িতে আমার মেয়ে গেলে তার সাথে আরও খারাপ ব্যবহার করবে এবং তাকে নির্যাতন করবে বলে আমি মনে করি।
তিনি আরও বলেন, বরযাত্রী আসার আগে বরপক্ষ আমার কাছ থেকে যৌতুক হিসেবে এক লাখ টাকা নিয়েছে। বিয়ের আয়োজনে আরও এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আমি গরীব মানুষ। আমার জমানো সব টাকা শেষ। এখন আমার মেয়েকে নিয়ে কী করব?
বিজ্ঞাপন
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে হরিণচড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাসেল রানা বলেন, রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বরকে মালা পরিয়ে বরণ করে নেয় কনেপক্ষ। এসময় স্টেজে বরের সঙ্গে বসার যায়গায় বসতে বকশিস দাবি করে কনেপক্ষের লোক। বরপক্ষ ২০ টাকা বকশিস দেয়। ২০ টাকা বকশিসকে কেন্দ্র করে গন্ডগোল লাগলে তাদের আলোচনার মাধ্যমেও বোঝানো যায়নি। পরে পুলিশ এসে ৫ জনকে নিয়ে যায়।
জলঢাকা ধর্মপাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তাহের বলেন, বরপক্ষ সমঝোতা করে বিয়ে সম্পন্ন করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু কনের বাবা রাজি হননি।
ডোমার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ উন নবী বলেন, বিয়েতে বর ও কনেপক্ষের মধ্যে গণ্ডগোল হলে পাঁচজনকে আটক করা হয়। বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রতিনিধি/এইচই