শেরপুরে একই পরিবারের সাতজন সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। সাত সদস্যের সহায় সম্বলহীন পরিবারটি আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের একটি কক্ষে।
মুসলমানদের রীতি নীতির প্রতি বিশ্বাস রেখে সপরিবারে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করা আশ্রয়হীন রবিদাস পরিবারের প্রতি সরকারি সহায়তা চান স্থানীয়রা।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয়রা জানান, জেলার সীমান্তবর্তী শ্রীবরদী উপজেলার ভেলুয়া বাজার এলাকার শ্রী রবিদাস মণ্ডল। দীর্ঘদিন থেকেই ইসলাম ধর্মের আচার অনুষ্ঠান নিয়মনীতির প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েন। গোপনে নামাজও পড়েছেন কয়েকবার।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সুলতান সরকার পরিবারের বরাত দিয়ে ঢাকা মেইলকে বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম, এমন আত্ম-উপলব্ধি থেকে স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার এক পর্যায়ে গত শুক্রবার (১৯ আগস্ট) স্থানীয় মাদরাসায় গিয়ে আলেম উলামাদের সামনে কালেমা পড়ে স্ত্রী সন্তানসহ পরিবারের সাত সদস্য নিয়ে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন। ছেড়ে আসেন নিজের ভিটেমাটি, ঘরবাড়ি এমনকি পূর্বে উপার্জিত টাকা পয়সাও। পরে স্থানীয়দের পরামর্শে আশ্রয় নেন ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের একটি কক্ষে।
সুলতান সরকার আরও বলেন, শ্রী রবিদাস মণ্ডল থেকে আব্দুল্লাহ, সুকিয়া রবিদাস থেকে আমেনা, সোনিয়া রবিদাস থেকে ফাতেমা খাতুন, শুভ রবিদাস থেকে উমর ফারুক, আকাশ রবিদাস থেকে উসমান গণি, বাদন রবিদাস থেকে হযরত আলী ও লাবন রবিদাস থেকে হুসাইন নাম ধারণ করেছে সনাতন ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত হওয়া পরিবারটি। একসঙ্গে পরিবারের সাতজন ইসলাম গ্রহণ করায় তাদের দেখতে ভিড় করছেন উৎসুক মানুষ।
বিজ্ঞাপন

ভেলুয়া বাজার জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা আব্দুল আজিজ বলেন, মহান প্রতিপালক আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মনোনীত ধর্ম ইসলাম এতটাই সৌন্দর্যমণ্ডিত ও পরিপূর্ণ যে, তা অবলোকন করার পর দৃষ্টি ফিরিয়ে নেওয়া যায় না। এ জন্য যারাই কুরআন ও সুন্নাহ অধ্যয়ন করে এবং মুসলমানের সংস্পর্শে আসে ইসলামের ব্যাপারে তাদের ভুল ধারণাগুলো ভেঙে যায়। তাদের মধ্যে সৌভাগ্যবানরা ইমানের আলোয় আলোকিতও হয়। আমাদের গ্রামের এ পরিবারকে আল্লাহর রহমতে সহায়তার দায়িত্বও আমাদের।
ভেলুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল করিম ঢাকা মেইলকে বলেন, আমাদের ভেলুয়া বাজারের পাশের থাকা পরিবারের ৭ জন ইসলাম গ্রহণ করেছে। স্ব ইচ্ছায় তারা তাদের পূর্বের সকল সম্পদ রেখে এসেছে। এখন তারা শূন্য অবস্থায় আছে। আমি আপাতত তাদেরকে ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে অবস্থান করার ব্যবস্থা করেছি। এদিকে ওই পরিবারকে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। আরও অনেকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।

এদিকে খোঁজ খবর নিয়ে ওই পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাসজমিতে আবাসন ও নগদ সহায়তাসহ পুনর্বাসনের আশ্বাস দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
শ্রীবরদী উপজেলার ইউএনও নিলুফা আক্তার জানান, যদি ওই পরিবার ভিটেহীন হয় তাহলে খোঁজখবর নিয়ে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
এজে

