যশোরের মনিরামপপুরে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক এক সদস্যের (মেম্বার) বিরুদ্ধে এক চা-বিক্রেতার স্ত্রীকে জোর করে তুলে নিয়ে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের নাম জাকির হোসেন (৩৮)।
শনিবার (১৩ আগস্ট) এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী মনিরামপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
অভিযুক্ত জাকির হোসেন উপজেলার ভোজগাতী ইউনিয়নের মোল্লাডাঙা গ্রামের চান্দার আলীর ছেলে। স্থানীয় বেগারিতলা বাজারে তিনি কাঠের ব্যবসা করেন। তিনি ভোজগাতী ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ বলেন, চার মাস আগে আমাদের বিয়ে হয়েছে। বেগারিতলা বাজারে আমার স্বামীর চা-দোকান। আমরা দুজনে দোকানদারি করি। আমাদের দোকানের উল্টা দিকে জাকিরের কাঠগোলা। দেড় মাস আগ থেকে জাকির মেম্বার নিয়মিত চা খাওয়ার নাম করে দোকানে এসে আমাকে কুপ্রস্তাব দেয়। তার কথায় রাজি না হলে দোকান পুড়িয়ে দেওয়াসহ আমার স্বামীকে হত্যার হুমকি দেয় মেম্বার।
সর্বশেষ গত রোববার (৭ আগস্ট) বিকেলে বাড়ি থেকে দোকানে আসার সময় জাকির আমার পথ আটকে নাকমুখ চেপে ধরে জোর করে একটি মাইক্রোবাসে আমাকে তুলে নেয়। এরপর আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।
গৃহবধূ আরও বলেন, রাত ৮টার দিকে জ্ঞান ফিরলে জাকিরকে পাশে দেখি। আর অজানা স্থান বুঝতে পেরে আমি চিৎকার দিই। এরপর রাতভর আমাকে নির্যাতন করে মেম্বার। ভোর ৪টার দিকে বাইরে থেকে লোকজনের আওয়াজ পেয়ে মেম্বার পালিয়ে যায়। পরে লোকজন এলে আমি জানতে পারি যশোর শহরের লালদীঘির পাড়ে ১০ তলা একটি ভবনের ছয়তলায় আমি। পরে আমার বোন ও মায়ের সাহায্যে সোমবার (৮ আগস্ট) আমি বেগারিতলায় পৌঁছাই।
বিজ্ঞাপন
ভুক্তভোগী গৃহবধূ অভিযোগ করে বলেন, ফেরার পর এই ঘটনা খুলে বললে স্থানীয়রা আমার কথা বিশ্বাস করেনি। পরে ঘটনা অন্যদিকে নেওয়ার জন্য জাকির মেম্বার ও তার লোকজন গত মঙ্গলবার দুপুরে আমাকে যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। মেম্বার ও তার লোকজন ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলে রিপোর্ট নিজেদের পক্ষে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী বলেন, কয়দিন আগের ঘটনা হলেও মেম্বারের ভয়ে আমি বাড়ি থেকে বের হতে পারিনি। জাকিরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলায় গতকাল শুক্রবার সকালে তার লোকজন বেগারিতলা বাঁশহাটায় আমাকে মারধর করে। অবশেষে আজ (শনিবার) মনিরামপুর থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ লিখিত অভিযোগ নিয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জাকির হোসেন বলেন, কয়দিন আগে আমার এক প্রতিবন্ধী শ্রমিকের ওপর চড়াও হয় চা-দোকানদার। আমি তখন তাকে বকাঝকা করলে রাতে সে আমাকে মোবাইলে ধর্ষণ মামলা সাজানোর হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর-ই-আলম সিদ্দীকি বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। এরপর তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিনিধি/এইচই

