বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

হাসপাতাল থেকে ছাড় পেল ময়মনসিংহের সেই শিশু, থাকবে ছোটমণি নিবাসে

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৯ জুলাই ২০২২, ০২:৫৮ পিএম

শেয়ার করুন:

হাসপাতাল থেকে ছাড় পেল ময়মনসিংহের সেই শিশু, থাকবে ছোটমণি নিবাসে
ছবি: ঢাকা মেইল

ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় মায়ের পেট ফেটে সড়কে ভূমিষ্ট হওয়া আলোচিত সেই নবজাতককে নেওয়া হচ্ছে আজিমপুর ছোটমণি নিবাসে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে পরিবারের সম্মতিতে সেখানে নেওয়া হচ্ছে তাকে।

শুক্রবার (২৯ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ওয়ায়েজ উদ্দিন ফরাজী ওই শিশুকে জেলা সমাজ সেবা অধিদফতর ও তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। পরে গাড়িযোগে জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের তত্বাবধানে ঢাকার আজিমপুর পাঠানো হয়।

আরও পড়ুন: ট্রাকচাপায় অন্তঃসত্ত্বা মা নিহত, রাস্তায় ভূমিষ্ট হলো শিশু


বিজ্ঞাপন


শিশুটির যাত্রা সঙ্গী হয়েছেন, ত্রিশাল সমাজ সেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান, জেলা সরকারী শিশু পরিবার (বালিকা) দায়িত্বরত তাহমিনা আক্তার স্বপ্না, দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু এবং দুইজন পুলিশ সদস্য।

শিশুটির প্রতি অন্যরকম ভালোবাসার সৃষ্টি হয়েছে। আজকে চলে যাওয়ায় তাই খারাপ লাগছে। তবে, শিশুটি ভাল থাকুক সবসময় এটাই প্রত্যাশা করেন ডা. নজরুল ইসলাম।

শিশুটি হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ওয়ায়েজ উদ্দিন ফরাজি, হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক (শিশু ও নবজাতক) ডা. নজরুল ইসলাম, জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. ওয়ালীউল্লাহ ও নবজাতকের দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলুসহ হাসপাতালের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।

আরও পড়ুন: ট্রাকচাপায় নিহত মায়ের পেট ফেটে রাস্তায়ই ভূমিষ্ট হয় শিশুটি
 
জানা যায়, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর অসুস্থতা কাটিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠে শিশুটি। তাই আজ সকালে নবজাতককে ছাড়পত্র দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। তাকে চিকিৎসা দিতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছেন চিকিৎসক ও সেবিকারা। সেবা দিয়ে সুস্থ করে তুলতে পেরে গর্ববোধ করছেন হাসপাতালটির সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (শিশু ও নবজাতক) ডা. নজরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, মেডিকেল বোর্ড গঠন করে নবজাতকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। রক্তশূন্যতা, জন্ডিস ও শ্বাসকষ্ট পুরোপুরি ভাল হলেও হাতে হাড় ভাঙ্গা ভাল হতে আরও দুই সপ্তাহ সময় লাগবে। টানা ১২ দিন সার্বক্ষণিক পরিচর্যা দিয়ে শিশুটির প্রতি অন্যরকম ভালোবাসার সৃষ্টি হয়েছে। আজকে চলে যাওয়ায় তাই খারাপ লাগছে। তবে, শিশুটি ভাল থাকুক সবসময় এটাই প্রত্যাশা করেন ডা. নজরুল ইসলাম।
myemnsinghনবজাতকটির দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু ঢাকা মেইলকে বলেন, পরিবারের সবার সঙ্গে কথা বলে আজিমপুর ছোট মনি শিশু নিবাসে নেওয়ার বিষয়ে রাজি হয়েছি। নাতনিকে যখন দেখার ইচ্ছা হবে, আমি যেকোনো সময় তাকে দেখতে পারব। আমাদের থাকার জন্য দুই রুমের একটি হাফ বিল্ডিং এবং জান্নাত-এবাদতের (শিশুটির অন্য দুই ভাইবোন) লেখাপড়াসহ সার্বিক সহায়তা করার কথা জানিয়েছে প্রশাসন।


বিজ্ঞাপন


জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. ওয়ালীউল্লাহ বলেন, ২৭ জুলাই শিশু কল্যাণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সুবিধা বঞ্চিত শিশু হিসাবে নবজাতককে ঢাকা আজিমপুর ছোটমণি শিশু নিবাসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। এ বিষয়ে তার পরিবার সমর্থন জানায়। সেখানে সম্পূর্ণ সরকারী তত্বাবধানে নবজাতকে দেখাশোনা করা হবে।

আরও পড়ুন: সেই শিশুটিকে বুকের দুধ পান করাচ্ছেন রাবেয়া

‘শিশুটি কতদিন সেখানে থাকবে?’— ঢাকা মেইলের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, শিশুটির বৈধ অভিভাবক তার দাদার সক্ষমতা অর্জন না হওয়া পর্যন্ত এবং শিশুটি ভালোভাবে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকবে। তবে, সেখানে শিশুদের ৬ বছর বয়স পর্যন্ত রাখা যায়। এরপর বৈধ অভিভাবক না থাকলে সরকারি শিশু পরিবারে দেওয়া হয়।

গত ১৬ জুন বিকেলে ঢাকা-ময়মনিংহ মহাসড়কে ত্রিশাল কোর্ট ভবন এলাকায় ট্রাকচাপায় জাহাঙ্গীর আলম, তার অস্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রত্না আক্তার ও মেয়ে সানজিদা নিহত হন। এসময় ট্রাকচাপায় নিহত মায়ের পেট ফেটে সড়কেই শিশুটি ভূমিষ্ট হয়।

আরও পড়ুন: সড়কে প্রাণ গেছে ২ ছেলেসহ ৪ জনের, শোকে স্তব্ধ সুফিয়া

পরে ওই নবজাতকে সিবিএমসিবি, লাবিব প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৮ জুলাই রাতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে রক্তশূন্যতা, জন্ডিস, ঘাড়ে এবং ডান হাতে ফ্র্যাকচার ধরা পড়ে। পরে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করে হাসপাতালের এনআইসিইউ বিভাগে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়।

প্রতিনিধি/এএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর