শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

অনার্স পড়ুয়া মেয়েটির ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা

শামসুল আলম
প্রকাশিত: ২৫ জুলাই ২০২২, ০২:৩১ পিএম

শেয়ার করুন:

অনার্স পড়ুয়া মেয়েটির ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা
ছবি: ঢাকা মেইল

অর্নাস পড়ুয়া শিক্ষার্থী তানিয়া খাতুনকে দেখলে যে কারো কাছে মনে হবে যে ‘৭-৮ বছরের শিশু।’ কিন্তু সত্যটা জানার পর কিছুটা অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। পাবনার আটঘরিয়া সরকারি কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তানিয়া আটঘরিয়া উপজেলার চাঁদভা ইউনিয়নের বেরুয়ান গ্রামের দরিদ্র কৃষক তাইজুল ইসলাম ও নাসিমা খাতুনের মেয়ে। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি বড়।

জানা গেছে, তানিয়ার জন্ম ২০০৩ সালের ১৩ এপ্রিল। বয়স বাড়লেও সেই অনুযায়ী শারীরিক গঠন বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়নি তার।


বিজ্ঞাপন


তানিয়ার বাবা তাইজুল ইসলাম বলেন, শিশু থাকা অবস্থায় বিষয়টি বোঝা যায়নি। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বোঝা যায়। তখন প্রথমে পাবনার কিছু ডাক্তারের কাছে, পরে শরণাপন্ন হই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের। কিন্তু তাতে ফল মেলেনি। ডাক্তাররা জানান যে, তার শরীরের রক্তের সমস্যা, তাই শারীরিক গঠন উন্নতি ঘটানো সম্ভব হয়নি।

এদিকে দেখতে এমন হওয়ায় সমাজের কাছে অবহেলার শিকার তানিয়া। শিশুর মতো দেখতে হওয়ায় সমবয়সীরাও তার সঙ্গে মিশতে চান না। বিয়ে, সাংসারিক জীবন, পড়াশোনাসহ নানা বিষয়ে বিদ্রুপ শুনতে হয় তানিয়াকে। কিন্তু অদম্য তানিয়া থেমে থাকেননি। নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে তানিয়া তার পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন। কৃতিত্বের সঙ্গে ২০১৯ সালে বেরুয়ান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০২১ সালে বেরুয়ান মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর তানিয়া এখন অনার্স শিক্ষার্থী।
pabanaআজীবন সংগ্রামী এই তরুণীর মুখে হতাশার ছাপ। তানিয়া বলেন, ‘আমাকে নিয়ে কত মানুষ কত কথা বলে। যারা আমার বয়সী তারা আমার সঙ্গে মিশতে চায় না। অনেকেই বলে, ‘পড়ালেখা করেও লাভ নেই। ছোট মানুষ কেউ চাকরি দেবে না।’

তানিয়ার পড়ালেখা নিয়ে চিন্তায় তার বাবা-মাও। মা নাসিমা খাতুন বলেন, ‘আমরা পড়ালেখার খরচ তেমন দিতে পারি না। কিন্তু আমার মেয়ে পড়ালেখা করতে চায়। ও বলে ও আইনজীবী হবে, অনেক বড় হবে। কিন্তু আমার স্বামী সংসার চালাতেই হিমশিম খায়, তার পড়ালেখার জন্য এত টাকা-পয়সা কোথায় পাবে? তানিয়ার কলেজে ভর্তি টাকাও আমাদের চেয়ারম্যান দিয়েছিল। এখন তার পড়াশোনার খরচ নিয়ে আমরা চিন্তায় আছি।’

তবে আশার বাণী শোনালেন আটঘরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান তানভীর ইসলাম। তিনি বলেন, ‘তানিয়া একজন সংগ্রামী তরুণী। তার মেধার গুনেই দরিদ্র পরিবারের মেয়ে হয়েও আজকে কিন্তু অনার্সে পড়ছে। তার এই পড়ালেখা যাতে অব্যাহত থাকে সে বিষয়টি আমি খেয়াল রাখব এবং আমার পক্ষ থেকে যথাসাধ্য সাহায্য করবো।’


বিজ্ঞাপন


প্রতিনিধি/এএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর