বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

ঢাকা মেইলে সংবাদ প্রকাশের পর বুয়েটে ভর্তির সহায়তা পেলেন মেহেদী

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২০ জুলাই ২০২২, ১০:২২ পিএম

শেয়ার করুন:

ঢাকা মেইলে সংবাদ প্রকাশের পর বুয়েটে ভর্তির সহায়তা পেলেন মেহেদী
ছবি: ঢাকা মেইল

‘বুয়েটে চান্স পেলেও ভর্তি ফি নিয়ে দুশ্চিন্তায় মেহেদীর পরিবার’—শিরোনামে নতুন প্রজন্মের অনলাইন ঢাকা মেইল ডটকম-এ (dhakamail.com) সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর সহায়তা পেয়েছেন ওই শিক্ষার্থী! বুয়েটে ভর্তির জন্য তাকে আর্থিক সহায়তা করেছেন ঠাকুরগাঁও জেলা পরিষদের প্রশাসক মুহাম্মদ সাদেক কুরাইশী।

বুধবার (২০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে ঠাকুরগাঁও জেলা পরিষদের প্রশাসক কার্যালয়ে আর্থিক সহায়তার চেক প্রদান করা হয়।


বিজ্ঞাপন


গত ৬ জুলাই ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কুজিশহর ঘুরনগাছ গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েটের (এমএমই) বস্তু ও ধাতব কৌশল বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু দরিদ্রতার জন্য বুয়েটে ভর্তির টাকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন মেহেদী ও তার পরিবার। এমন সংবাদ ঢাকা মেইলে প্রকাশ হলে দৃষ্টিগোচর হয় জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রামকৃষ্ণ বর্মনের।

পরে তিনি ঢাকা মেইলের ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করে মেহেদীর সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। পরে তার মোবাইল নাম্বার নিয়ে যোগাযোগ করেন এবং বুয়েটে ভর্তির জন্য জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা করার আশ্বাস দেন।

বুধবার মেহেদীকে ডেকে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সেই ২০ হাজার টাকার চেকটি তার হাতে তুলে দেন জেলা পরিষদের প্রশাসক মুহাম্মদ সাদেক কুরাইশী।

এছাড়াও ঠাকুরগাঁও জেলার বুয়েটের বিভিন্ন বিভাগে ভর্তির জন্য সুযোগ পাওয়া আরও তিন শিক্ষার্থীকে ভর্তির জন্য ২০ হাজার করে মোট চার জনকে ৮০ হাজার টাকার চেক প্রদান করেন।


বিজ্ঞাপন


এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম স্বপন চৌধুরী, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোশারুল ইসলাম, প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মনসুর আলী, সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান মিঠু, ঢাকা মেইলের জেলা প্রতিনিধি মো. জাহিদ হাসান মিলুসহ জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।

জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহাম্মদ সাদেক কুরাইশী বলেন, 'আমাদের জেলার দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীরা যারা বুয়েট মেডিকেলসহ বিভিন্ন ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পায় তাদেরকে আমরা জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সহায়তা প্রদানে কার্পণ্য করবো না। ইতোপূর্বেই এমন অনেক শিক্ষার্থীকে পরিষদের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। আজকে যাদেরকে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে তাদের পরিবারের আর্থিক সংকটাপন্ন অবস্থার বিষয়টি বিভিন্ন অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তাই আজকে তাদের এখানে ডাকা হয়েছে। তাদেরকে শুধু ভর্তির টাকা-ই নয় যদি লেখাপড়া চলাকালীন সময়ে তাদের পড়াশোনার খরচের সমস্যা হয় সেক্ষেত্রেও শিক্ষার্থীদের আরও সহযোগিতা করা হবে।

'আমাদের লক্ষ্য ঠাকুরগাঁও জেলাকে মেধাভিত্তিক জেলা হিসেবে গড়ে তোলার। আমরা যদি মেধাবীদের সাহায্য সহযোগিতা করে তাদের লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে এই জেলাসহ দেশ এগিয়ে যাবে ও তারা সাধারণ মানুষের উপকার করতে পারবে।'

তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমাদের লেখাপড়ার তুলনায় এ সহযোগিতা সামান্য হলেও পড়াশোনার প্রতি অনুপ্রেরণার জন্য তোমাদের এই সহযোগিতা করা হচ্ছে। যাতে তোমরা আরও বেশি ভালো করে পড়াশোনা কর ও পড়াশোনা শেষ করে ভালো কিছু করতে পারো।

২০ হাজার টাকার চেক হাতে পেয়ে মেহেদী হাসান ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘ঢাকা মেইলে আমার সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল বলেই আজকে জেলা পরিষদের ২০ হাজার টাকার চেক হাতে পেলাম। চেক পেয়ে আমার খুব ভালো লাগছে। এখন বুয়েটে ভর্তি হতে আমার কোনো চিন্তা থাকবে না। তাই আমি ঢাকা মেইলের সকলকে ধন্যবাদ জানাই ও তাদের সকলের দীর্ঘায়ু কামনা করছি।’


তিনি বলেন, ঢাকা মেইলের ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধির কাছ থেকে আমার মোবাইল নাম্বার নিয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা খন্দকার আলাউদ্দিন আল আজাদ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে আমাকে সহযোগিতা করার জন্য আবেদন করতে বলেন। তাই সেখানেও আবেদন করেছি। আশা করি সেখান থেকেও সহযোগিতা পাবো। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমি আরও ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা পেয়েছি।

পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে যদি ভালো ইঞ্জিনিয়ার হতে পারি বা ভালো কিছু করতে পারি তাহলে আমার মতো যারা দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী আছে তাদেরকে আমিও পড়াশোনার জন্য সহযোগিতা করব ইনশাআল্লাহ।

জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রামকৃষ্ণ বর্মন বলেন, ঢাকা মেইলের মাধ্যমে জানতে পেরেই আজকে মেহেদীকে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়েছে। তার মতো এমন মেধাবী ছাত্রকে সহযোগিতা করতে পেরে নিজেকে খুব ভালো লাগছে। এমন দরিদ্র মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য জেলা পরিষদের সহযোগিতা দুয়ার সব সময় খোলা থাকবে।

প্রতিনিধি/এজে/এএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর