আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী–৬ (হাতিয়া) সংসদীয় আসনে ভিন্ন দলের হয়ে নির্বাচন করবেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ ও তার বাবা আমিরুল ইসলাম মোহাম্মদ আবদুল মালেক।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন হান্নান মাসউদ ও তার বাবা।
বিজ্ঞাপন
আমিরুল ইসলাম মোহাম্মদ আবদুল মালেক বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) হয়ে একতারা প্রতীকে এবং আব্দুল হান্নান মাসউদ শাপলা কলি প্রতীকে নির্বাচন করবেন।
এ নিয়ে এলাকায় জন্ম দিয়েছে আলোচনা, সমালোচনা ও কৌতূহলের। কেউ কেউ বলছেন, এটি নবীন ও প্রবীণের প্রতীকী লড়াই, আবার কেউ দেখছেন রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনের নতুন এক মাত্রা অথবা ভিন্ন কৌশল।
জানা গেছে, নোয়াখালী–৬ (হাতিয়া) আসনে এবারের নির্বাচনে ১৪ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এর মধ্যে বিএনপি থেকে মো. মাহবুবুর রহমান, জামায়াতে ইসলামী থেকে অ্যাডভোকেট শাহ মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, এনসিপি থেকে আবদুল হান্নান মাসউদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন মোহাম্মদ ফজলুল আজিম, শামীমা আজিম, তানভীর উদ্দিন রাজিব, মুহাম্মদ নুরুল আমীন।
এছাড়া জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে এটিএম নবী উল্যাহ, নাছিম উদ্দিন মো. বায়েজীদ। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) মোহাম্মদ আবদুল মোতালেব, গণঅধিকার পরিষদের মোহাম্মদ আজহার উদ্দিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম শরীফ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মোহাম্মদ আবুল হোসেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) আমিরুল ইসলাম মোহাম্মদ আবদুল মালেক।
বিজ্ঞাপন
হান্নান মাসউদ ও তার বাবার নির্বাচন নিয়ে হাতিয়ার বাসিন্দা আবদুস সালাম বলেন, একই পরিবার থেকে দুই বা ততোধিক প্রার্থীর নির্বাচনে অংশগ্রহণ হাতিয়ার রাজনীতিতে নতুন কোনো বিষয় নয়। এটি মূলত একটি সুপরিকল্পিত কৌশল, যার মাধ্যমে ভোটকেন্দ্রভিত্তিক প্রভাব বজায় রাখা যায়। একাধিক প্রার্থী থাকলে একদিকে যেমন বেশি এজেন্ট নিয়োগ করা সম্ভব হয়, তেমনি মাঠে লোকবল ও শক্তির উপস্থিতিও বাড়ে, যা নির্বাচনের দিন বড় ভূমিকা রাখে।
এ বিষয়ে আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাংলাদেশের আন্দোলনে আমি সক্রিয়ভাবে লড়াই করেছি। তবে ভোটের অভিজ্ঞতা আমার জন্য একেবারেই নতুন। ভোটার হওয়ার পর এখন পর্যন্ত কোনো জাতীয় বা স্থানীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারিনি। নোয়াখালী–৬ আসনের বাকি ১৩ জনের মধ্যে আমার বাবা একজন প্রবীণ ও অভিজ্ঞ মানুষ। তাই তার মনোনয়নপত্র দাখিল করাকে আমি উৎসাহিত করেছি। ভোটের মাঠে তার কাছ থেকেও নতুন কিছু শেখার সুযোগ হবে। আমি শাপলা কলি প্রতীকে লড়ব এবং বাবার এই নির্বাচনি লড়াইকেও আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। তবে এ বিষয়ে আব্দুল মালেকের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, নোয়াখালীর ছয়টি আসনে ৮৮ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও জমা দিয়েছেন ৬২ জন প্রার্থী। আগামী ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বাছাই কার্যক্রম চলবে।
তিনি জানান, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২০ জানুয়ারি। ২১ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। ২২ জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়ে চলবে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
প্রতিনিধি/একেবি

